ভাঙল কোটি হৃদয়!

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: হৃদয়ভঙ্গ বাংলাদেশের। প্রথমবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে নেমেই টানা দুই ম্যাচে জয়ের দুর্দান্ত সুযোগ এসেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই। কিন্তু ক্যারিবীয়দের ১৪০ রানে রুখে দিয়েও মাত্র ৪ রানে হেরে গেল বাঘিনীরা। তিন বল বাকি থাকতেই অলআউট হয়ে যান জাহানারা-জ্যোতিরা।
শুক্রবার নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অথচ শুরুটা ভালোই করেছিলেন ক্যারিবিয়ানরা। বিনা উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ছিল ২৯ রান। এরপরই তিন বলের ব্যবধানে শূন্য রানে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে উইন্ডিজের মেয়েরা।
যার ফলে ১৫.১ ওভারে ৪৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে ক্যারিবীয়রা। বাংলাদেশের স্পিনারদের চক্রব্যূহে আটকে ৭০ রানে ৭ উইকেট পড়ে যায় তাদের।
সেখান থেকে শেমাইন ক্যাম্পবেলের অপরাজিত ৫৩ রানের সৌজন্যে কিছুটা লড়াইয়ের মতো পুঁজি পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪০ রান তোলে দলটি। ফ্লেচার করেন ১৭ রান। দুটি করে উইকেট নেন নাহিদা আকতার এবং সালমা খাতুন।
সেই রান তাড়া করত নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই আউট হয়ে যান শামিমা সুলতানা। তারপর ইনিংস সামলাতে থাকেন শারমিন আখতার এবং ফারজানা হক পিংকি। যদিও দলগত ৩০ রানের মাথায় আউট হয়ে যান শারমিন।
তারপরও ভালোভাবেই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ২১.২ ওভারে ২ উইকেটে ৬০ রানের পর বিপর্যয়ের মুখে পড়েন নিগার সুলতানারা। শূন্য রানে তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। যাতে ২৩.২ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৬০ রান।
সেখান থেকে বাংলাদেশের ইনিংসের হাল ধরেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা। তবে ৩২.২ ওভারে দুর্দান্ত এক রিভিউয়ে ফিরতে হয় তাকেও। এক বল পরেই আউট হয়ে যান ফাহিমা খাতুন। এরপর ভাগ্যের সহায়তা নিয়েই প্রয়োজনীয় রানটা কমাতে থাকেন সালমা খাতুন।
কিন্তু ৪৪তম ওভারের প্রথম বলেই তাঁর সেই সৌভাগ্যের কোটা ফুরিয়ে যায়। ৪০ বলে ২৩ রান করেন তিনি। সেইসময় জয়ের জন্য বাংলাদেশের ৪১ বলে ৩১ রানের প্রয়োজন ছিল।
জয়ের জন্য সুন্দরী জাহানারা আলমের দিকেই তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দলের ১২২ রানের মাথায় আউট হয়ে যান এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। যিনি এশিয়া কাপে ব্যাট হাতে বাংলাদেশকে জিতিয়েছিলেন।
এরপরও হাতে শেষ উইকেট নিয়েও হাল ছাড়েননি নাহিদা। ফারিহা তৃষ্ণাকে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন বলতে গেলে একাই। ফারিহার ব্যাটিংয়ের ওপর যে তার ভরসা ছিল না- তা স্পষ্ট ছিল ক্রিজেই। ক্যারিবীয় বোলারদের থেকে তাকে রক্ষা করছিলেন স্ট্রাইক আগলে।
এভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন নাহিদা আক্তার। ৪৯তম ওভারে মাত্র ২টি রান আসে। তাও শেষ বলে এক রান নেন নাহিদা। ফলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার পড়ে ৮ রান। প্রথম বলে ২ রান নেন নাহিদা। সেই বলেই থ্রো ভালো হলে আউট হয়ে যেতে পারতেন ফারিহা। পরের বল থেকে এক রান নেন নাহিদা। দু’রান নিতে গেলে আউট হয়ে যেতেন।
যার ফলে স্ট্রাইক চলে যায় ফারিহার হাতে। কিন্তু ওই বলেই বোল্ড হয়ে যান বাঁহাতি এই পেসার। ফলে ৪৯.৩ ওভারে ১৩৬ রানে অল-আউট হয়ে গিয়ে ঐতিহাসিক জয়ের সুযোগ হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। সঙ্গে ভেঙ্গে যায় আশাহত কোটি হৃদয়।
উইন্ডিজ নারীদের পক্ষে মাত্র ১৫ রানের বিনিময়ে ৪টি উইকেট শিকার করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান হেইলে ম্যাথিউ। এছাড়া এছাড়া স্টেফানি টেইলর ও আফাই ফ্লেচার দুজনেই ২৯ করে রান দিয়ে নেন ৩টি করে উইকেট। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.