বেলকুচিতে সাংবাদিককে বেধরক পেটালেন এমপির অনুসারীরা

 

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে বিটিসি নিউজ এর বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি আবু মুছাকে বেধড়ক পেটালেন এমপি আব্দুল মমিন মণ্ডলের অনুসারীরা। এ সময় বিটিসি নিউজ এর বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি আবু মুছার মোবাইল ছিনিয়ে নেয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরের দিকে বেলকুচির চালা গ্যারেজ এলাকার আলহাজ সিদ্দিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এমপি মমিন মণ্ডলের ব্যক্তিগত সহকারী সেলিম সরকার ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ আলীর নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেদী মাসুদ বলেন, সম্প্রতি ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি ও কমিটির বিরুদ্ধে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড বরাবর স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্যের প্যাডে একটি অভিযোগ করা হয়। অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে বিদ্যালয়ে যান। স্কুলে যাওয়ার ৫ মিনিটের মধ্যে এমপির ব্যক্তিগত সহকারী সেলিম তার লোকজন নিয়ে প্রবেশ করলে অফিস রুম ভরে যায়। পরে অন্য একটি কক্ষে তদন্ত কার্যক্রম চলে। উভয়পক্ষের সঙ্গে তদন্ত কমিটি কথা বলেন।
তিনি বলেন, তদন্ত শেষে বোর্ডের কর্মকর্তারা চলে যাচ্ছিলেন। সেলিম সরকারসহ অন্যরাও বের হয়ে যান। বের হয়ে যাওয়ার সময় পিএস সেলিমের লোকজন নাবিল নামে এক ছেলেকে বেদম মারধর করলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। এ সময় সাংবাদিক আবু মুছা ছবি তুলতে গেলে তাকেও বেধড়ক মারপিট করে মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। মেয়র এসব দেখে গাড়ি ব্রেক করেন। তার সঙ্গে ছোট ছেলেও ছিল। মেয়র গাড়ি ব্রেক করলে তাকেও বেধড়ক মারপিট করে রক্তাক্ত করে। পরে আমি থানায় ফোন করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ চলে আসে।
বিটিসি নিউজ এর সাংবাদিক আবু মুসা বলেন, হামলার সময় ছবি তুলতে গেলে সেলিম সরকার ও তার লোকজন আমার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। তারা চলে যাওয়ার সময় বলে এমপির বাড়িতে এসে মোবাইল নিয়ে যাইস।
বেলকুচি পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা বলেন, স্কুলের তদন্ত শেষে আমার ছোট ছেলেকে সঙ্গে করে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হচ্ছিলাম। এ সময় এমপির পিএস সেলিম তার লোকজন নিয়ে এসে মোটরসাইকেলের সামনে দাঁড়িয়ে পিস্তল বের করে। এরপর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী, তার ভাই মান্নান, হাফিজুল কমিশনার, শিপন কমিশনার আমার উপর আক্রমণ করে। আমার বাচ্চাটাকে হোন্ডা থেকে ফেলে দেয়। আমি বাচ্চাটাকে তুলতে গেলে আমাকে আঘাত করে। আমার সঙ্গে থাকা নাবিল ও মহিলা কাউন্সিলর শাপলার ছেলেকে বেদম মারপিট করে। এটা পরিকল্পিত, এম মমিন মণ্ডলের নির্দেশে আমার উপর হামলা চালানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডলের ব্যক্তিগত সহকারী সেলিম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে অপর অভিযুক্ত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী বলেন, আলহাজ সিদ্দিক উচ্চ বিদ্যালয়ের কিছু বিষয় নিয়ে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে মেয়রের সঙ্গে আমার হাতাহাতি হয়েছে। ঘটনাস্থলে এমপির পিএস ছিলেন না।
বেলকুচি থানার ওসি মো. আনিছুর রহমান বলেন, আলহাজ উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি তদন্ত কমিটি এসেছিল। তদন্তকালে দুটি পক্ষ ছিল। তদন্ত শেষে যখন দুপক্ষই বের হয়ে যায়, তখনেই এখানে একটা ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে দ্রুত চলে আসি। সেখানে এখন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঘটনাস্থলে এমপির পিএস ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি এখানে তিনি ও ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি মো: সুলতান হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.