ব্যর্থতা নয়, দলের পূর্ণগঠন চলমান সাংগঠনিক প্রক্রিয়া : মির্জা আব্বাস

ঢাকা প্রতিনিধি: আন্দোলনে ব্যর্থতার কারণে নয়, দল পুনর্গঠন সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার অংশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। আজ সোমবার ঈদের নামাজ আদায় শেষে শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা ও তার রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবর প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মির্জা আব্বাস।
মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে জনগণের মধ্যে ঈদের আনন্দ নেই। ঈদ আরবি শব্দ। এর বাংলা অর্থ হলো খুশি। এই খুশি এটাকে যে উপভোগ করা এর মনমানসিকতা এটা কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে নেই। সকলের বেদনা ক্লিষ্ট মুখ, বেদনা-বিধুর চেহারা, অনেক কষ্ট করে তারা কোরবানি দিচ্ছে। আমার বাড়ির (শাহজাহানপুর) পাশে কোরবানির পশুর হাট ছিল। দেখলাম বেশ কিছু বেপারী গরু বিক্রি করতে পারেনি। অর্থাৎ টাকার অভাব লক্ষ্য করা গেছে।
তিনি বলেন,বাংলাদেশের আজকে যে কষ্ট এটা অবৈধ সরকারের জন্য। যদি নির্বাচিত সরকার থাকতো তাহলে জনগণের এই কষ্ট হতো না। দলের হাজার নেতাকর্মী কারাবন্দী অবস্থায় আছে। তাদের প্রতিও সহমর্মিতা প্রকাশ করেন মির্জা আব্বাস।
মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে দেশের মানুষ চারিদিক থেকে অক্টোপাসের মতো বন্দী অবস্থায় আছে। কি রাজনৈতিক, কি অর্থনৈতিক, কি সামাজিক, কি ভৌগলিক। আমি যদি ভৌগলিক অবস্থার কথা বলি আমরা কিন্তু ভালো অবস্থানে নাই। আজকে সেন্টমার্টিন দ্বীপ খাদ্য সংকট পড়েছে। ওখানে খাদ্য সরবারহ করা যাচ্ছে না। কার ভয়ে? মিয়ানমার সৈন্যবাহিনীর ভয়ে।
তিনি বলেন, ১৯৭৮-৭৯ সালের দিকে এই মিয়ানমার নতজানু হয়ে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতির (জিয়াউর রহমান) কাছ থেকে মাফ চেয়ে বিদায় নিয়েছিল। সেই মিয়ানমার আজকে কতটুকু ঔদ্ধত্য হয়ে গেছে যে, তারা আমাদের রাষ্ট্রকে রক্তচক্ষু দেখায়।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন। এই মুহূর্তে দেশনেত্রীর আরোগ্য কামনায় আমরা দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই। আমাদের নেতা তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমানকে মিথ্যা ভুয়া মামলায় সাজা দিয়ে তাদেরকে দেশে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। তাদের জন্য আমরা আল্লাহ কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছি। এদেশের মানুষ আজকে কথা বলতে পারে না, কথা বলার অধিকার নাই এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য জন্য এই ঈদুল আজহার দিনে দেশবাসীকে সমস্ত ভয়-ভীতিকে কোরবানি দিয়ে এই সরকারকে অবশ্যই মোকাবিলা করার জন্য তওফিক আল্লাহতালা দিন এই দোয়া আমরা করছি।
মির্জা আব্বাস সাংবাদিকদের বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বেলা সাড়ে ১১টায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ও নজরুল ইসলাম খান দলের কেন্দ্রীয় নেতা আহমেদ আজম খান, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, রফিকুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, শাহ নেসারুল হক দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে আসেন। সেখানে তারা ফাতেহা পাঠ করে দলের প্রতিষ্ঠাতার আত্মার মাগফেরাত কামনায় মোনাজাতে করেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ঈদের দিন দলীয় কর্মসূচি শেষ করে জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতেন। ২০১৮ সালে দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে তিনি কারাগারে গেলে দলের নেতারা সেই রেওয়াজ ধরে রাখেন।
মহানগর উত্তরের নেতা আমিনুল হক, যুব দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহিম, জাসাসের সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকনসহ কয়েকটি অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরাও ঈদের দিন তাদের প্রয়াত নেতার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মোমাসুদ রানা খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.