বেলকুচিতে অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিকে সয়লাব


বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে অনুমোদন বিহিন অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশপাশে গড়ে ওঠা দালাল নির্ভর এসব প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। নানা অজুহাতে রোগীদের জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা।
সেবা দেওয়া নয় সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার নামে প্রতারণা করাই যেন এসব প্রাইভেট ক্লিনিক মালিকদের মূলত পেশা।
সরেজমিন আজ বুধবার (২৮ এপ্রিল) সকালে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিবন্ধন না নিয়ে শুধুমাত্র ট্রেড লাইসেন্স ব্যবহার করে বছরের পর বছর অবাধে চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসা।
চিকিৎসা সেবাকে ব্যানার বানিয়ে করে যাচ্ছেন তাদের অবৈধ ব্যবসা। এদের নেই কোন দক্ষ চিকিৎসক ও নার্স। নিয়মানুসারে যে কোন প্রাইভেট ক্লিনিক বা হসপিটাল পরিচালনা করতে গেলে এমবিবিএস ডিগ্রীধারী চিকিৎসক সব সময় থাকার কথা থাকলে বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।
শুধু মাত্র তাদের প্রচারণার জন্য বিভিন্ন ফেস্টুন,লিফলেট অথবা ব্যানারে দুএক জন ডাক্তারের নাম দেখা গেলেও বাস্তবে তাদের কোন দেখা পাওয়া যায় না। আইনের ফাঁক পূরণ করতেই এ যেন এক ধরনের কায়দা অবলম্বন মাত্র।
দক্ষ চিকিৎসক থাকা তো দূরের কথা এমনও অভিযোগ রয়েছে,কোন রোগী আসলেই নানা অজুহাতের ছলে দু’এক জন অদক্ষ নার্স দিয়ে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম সচল রাখেন। তারপর শুরু হয় অভিনব কায়দায় চিকিৎসক ভাড়া করার প্রক্রিয়া। এদের নেই কোন সু-দক্ষ রোগ নির্ণয়কারী আল্ট্রা সনোগ্রাম, এক্স-রে,ইসিজির যন্ত্রপাতি ও টেকনোলজিস্ট। এখানেও টেস্টের নামে চলে ভাঁওতা বাজির ব্যবসা।
এসব প্রতিষ্ঠানের পরিবেশের কথা বলতে গেলে বলাই বাহুল্য। ময়লা-আবর্জনা, দুর্গন্ধ যেন প্রতিদিনের সঙ্গী। যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকায় অনেক সময় রোগী দেখতে আসা রোগীদের স্বজনরা দুর্গন্ধ ও জরাজীর্ণ পরিবেশে অনেক সময় বমি করে নিজেরাই রোগীতে পরিণত হয়।
একটি সূত্রে জানা গেছে,বেলকুচি উপজেলা সদরেই নামে ও বেনামে ৬টি প্রাইভেট হসপিটাল-ক্লিনিক এবং ৮-১০টি রয়েছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার। তাছাড়াও উপজেলার অদূরেও বেশ কয়েকটি প্রাইভেট হসপিটাল,ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। যাহা পরিচালিত হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের নিবন্ধন ছাড়া।
অথচ এসব প্রাইভেট হসপিটালে সিজারসহ বিভিন্ন ধরনের জটিল কঠিন অপারেশন করা হয়ে থাকে। যা এই এলাকার মানুষের জন্য ব্যাপক আকারে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বহন করে।
বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. একে,এম মোফাখখারুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আমার নিকট জেলা সিভিল সার্জন অফিস থেকে এ বিষয়ে একটি চিঠি এসেছে। চলতি মাসের ২ তারিখে আমরা প্রতিটি প্রাইভেট হসপিটাল,ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকের কাগজপত্র চেয়ে চিঠি দিয়েছি। এগুলো হাতে পেলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করা হবে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা: রাম পদ রায়ের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান,অবৈধ প্রাইভেট হসপিটাল, ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টার সম্পর্কে আমার জানা ছিল না।
তবে আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। যদি অবৈধ প্রতিষ্ঠান থেকে থাকে তবে সে সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি এম এ মুছা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.