ব্রিটেনের উপপ্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেইনারের পদত্যাগ

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পদত্যাগ করেছেন ব্রিটেনের উপপ্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেইনার। কর কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোর পর শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। তার চলে যাওয়া ক্রমশ অজনপ্রিয় হতে থাকা লেবার নেতা ও প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের জন্য আরেক মাথাব্যথা বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের পর ব্রিটেনে রেইনারকেই সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু ‘রেইনার প্রপার্টি স্ক্যান্ডাল’ মিডিয়া তোলপাড় করার পর শেষ পর্যন্ত ইস্তফা দিতে বাধ্য হলেন রেইনার।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী স্টারমারকে লেখা এক চিঠিতে রেইনার জানান, তিনি ব্রিটেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং গৃহায়নমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করছেন, পাশাপাশি লেবার পার্টির উপ-নেতার পদ থেকেও।
গত বছর (২০২৪) জুলাইয়ে জাতীয় নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয়লাভ করলেও লেবার পার্টি এখন অভিবাসন-বিরোধী নতুন রাজনৈতিক দল রিফর্ম ইউকে পার্টির কাছ থেকে ক্রমেই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। 
নাইজেল ফারাজের দলটি বর্তমানে জাতীয় মতামত জরিপে এগিয়ে রয়েছে এবং আজ শুক্রবার বার্মিংহামে দলটি একটি জাতীয় সম্মেলন আয়োজন করছে।
গত মে মাসে ইংল্যান্ডের হোভ এলাকায় প্রায় ৮ লক্ষ পাউন্ড মূল্যের এক ফ্ল্যাট কেনার সময় রেইনার স্ট্যাম্প ডিউটি কর বাবদ পুরো অর্থ দেননি। তিনি প্রায় ৪০ হাজার পাউন্ড কর কম দিয়েছিলেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়।
খবরে বলা হয়, ওই ফ্ল্যাটকে তিনি নিজের প্রধান আবাসিক সম্পত্তি হিসাবে দেখিয়েছিলেন, যদিও তার বৈধ প্রধান বাসভবন ছিল অ্যাশটন-আন্ডার-লাইনে। এর ফলে কর নিয়ে অসঙ্গতি তৈরি হয়। এই ঘটনাকে ঘিরে দেশজুড়ে তোলপাড় পড়ে যায়।
গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে পরিষ্কার হতে থাকে, কর সংক্রান্ত বিষয়ে রেইনার অন্যায় করেছেন। চাপের মুখে গত বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রেইনার নিজে ভুল স্বীকার করে জানিয়ে ছিলেন, তিনি ভুল আইনি পরামর্শের ওপর নির্ভর করেছিলেন।
ওই পরামর্শে বলা হয়েছিল, দ্বিতীয় বাসভবনের জন্য যে বেশি হারে কর প্রযোজ্য, তা তার ক্ষেত্রে হবে না। জটিল ব্যক্তিগত পরিস্থিতি যেমন ২০২৩ সালের বিবাহবিচ্ছেদ এবং ছেলের আজীবন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তার সম্পত্তি সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনায় প্রভাব ফেলেছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তবে এই কেলেঙ্কারি রেইনারের রাজনৈতিক ভাবমূর্তিতে বড় আঘাত হানে। কারণ অতীতে তিনি কনজারভেটিভ মন্ত্রীদের অসদাচরণ নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। এবার বিরোধীরা বিশেষত কনজারভেটিভ নেতা কেমি বেডেনোক এবং শ্যাডো চ্যান্সেলর মেল স্ট্রাইড প্রকাশ্যে তার পদত্যাগ দাবি করেন।
প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার প্রথমে রেইনারকে সমর্থন জানালেও পরে গণমাধ্যমের চাপ বাড়তে থাকলে ও নৈতিকতা তদন্তের মুখে অবশেষে তিনি পদত্যাগ করতে বলেন। দলের মধ্যে ট্রেড ইউনিয়ন সমর্থক এবং জনসংযোগের সেতুবন্ধনকারী হিসেবে রেইনারের বিদায় স্টারমারের সরকারের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.