বেলকুচির যমুনা চরাঞ্চলে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বাদাম চাষে ব্যস্ত কৃষক

বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ বেলকুচির যমুনা চরাঞ্চল থেকে সম্প্রতি বন্যার পানি নেমে যাওযায় চরাঞ্চলে চার দিকে জেগে উঠেছে বালু চর। এ অঞ্চলে বর্তমানে কৃষকরা পরিবারের লোকজন নিয়ে বাদাম বীজ বপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
বেতিল,চাঁনপুর,ভাঙ্গাবাড়ী ক্ষিদ্রচাপড়ি, বেলকুচি চর,দেলুয়া,রতনকান্দী, সলিমাবাদ, রান্ধনীবাড়ী, বেলি’র চরসহ প্রায় অর্ধশত গ্রামের কৃষকরা এলাকায় বাদাম চাষ করছেন।
যমুনা নদীর ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে বাদাম বীজ বপন করা শুরু করছেন।
চরাঞ্চলের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাদাম চাষের জন্য কৃষকরা জমি প্রস্তুত করছেন, কেউ বাদামের বীজ বপন করছেন,কেউ লাঙল টানছেন আবার অনেক চাষীরা বীজ বপন করা জমি পরিচর্যা করছেন।
অন্য দিকে চরাঞ্চলের গ্রামীণ নারীরাও বাদাম চাষে বিশেষ ভূমিকা রাখছে,বাড়ির কাজের পাশাপাশি ছেলেদের সাথে মেয়েরাও সহযোগিতা করছে। কাজ করছে স্কুল পড়া ছোট ছোট ছেলে মেয়েরাও।
ভোরের সূর্য না উঠতেই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাষীরা বালুর মাঠে বাদাম বীজ বপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ক্ষিদ্রচাপড়ি চরের বাদাম চাষি আসাদুল মিয়া জানান, বিগত বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পুরোদমে বাদাম বীজ বপন ও ক্ষেতের পরিচর্যা শুরু করেছি। অল্প খরচ, কম সময় বাদাম চাষে অধিক লাভবান হওয়া যায়।
বাদাম চাষে বিঘাপ্রতি খরচ হয় প্রায় ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা এবং বিঘাপ্রতি ফলন পাওয়া যায় প্রায় ৭ থেকে ৮ মণ। হাট বাজারে বাদামের ভালো চাহিদা থাকায় খরচ বাদে বিঘাপ্রতি লাভ হয় প্রায় ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা।
বাদাম চাষী সাদ্দাম হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানায়, গত বছর আমি ২ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করে ভালো ফলন এবং বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর প্রায় ৮ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি।
বেলকুচি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্যাণ প্রসাদ পাল বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, এ বছরে ধাপে ধাপে চারবার বন্যা হওয়ার কারনে কৃষকদের প্রচুর খতি হয়েছে,জমিতে নতুন মাটি পরেছে এরই মধ্যে যমুনার চরাঞ্চলে বাদাম চাষ শুরু হয়েছে। অনেক চরে বাদামের চারাও গুজিয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাদাম চাষী কৃষকদের সহযোগিতা করার জন্য হতদরিদ্র কৃষক পরিবারের মাঝে সরকারের বরাদ্দকৃত প্রণোদনা কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরও বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, সুস্বাদু, মুখরোচক ও ভিটামিন-সমৃদ্ধ এই ফসল এক দিকে যেমন খাদ্যে যোগান দিয়ে থাকে তেমনি তেলের চাহিদা পূরণ করে। বাদাম ক্ষেত থেকে কচি পাতা কেটে কৃষকরা তাদের গরু-ছাগলের খাবার যোগায়। এতে গরু-ছাগল তাড়াতাড়ি মোটাতাজা হয়।
এ ছাড়া অন্য ফসলের মত বাদামের জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বিগত বছরগুলোর চেয়ে এ বছর বাদাম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি এম মুছা। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.