বড়াইগ্রামে দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন, প্রথম স্ত্রীকে হত্যার মামলা চলমান


নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়ায় দ্বিতীয় স্ত্রী চাম্পা খাতুনকে হত্যার দায়ে স্বামী শাহীন মন্ডলকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে নাটোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শরীফ উদ্দিন এই আদেশ দেন। দন্ডপ্রাপ্ত শাহীন মন্ডল উপজেলার তেলো পশ্চিমপাড়া এলাকার রইচ উদ্দিন মন্ডলের ছেলে।
শাহীন মন্ডলের (৩৬) বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে করা মামলা বিচারাধীন। এ অবস্থায় দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে তাঁকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, বনপাড়া কালিকাপুর গ্রামের আফছার মিয়াজীর মেয়ে চাম্পা খাতুনের সাথে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে বিবাহ হয় একই উপজেলার তেলো পশ্চিমপাড়া মহল্লার রইচ উদ্দিন মন্ডলের ছেলে শাহীন মন্ডলের। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে স্বামী শাহীন মন্ডল ও তার পরিবারের সদস্যরা।
স্ত্রী চাম্পা খাতুন তাদের চাহিদা মাফিক যৌতুক তার বাবার কাছ থেকে এনে দিতে অস্বীকার করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই বিরোধ সহ মারধরের ঘটনা ঘটতো। এর এক পর্যায়ে গত ২০ জানুয়ারী ২০১৬ সাল সকালে মেয়েকে মেরে ঘরের মধ্যে রেখে দিয়েছে বলে মেয়ের প্রতিবেশীদের মাধ্যমে সংবাদ পায় চাম্পার বাবা আফছার মিয়াজী। পরে মেয়ের বাড়ীতে গিয়ে ঘরের মধ্যে গলাকাটা মেয়ের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে তারা।
এরপরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় নিহত চাম্পা খাতুনের বাবা আফছার মিয়াজী বাদী হয়ে মেয়ের স্বামী শাহীন মন্ডল ও তার শ্বশুড়, শ্বাশুড়ীকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে চাম্পা খাতুনের শ্বশুড় ও শ্বাশুড়ীর নাম বাদ দিয়ে শুধুমাত্র স্বামী শাহীন মন্ডলের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেন আদালতে। দীর্ঘ কয়েক বছর মামলার স্বাক্ষ্য প্রমান গ্রহন শেষে আদালতের বিচারক শাহীন মন্ডলকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেন।
দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আরিফুর রহমান সরকার বলেন, দন্ডপ্রাপ্ত আসামির বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে পৃথক একটি মামলা বর্তমানে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। শিগগিরই ওই মামলারও রায় ঘোষণা করা হতে পারে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান বলেন, মামলায় কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলেন না। রায়ে তাঁরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তাঁর মক্কেল রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। আসামির বিরুদ্ধে অন্য একটি হত্যা মামলা চালু থাকার বিষয়টিও তিনি নিশ্চিত করেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.