ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধি রৌমারীতে দ্বিতীয় দফায় বন্যা, বানবাসিদের দূর্ভোগ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বন্যার ধকল থেকে না উঠতেই দ্বিতীয় দফায় বন্যা শুরু পানি বৃদ্বি পাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে ভারীবর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ী ঢলে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অপর দিকে ভারতের আসাম রাজ্যের ধুবরী জেলার মানকারচর থানাধীন কালো নদী দিয়ে পাহাড়ী ঢল সীমান্ত ঘেষাঁ জিঞ্জিরাম নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে। এ উপজেলার প্রায় শতাধীক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এতে পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ৫ শতাধিক হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল।
আজ রবিবার (১২ জুলাই) সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় বিভিন্ন এলাকার বেঁড়িবাধ ও সংযোগকারী রাস্তাগুল ভেঙ্গে যায়। এক বছর অতিবাহিত হলেও বাঁধ ও সংযোগকারী রাস্তাগুলো মেরামত করা হয়নি। ফলে কয়েক দিনের টানা ভারীবর্ষণে ও উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় পাহাড়ী ঢলে ব্রহ্মপুত্র নদের ও জিঞ্জিরাম নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদের দু-কুল উপচে বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
গতকাল শনিবার সকাল থেকে বেঁড়িবাঁধের ভাঙ্গা দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। আগের বন্যার পানি কিছু শুকালেও হঠাৎ নতুন করে আবারো পানি বৃদ্ধি পেয়ে তলিয়ে গেছে বন্দবেড় ইউনিয়নের কুটিরচর, কান্দাপাড়া, টাঙ্গারীপাড়া, বাইশপাড়া, যাদুরচর ইউনিয়নের চাক্তাবাড়ি, দিগলেপাড়া, নতুনগ্রাম, ধনারচর নতুনগ্রাম, চরেরগ্রাম, হাট মোল্লাপাড়া, পাখিউড়া, রৌমারী সদর ইউনিয়নের ঠনঠনিপাড়া, ভুন্দুরচর, বারবান্ধা, চুলিয়ারচর, চান্দারচর, নওদপাড়া, ব্যাপারী পাড়া, খাটিয়ামারী, রতনপুর, চরবামনেরচর, মোল্লারচর, শৌলমারী ইউনিয়নের বেহুলারচর, সুতিরপাড়, বোয়ালমারী, কলমেরচর, গয়টাপাড়া, চরশৌলমারী ইউনিয়নের ঘুঘুমারী, খেদাইমারী, চরখেদাইমারী, দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ইটালুকান্দা, চরগয়টাপাড়া ও ছাটকড়াইবাড়ীসহ উপজেলার প্রায় ১১৫ টি গ্রাম।
এতে করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৮’শ পরিবার। পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে পাট, তিল, তিশি, কাউন, চিনা, রোপা আমন, বীজতলাসহ প্রায় ৭’শ হেক্টর জমির ফসল। বিপাকে পড়েছেন গৃহস্থালী মালামালসহ ছাগল, হাঁস, মুরগী ও গরু, মহিষ নিয়ে। গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দেওয়া বিপাকে পড়েছেন গ্রেস্থরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আগের বন্যার পানি শুকিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা তাদের ঘরবাড়ি মেরামত ও বীজতলা ফেলেছেন। কিন্তু আবারো নতুন করে বন্যার পানি বৃদ্ধি হওয়ায় কৃষকদের অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হবে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের নামের তালিকা করা হচ্ছে।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল ইমরান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, নতুন করে বন্যার পানি বৃদ্ধি হওয়ায় এলাকার অনেক ক্ষতি হবে। দিনমুজুর ও কৃষকরা আগের বন্যার ধকল থেকে না উঠতেই আবারো বন্যা শুরু হলো।
তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে  ৬টি ইউনিয়নে ২৪ মেট্রিকটন চাউল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জন্য প্রায় ৩’শ টি খাদ্যের প্যাকেট বিতরন করা হয়েছে এবং যাদের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে তাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মো. হাফিজুর রহমান হৃদয়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.