বুলেট-বোমা, ক্ষুধায় বিষণ্ন ঈদ গাজায়

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বহু দেশে আজ পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। আজ ঈদ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায়ও। ঈদের দিনের সাধারণ চিত্র গাজায় অনুপস্থিত। মুসলিমদের উৎসবের এই দিনে গাজাবাসী লড়াই করছে ক্ষুধা আর ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে।
ঈদের দিনেই রাফাহ শহরের পশ্চিমাঞ্চলে আগ্রাসী আক্রমণ চালিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। হামলা করেছে পার্শ্ববর্তী তাল আস-সুলতান এলাকাতেও। ঈদের দিনেও শত শত পরিবার আটকা পড়েছে এলাকাগুলোতে।
ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণে ঈদের দিনেও ধ্বংস হয়েছে বহু বাড়ি, সরকারি স্থাপনা। আতঙ্কিত হয়ে উঠেছে মানুষ।
গাজার কেন্দ্রীয় এলাকায়, মূলত পূর্ব দেই আল-বালাহ সিটিতে, আর্টিলারি গোলা ফেলা হচ্ছে। যেসব এলাকা ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ব্যবহার করেছে বলে দাবি ইসরায়েলি বাহিনীর, ওইসব এলাকাকে লক্ষ্য করে চলছে গোলাবর্ষণ। যদিও ইসরায়েল এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেয়নি।
এসব আক্রমণের ফলে অভ্যন্তরীণভাবে আরও মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বিশেষ করে গাজার উত্তর অংশে মানুষ শুধু বোমার সঙ্গেই লড়াই করছে না…লড়াই করছে পানিশূন্যতা এবং ক্ষুধার সঙ্গে।
এই ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও হাজার হাজার ফিলিস্তিনি পরিবার ঈদের নামাজ আদায়ের চেষ্টা করেছে। আবার প্রিয়জনকে হারানোর ব্যথায় কাতর হয়ে নামাজে দাঁড়িয়েছেন অনেকে।
এর মাঝেই গাজা উপত্যকায় ঈদুল আজহা উদযাপনের জন্য কোরবানির পশু প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের আক্রমণে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। ঈদের দিনেও সেখানে আনন্দের চিহ্ন নেই।
ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে গাজার বেশিরভাগ দোকানপাট, ঘরবাড়ি। অর্থ-সম্পদ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়া ফিলিস্তিনিদের কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্যও নেই। তাদের দিন কাটছে অনাহারে-অর্ধাহারে। রবিবার ঈদের দিন খোলা আকাশের নিচেই ঈদের নামাজ আদায় করেছেন তারা।
সরকারি চাকরিজীবী সামির আরাফাত নিজের দুর্দশা জানাতে গিয়ে বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সিকে বলেন, ‘আর্থিক সংকটে এবারের ঈদে কিছুই কিনতে পারেননি। ’
জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় নতুন পোশাকও কিনতে পারেননি সামির। এছাড়া পুরো বেতনও পাননি তিনি। সব গাজাবাসীর এই অবস্থা—এবার তাদের কাটছে শোকসন্তপ্ত, বিবর্ণ এক ঈদ।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। এতে ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন। এছাড়া জিম্মি হিসেবে আটক করে যায় আরও প্রায় ২৪০ জনকে।
এর জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় অবিরাম পাল্টা-হামলা শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। ইসরায়েলের আক্রমণে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.