বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তিনি দেশের কৃষকদের স্বার্থের সাথে আপস করবেন না, এমনকি যদি তাকে এর জন্য চড়া মূল্যও দিতে হয়। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এসব কথা বলেন মোদি।
দিল্লিতে এক সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষকদের স্বার্থ আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। ভারত তার কৃষক, পশুপালক এবং জেলেদের স্বার্থের সাথে কখনও আপস করবে না। আমি জানি যে এর জন্য আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বিশাল মূল্য দিতে হবে, তবে আমি প্রস্তুত। ভারত দেশের কৃষক, জেলে এবং পশুপালকদের স্বার্থে প্রস্তুত।
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের কয়েক মিনিট পর প্রধানমন্ত্রী মোদি এসব কথা বলেন।
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন ধরনের কৃষি পণ্য রপ্তানি করে এবং ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে যেসব ক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে তার মধ্যে কৃষি একটি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার নয়াদিল্লির রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল আমদানি অব্যাহত রাখার জন্য জরিমানা হিসেবে ভারতীয় রপ্তানির উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন। এর আগে, ২০ জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় রপ্তানির উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল।
এ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা ভারতীয় পণ্যের উপর মোট শুল্ক ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে। যা যেকোনো মার্কিন বাণিজ্যিক অংশীদারের উপর আরোপিত সর্বোচ্চ শুল্কের মধ্যে একটি।
এদিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যে রাশিয়ান তেল আমদানির কারণে ভারতকে লক্ষ্য করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ অন্যায়, ও অযৌক্তিক।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ‘আমরা ইতিমধ্যেই এই বিষয়গুলোতে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছি যে, আমাদের আমদানি বাজারের কারণগুলোর উপর ভিত্তি করে ভারতের ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। তাই এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থে যে পদক্ষেপ নিচ্ছে তার জন্য ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা বেছে নিয়েছে।’
এতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে ভারত তার জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেবে।
জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে হামলার পর ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন যে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছিলেন, যদিও নরেন্দ্র মোদি সরকার এই দাবি অস্বীকার করেছে।
ভারতের বিশাল কৃষি ও দুগ্ধ খাত খোলা এবং রাশিয়ার তেল ক্রয় বন্ধ করার বিষয়ে মতবিরোধের কারণে পাঁচ দফা আলোচনার পর ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা ভেস্তে যায়। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.