ভাগ্যে জোটেনি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর, উত্তরবঙ্গের পালা গানের আলোড়ন সৃষ্টিকারি কায়ছার-সুফিয়ার এখন বড় দুর্দিন


আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি: স্বাধীনতাত্তোর কালে উত্তবঙ্গের পালাগানের আলোড়ন সৃষ্টিকারি ও গ্রামাঞ্চলের সংস্কৃতির ধারক বয়াতি কায়ছার-সুফিয়া দম্পতির ভাগ্যে জোটেনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের একটি ঘর।
তারা ভুমিহীন ও গৃহহীন হয়ে সান্তাহার পশ্চিম ঢাকা রোডের পাশে সড়ক ও জনপদের জায়গায় ঝুঁপড়ি ঘর তুলে জীবনের সায়াহেৃ এসে এখন বড় দুর্দিনে জীবন যাপন করছেন এক দিনের উজ্জল নক্ষত্র এই শিল্পী পরিবার।
নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার পারইল গ্রামের কায়ছার বয়াতি তারই পালাগানের সাথী সুফিয়া বেগম বয়াতিকে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করেন। স্বাধীনতা লাভের পর তাদের পালা গান সমগ্র উত্তরবঙ্গের গ্রামগঞ্জে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
সে সময় কায়ছার সুফিয়া দম্পতির পালা গানের আসরের কথা শুনলে আশেপাশের দশ গ্রামের নারী পুরুষ জমায়েত হতো। তারা যখন রাস্তা পথে চলাচল করতো তখন শতশত কৌতুহলী জনতা তাদের এক নজর দেখার জন্য ভীড় করতেন।
উত্তরবঙ্গের ষোল জেলার প্রতিটি মানুষ কায়ছার সুফিয়া বয়াতিকে এক নামে চিনতেন। পালা গান শুরুর আগে তাদের দুই মেয়ে রাবেয়া ও রহিমা লালনগীতি ও মুর্শিদী গান পরিবেশন করে দর্শকদের মাতিয়ে রাখতেন। তাদের দুই ছেলে আব্দুল কাদের ও কোরবান আলী ঢোল ও জুড়ি বাজাতেন। তখন এই শিল্পী পরিবারের ডাক হাঁক ছিল প্রচুর। তাদের শুভাকাংখির ছিলনা অভাব। কায়ছার সুফিয়ার সাথে কথা বলতে পারলে অনেকে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করতেন। কিন্ত বয়সের ভারে নুয়েপড়া ৯৭ বছর বয়সের কায়ছার বয়াতীর পাশে আজ আর কেউ নেই।
তারা বর্তমানে কর্মহীন হয়ে সান্তাহার পশ্চিম ঢাকারোডের পাশে সড়ক ও জনপদের জায়গায় ঝুঁপড়ি ঘর তুলে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছেন। সেদিনের মঞ্চ মাতানো সেই কায়ছার বয়াতী আজ অসুস্থতায় স্পষ্ট করে কথা পর্যন্ত বলতে পারেননা।
তার স্ত্রী সুফিয়া বয়াতী জানান তাদের পালা গানের পেশা ছেড়ে দিয়ে ছেলেরা ট্রাক শ্রমিকের কাজ করে যে টাকা দেয় তা দিয়ে সংসার চলেনা। বাধ্য হয়ে সান্তাহারের চেনা জানা হিতৈষী ব্যক্তিদের কাছে সাহায্য সহযোগীতা নিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছি।
২০২১ সালে ২১ সেপ্টেম্বর আদমদীঘি উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজু ও উপজেলা নির্বাহি অফিসার সীমা শারমিন তাদের একটি হুইল চেয়ার ও কিছু টাকা দিয়ে যান। এরপর আর কেউ তাদের খোঁজ খবর রাখেনি। কায়ছার বয়াতী অস্পষ্ট কন্ঠে জানায়, মৃত্যুর আগে একটি সরকারী বাড়ি পেলে নিশ্চিন্তে মরতে পারতাম।
তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সমাজের বিত্তবান ও শুভাকাংখিদের নিকট দুমুঠো ভাত ও চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্যের অনুরোধ জানান। তাকে সাহায্য সহযোগীতা করতে তার মোবাইল ও বিকাশ নং ০১৭৮৩-৪৮১৩৮৬। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.