বেলকুচি-চৌহালীতে শতাধিক গ্রাম বন্যায় প্লাবিত, লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দী

বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: তৃতীয় দফায় বন্যায় সিরাজগঞ্জের যমুনা নদী বেষ্টিত বেলকুচি ও চৌহালী উপজেলা এবং তাঁতশিল্প সমৃদ্ধ এলাকার লাখ লাখ মানুষ পানি বন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে এবং শতাধিক গ্রাম পানি বন্দি হয়ে পরেছে।
ডুবে গেছে অসংখ্য ঘরবাড়ী, রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা, মৎস্য খামার। অধিকাংশ তাঁত শিল্প কারখানা, টিউবওয়েল পানিতে নিমজ্জিত হওয়াসহ স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে।
এতে করে পেটের পীড়া ও চর্মরোগসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে বানভাসী এলাকার মানুষের। পানিবন্দি মানুষের দুভোর্গ ক্রমেই বেড়েই চলছে।
দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। ফলে বন্যা এলাকায় পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া অতি জরুরি হয়ে উঠেছে। উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো পানিতে তলিয়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় বন্যা পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয়ে পাঠদান করতে সমস্যা হবে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
এছাড়া বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদে বন্যার পানি উঠেছে। প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে পাহাড়ী ঢলের কারণে যমুনার পানি বৃদ্ধির ফলে এ দুই উপজেলার চরাঞ্চলে অনেক পরিবার ঘরের চালে,কেউবা খোলা আকাশের নিচে, কেউ বেড়িবাঁধে, আবার কেউ কেউ নৌকায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।
নদীতে পানিবৃদ্ধি এখনো অব্যাহত আছে। পানিবন্দি অনেক মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। বানভাসী মানুষের সরকারের নিকট জোর দাবী অতিসত্বর বন্যা কবলিত এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রান সামগ্রী, জরুরী ঔষধপত্র ও বিভিন্ন সরঞ্জাম পৌছে দেয়ার।
বেলকুচি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা রাসেদুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানায়, এ পর্যন্ত পৌরসভাসহ ৬ টি ইউনিয়নে ১০ কেজি করে ভিজিএফ’র চাউল ২৩ হাজার ৯০০ পরিবারের মাঝে বিতরণ চলমান আছে।
এছাড়া বন্যায় ক্ষতিগস্ত ৬৮৫ পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছারা ২০ মেট্টিকটন চাউল স্টক আছে।
চৌহালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সুত্রে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, এ পর্যন্ত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের জন্য সরকারী বরাদ্দ পেয়ে বিতরণ করা হয়েছে ১০ কেজি করে চাউল ৯৪৭৩ টি পরিবার এবং ৮৭৫ প্যাকেট শুকনো খাবার।
এছাড়া ২০ মেট্রিক টন চাউল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ত্রান বিতরণ চলমান রয়েছে। বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডাঃ মোফাখখারুল ইসলাম জানান, উপজেলার পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়নে ৭টি টিম সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে।
অপরদিকে চৌহালী উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৪৬টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে ৮টি মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
এদিকে বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনিসুর রহমান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, বন্যা মোকাবেলা করতে উপজেলা প্রশাসন যথেষ্ট সজাগ দৃষ্টি রাখছে। যে কোনো পরিস্থিতি আমরা সামাল দিতে পারবো ইনশাল্লাহ।
বেলকুচি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাজেদুল বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, বন্যা মোকাবেলা করতে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলায় প্রায় ২৪ হাজার পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাউল দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ২০ মেট্টিকটন চাউল প্রস্তুত আছে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি এম মুছা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.