ভারতের কাছে হেরেও নিজেদের জয়ী ভাবছে মালয়েশিয়া

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: ভারতের বিপক্ষে খেলতে পেরেই যেন তারা মহাখুশি। নারীদের এশিয়া কাপে প্রতিপক্ষ বোলারদের তুলোধুনো করে ১৮৪ রানের পাহাড় গড়েছে ভারতের নারী ক্রিকেট দল।
জবাবে মালয়েশিয়া ৫.২ ওভারে ২ উইকেটে ১৬ রান তুলতেই বৃষ্টির হানা। বৃষ্টি আইনে হারই ছিল সম্ভাব্য ফল! অথচ মালয়েশিয়ার অপরাজিত দুই ব্যাটার ড্রেসিংরুমে ফিরতেই তাদের ডাগআউটে দেখা গেলো খুশির ঝিলিক! ভারত ৩০ রানে জিতেছে এটা যেমন সত্যি, ঠিক তেমনি এত বড় দলের বিপক্ষে লড়াই করতে পেরে মালয়েশিয়াও জয়ী ভাবছে নিজেদের।
প্রতিকূল আবহাওয়াতেও সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দুই নম্বর গ্রাউন্ডে চার-ছক্কার বৃষ্টি নামায় ভারত। নবীন দল মালয়েশিয়া প্রাণপণ চেষ্টা করেছে ভারতীয় ব্যাটারদের প্রতিহত করতে। মালয়েশিয়ান অফস্পিনার নুর দানিয়া স্যুহাদা হ্যাটট্রিকের সুযোগও তৈরি করেছিলেন। তাকে হ্যাটট্রিক বঞ্চিত করেছেন রাধা যাদব।
শক্তিশালী দলের ব্যাটারদের নাকানি-চুবানি খাওয়াতে পেরে খুশিতে যেন আত্মহারা ছিলেন নুর দানিয়া। এই খুশি পরে ছড়ায় পুরো দলের মধ্যেই। একটি দুর্দান্ত ক্যাচ ধরার পর বেশ কিছু ক্যাচ মিস হয়েছে। কিন্তু বাউন্ডারি লাইন থেকে দৌড়ে এসে সেই ক্যাচগুলো ধরা মোটেও সহজ ছিল না। তারপরও মালয়েশিয়ার নারী ক্রিকেটারদের প্রচেষ্টা ম্যাচ জেতাতে না পারলেও উপস্থিত ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয় জিতে নিতে পেরেছে।
ভারতের ইনিংস শেষ হওয়ার পরই আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যায়। মালয়েশিয়া ব্যাটিংয়ে নামলে শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এই বৃষ্টি মাথায় নিয়েই ১৮৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৬ রান তুলতেই ২ উইকেট হারায় তারা। এরপর বৃষ্টির বেগ বৃদ্ধি পেলে খেলা বন্ধ করতে বাধ্য হন ম্যাচ রেফারি। ঘণ্টাখানেক অপেক্ষার পর ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ৩০ রানের জয় পায় ভারতীয় দল।
স্বাভাবিকভাবেই ভারতের জয় নিশ্চিত হওয়ার পর মালয়েশিয়া শিবিরে মন খারাপের অভিব্যক্তি ফুটে উঠার কথা! কিন্তু ড্রেসিংরুমে দেখা গেলো খুশির আবহ। উল্টো নিজেদের ড্রেসিংরুম থেকে দৌড়ে ভারতের ড্রেসিংরুমে চলে যান মালয়েশিয়া টিমের সবাই। বোঝাই যাচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মহাশক্তিধর ভারতের মুখোমুখি হতে পেরে তারা নিজেদের ধন্য ধন্য করছেন। সেখানে হারমনপ্রীতের কৌরের জার্সি চেয়ে নেন একজন, নেন অটোগ্রাফও। সবকিছু মিলিয়ে হারের গ্লানি ভুলে ভারতের সঙ্গে ম্যাচ খেলতে পারার মুহূর্তটাই উপভোগ করে নেয় মালয়েশিয়া।
শুধু কি তাই? ভারতের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের সঙ্গে আলাদা করে তারা কথাও বলেছেন। ম্যাচ শেষ সংবাদ সম্মেলনে আসেন মালয়েশিয়ার ক্রিকেটার মাস এলিসা। হারের হতাশার চেয়ে তার চোখে-মুখে ফুটে উঠলো ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে পারার তৃপ্তি, ‘আমাদেরতো বড় দলগুলোর সঙ্গে খেলার সুযোগ-ই হয় না। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে পারা তাই দারুণ ব্যাপার। আমরাও খুব খুশি ছিলাম। ম্যাচ শেষে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের সঙ্গে আলাপ করেছি। আমাদের ভবিষ্যতের জন্য এটা খুবই ভালো হবে।’
অথচ কে বলবে এই ভারতীয় ব্যাটাররাই চার-ছক্কার বৃষ্টিতে ভাসিয়ে দিয়েছেন তাদের। দুই ওপেনার সবিনয়েনি মেঘনা ও শেফালি ভার্মার ১১৬ রানের জুটির ওপর দাঁড়িয়ে ভারত পায় বড় সংগ্রহ। মেঘনা ৫৩ বলে ১১ চার ও ১ ছক্কায় দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৯ রান করেছেন। আরও ৪২ রান যোগ হতেই আরেক ওপেনার শেফালি ৩৯ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৬ রান করে আউট হন। পরের বলে সাজঘরে ফেরেন কিরণ প্রভু (০)। এরপর রাধা যাদব ৮ রানে ফিরলে বাকি পথটুকু অবিচ্ছিন্ন থাকেন রিচা ঘোষ ও হেমালতা। রিচা ১৯ বলে ৩৩ এবং হেমালতা ৪ বলে ১০ রানের ইনিংস খেলেছেন।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.