ভারতীয় অতিথিবৃন্দ, অষ্টধাতুর দুর্গাপ্রতিমা ক্রেস্ট প্রদান


প্রেস বিজ্ঞপ্তি: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার উৎপত্তিস্থল রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুরে দুর্গামন্দির। রাজ কংস নারায়ণ রায় বাহাদুর ১ম শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রচলন করেছিলেন ১৪৮০ খ্রিস্টাব্দে। সোমবার দুপুরে ঐতিহাসিক সেই দুর্গামন্দির পরিদর্শন করেছেন রাজশাহীতে সফররত ভারতীয় অতিথিবৃন্দ।
এ উপলক্ষে তাহেরপুরে দুর্গামন্দির প্রাঙ্গনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ভারতীয় অতিথিদের হাতে অষ্টধাতুর দুর্গাপ্রতিমা ক্রেস্ট তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ-ভারত ৫ম সাংস্কৃতিক মিলনমেলার প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের (ইন্ডিয়া চ্যাপ্টার) সহ-সভাপতি সত্যম রায় চৌধুরী ও রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক এসএম সামছুল আরেফীন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা, তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানের পূর্বে দুর্গামন্দিরে পূজা অর্চণা করেন ভারতীয় অতিথিরা।
এরআগে সোমবার সকালে রাজশাহী বিশবিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেন ভারতীয় অতিথিবৃন্দ। এ সময় বঙ্গবন্ধু হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি এবং শহীদ শামসুজ্জামানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বিশ^বিদ্যালয় শহীদ মিনার, শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা পরিদর্শনসহ বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন। এরপর শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ সিনেট ভবনে সংক্ষিপ্ত সভার আয়োজন করা হয়।
এ সময় রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার, উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী মো. জাকারিয়া, প্রফেসর সুলতান-উল ইসলাম সহ বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের উর্ধ্বতন ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর ৫০ বছর পূর্তিতে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য আয়োজনে রাজশাহীতে ২৫ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি সাংস্কৃতিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হলো।
সাংস্কৃতিক মিলনমেলায় অংশ নিতে ভারতের মন্ত্রী সহ ৩৬ সদস্যের একটি দল গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীতে আসেন। মিলনমেলায় অংশ নিতে এসিেছলেন ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল ও তাঁর সহধর্মিণী মঞ্জু পাল, খ্যাতিমান কবি ও শিল্পী মৌসুমি রায় চৌধুরী, খ্যাতিমান অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা চক্রবর্তী সেনগুপ্ত, সুভপ্রসন্ন ভাট্টাচার্য, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের (ইন্ডিয়া চ্যাপ্টার) সহ-সভাপতি সত্যম রায় চৌধুরী, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের (ইন্ডিয়া চ্যাপ্টার) কার্যকরী সভাপতি রাধা তমাল গোস্বামী, দৈনিক আজকাল পত্রিকার সাংবাদিক তরুণ চক্রবর্তী, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের (ইন্ডিয়া চ্যাপ্টার) সমন্বয়ক তপশ্রী গুপ্তা, দ্বীপ প্রকাশনীর প্রকাশক সংকর মন্ডল, টেকনো ইন্ডিয়া গ্রæপের নির্বাহী পরিচালক তপন কুমার ঘোষ, টেকনো ইন্ডিয়া গ্রæপের উপদেষ্টা ভাস্কর রায়, টেকনো ইন্ডিয়া গ্রæপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শঙ্কু বোস, খ্যাতিমান অভিনেতা ও শিল্পী সুভ্রনীল চ্যাটার্জী, খ্যাতিমান শিল্পী সান্তনু রায় চৌধুরী, খ্যাতিমান শিল্পী নবনিতা রায় চৌধুরী, খ্যাতিমান শিল্পী মানদাবী চক্রবর্তী, খ্যাতিমা আর্টিস্ট সিতাংশু মজুমদার, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের (দিল্লি চ্যাপ্টার) সমন্বয়ক সৌম বন্দোপাধ্যায় প্রমুখ।
চার দিনের কর্মসূচিতে ছিল, ২৬ ফেব্রুয়ারি সিএন্ডবি মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ও শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, ভারতীয় অতিথিদের বর্ণাঢ্য আয়োজনে নাগরিক সংবর্ধনা প্রদান। রাসিক মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে নাগরিক সংবর্ধান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের উত্তরীয়, ক্রেস্ট ও প্রীতি উপহার প্রদানের মাধ্যমে সংবর্ধিত করেন রাসিক মেয়র। এরআগে নগর ভবনের প্রধান ফটক থেকে শিশুদের নৃত্য আর গানের তালে তালে অতিথিদের মঞ্চে নিয়ে এসে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেওয়া হয়। বিকেলে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ও ভারতের খ্যাতিমান শিল্পীবৃন্দের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া এদিন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনকে একটি অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স উপহার দিয়েছে ভারত সরকার। নগর ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে রাসিক মেয়রের হাতে এ্যাম্বুলেন্সের চাবি তুলে দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। সাংস্কৃতিক মিলনমেলার মূল অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয় ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে। ২৭ ফেব্রুয়ারি পুঠিয়া রাজবাড়ি, নাটোর রাজবাড়ি ও উত্তরা গণভবন পরিদর্শন করেন তারা।
সন্ধ্যায় রাজশাহী কলেজ মাঠে দ্বিতীয় দিনের মতো মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। কলেজ মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ উঠে দর্শকে। শিল্পীদের পরিবেশনায় মাতোয়ারা উঠে দর্শক-শ্রোতারা। জনপ্রিয় ব্যান্ড দল চিরকুট সঙ্গীত পরিবেশনা করেন। এছাড়া লালন সঙ্গীত ও লোক সঙ্গীত পরিবেশনা করেন শফি মন্ডল। লালনগীতি ও ভাওয়াইয়া পরিবেশন করেন সুজন চক্রবর্তী, বারশিয়া ও লোকঙ্গীত পরিবেশনা করে রিপন কুমার।
সংবাদ প্রেরক স্বা/-জনসংযোগ কর্মকর্তা, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.