বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক:ঘরোয়া লিগে যে দলটি মৌসুমের শুরু থেকে ধুঁকছে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও যারা ছিল না আহামরি ছন্দে, সেই এসি মিলানের বিপক্ষে নিজেদের খুঁজে ফিরল রেয়াল মাদ্রিদ। আরও একবার হতাশার জাল ছিঁড়তে ব্যর্থ হলেন কিলিয়ান এমবাপে। আশা জাগালেন ভিনিসিউস জুনিয়র, কিন্তু ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডও পারলেন না দলকে পথ দেখাতে। ফলাফল, ঘরের মাঠে আরেকটি হারের জ্বালায় পুড়ল ইউরোপ চ্যাম্পিয়নরা।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচটি ৩-১ গোলে জিতেছে মিলান। আসরে প্রথম দুই ম্যাচে হারের পর টানা দুই ম্যাচ জিতল প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাতবারের চ্যাম্পিয়নরা।
টুর্নামেন্টের সফলতম দুই দলের লড়াইয়ে মালিক চাওয়ের গোলে পিছিয়ে পড়ার পর সমতা টানেন ভিনিসিউস। বিরতির আগে আলভারো মোরাতা ফের এগিয়ে নেয় মিলানকে। আর দ্বিতীয়ার্ধে তাদের তৃতীয় গোলটি করেন টিয়ানি রেইন্ডার্স।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের বিচারে বেশিরভাগ সময় লড়াই সমানে-সমান চললেও, প্রকৃত অর্থে খুব বেশি বিপজ্জনক হতে পারেনি রেয়াল। শেষ দিকে মরিয়া চেষ্টাও করে তারা; কিন্তু গোলের উদ্দেশ্যে ও লক্ষ্যে বেশি শট নিয়েও দ্বিতীয় সেরা দল হয়েই থাকে তারা।
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এই নিয়ে টানা দুটি ম্যাচ হারল রেয়াল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শিরোপা ধরে রাখার অভিযানেও চার ম্যাচে তারা হারল দুটিতে।
বার্সেলোনার বিপক্ষে গত সপ্তাহে লা লিগায় ঘরের মাঠেই ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল রেয়াল; সেই ম্যাচে অনেক সুযোগ নষ্ট করা এমবাপে এদিনও শুরুতেই দারুণ সুযোগ পেয়ে যান। কিন্তু কোনাকুনি শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। দুই মিনিট পর ছয় গজ বক্সের বাইরে সতীর্থের বাড়ানো বল পেয়েও শট নিতে পারেননি ফরাসি ফরোয়ার্ড।
এরপরই পাল্টা আক্রমণে বের্নাবেউয়ের গ্যালারিকে স্তব্ধ করে দেয় সেরি আর পয়েন্ট টেবিলে সাত নম্বরে থাকা মিলান। দ্বাদশ মিনিটে ক্রিস্টিয়ান পুলিসিকের কর্নারে হেডে জালে বল পাঠান জার্মান ডিফেন্ডার মালিক চাও।
পরের মিনিটে আবারও পরিষ্কার সুযোগ পেয়ে হতাশ করেন এমবাপে। এবার তার শট রুখে দেন গোলরক্ষক মাইক মিয়াঁ। সতীর্থের এমন বারবার ব্যর্থতার মাঝে ২৩তম মিনিটে দলের মুখে হাসি ফোটান ভিনিসিউস।
জুড বেলিংহ্যামের বক্সে বাড়ানো পাস ধরে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন ভিনিসিউস, তাকে স্লাইড করে ফেলে দেন ডিফেন্ডার এমেরসন। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। পানেনকা স্পট কিকে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে সমতা টানেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে এগিয়ে চলা লড়াইয়ে ৩৯তম মিনিটে ফের পিছিয়ে পড়ে রেয়াল। নিজেদের সীমানায় অহেলিয়া চুয়ামেনির ভুল পাস ধরে আক্রমণে ওঠে মিলান। সতীর্থের পাস বক্সে পেয়ে, ডিফেন্ডার এদের মিলিতাওয়ের দুর্বল বাধা সামলে শট নেন রাফায়েল লেয়াও। ওই শট আন্দ্রি লুনিন ঝাঁপিয়ে ঠেকালেও বল বিপদমুক্ত করতে পারেননি, আলগা বল ফাঁকায় পেয়ে অনায়াসে জালে পাঠান রেয়ালের সাবেক স্ট্রাইকার মোরাতা।
খানিক পর প্রতিপক্ষের আরেকটি আক্রমণ সামলে প্রতি-আক্রমণ শাণায় রেয়াল। মিলিতাওয়ের থ্রু পাস মাঝমাঠে ধরে দারুণ গতিতে বক্সে ঢুকে পড়েন এমবাপে, জোরাল শটও নেন তিনি; কিন্তু গোলরক্ষক মিয়াঁর দারুণ সেভে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় মিলান।
প্রতিপক্ষের জমাট রক্ষণের সামনে ভুগতে দেখা যায় রেয়ালকে। তাদের বারবার ভুল পাস দেওয়াও ছিল দৃষ্টিকটু। এমবাপে কিছুতেই পারছিলেন না নিজের ছায়া থেকে বের হতে। ১০ মিনিটের মধ্যে আরও কয়েকবার লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন তিনি। মাঝে একবার বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে উড়িয়ে মারেন বেলিংহ্যামও।
রেয়ালের দুর্বল রক্ষণের সুযোগ নিয়ে ৭৩তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ায় মিলান। লেয়াওয়ের পাস ঠাণ্ডা মাথায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে, নিচু শটে গোলরক্ষকের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে গোলটি করেন ডাচ মিডফিল্ডার রেইন্ডার্স।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.