বিড়ালদহ মাজারে কোটি টাকা লোপাটে ব্যবস্থা নিতে ডিসি’র কাছে স্মারকলিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর পুঠিয়ায় বিড়ালদহ সৈয়দ করম আলী (র.)-এর মাজারে কোটি কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ তুলে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার বিড়াদহ গ্রামের বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

স্মারকলিপি সূত্রে জানা গেছে, মাজারে বাংলাদেশ ওয়াকফ এস্টেট থেকে অনুমতি নিয়ে তিন বছরের জন্য আবদুল মুক্তাদের শেখ শরীফ কাজী নামে এক ব্যক্তি মাজারটি সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

তিনি পুঠিয়া দুর্গাপুর আসনের সাবেক এমপি কাজী আবুল ওয়াদুদের চাচাতো ভাই।

১৪ অক্টোবর বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসনের সহকারী প্রশাসক মো. মোশাররফ হোসাইন আগের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটির নাম অনুমোদন দিয়েছেন।

নতুন কমিটি দায়িত্ব নিয়ে আয়-ব্যয়ের হিসাব করতে গিয়ে প্রায় কোটি কোটি টাকার কোনো হদিস পাচ্ছে না। এই টাকা লুটপাটের ঘটনায় নিয়ে তারা ইতোমধ্যে ওয়াকফ এস্টেটসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ওয়াকফ এস্টেট প্রশাসনের অধীনে মাজারটি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় রাজনৈতিক লোক দিয়ে পরিচালনা হয়ে আসছে।

এ ধারাবাহিকতায় তিন বছর ধরে আবদুল মুক্তাদের শেখ শরীফ কাজী মাজারটি সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। মাজারটি ১.১৭ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত।

নিয়মানুসারে মাজার পরিচালনার জন্য দশ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করতে হয়। কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন পদাধিকার বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা।

মাজারটি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন আবদুল মুক্তাদের। বর্তমান পুঠিয়া-দুর্গাপুর আসনের এমপি ডা. মনসুর রহমান ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ওয়াকফ এস্টেটের কাছে মাজার পরিচালনা পরিষদ পরিবর্তনের জন্য সুপারিশপত্র পাঠান। তার সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ অক্টোবর ওয়াকফ প্রশাসনের সহকারী প্রশাসক মো. মোশাররফ হোসাইন আগের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটির নাম অনুমোদন দিয়েছেন।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, মাজারের ১০ বিঘা জমি থেকে তিন বছরে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মার্কেটের দোকান ঘর থেকে দুই লাখ টাকা, প্রতি শুক্রবার মাজার শরিফের ভেতরে বিভিন্ন দান বাবদ ২৭ লাখ টাকাসহ সড়ক থেকে প্রতি সপ্তাহে ৭০ হাজার টাকা বাহিরের দানবাক্সে পড়ে। এই হিসাব অনুযায়ী, তিন বছরে ১ কোটি ৯ লাখ ২০ হাজার টাকা আয় হয়ে থাকে। মাজারের কোষাধ্যক্ষ রবিউল হাসান জুয়েলের কাছে টাকার হিসাব চাইলে তিনি আত্মগোপন করেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, এমতাবস্থায় বর্তমান কমিটির চার সদস্য মো. মাইনুল ইসলাম, মো. মাসুদ রানা, মো. আশরাফ আলী ও মো. আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে গত ১৫ নভেম্বর থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। এই টাকা লুটপাটের ইতোমধ্যে ওয়াকফ এস্টেটসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। স্মারকলিপিতে এই বিশাল অঙ্কের টাকা আত্মসাতের ঘটনা তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে মাজারের পবিত্রতা রক্ষার জন্য জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়।

এ ব্যাপারে সাবেক ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব আবদুল মুক্তাদের বিটিসি নিউজকে বলেন, ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত মাজারের সব রকম হিসাব অডিট করা রয়েছে। নতুন কমিটি অর্থ লুটপাটের কথা বলছে, সেটা ঠিক না। ২০২১ সাল পর্যন্ত আমার কমিটির মেয়াদ আছে। মাজারটি আমি একা পরিচালনা করতাম না।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি সাইদুর রহমান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.