বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্র বৃদ্ধির আশঙ্কা

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আসছে বছরগুলোতে বিশ্বব্যাপী আবারো পারমাণবিক অস্ত্র বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর এ ধরনের অস্ত্রের ব্যবহারের ঝুঁকিও কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হবে বলেই জানিয়েছে সংঘাত ও অস্ত্র বিষয়ক শীর্ষস্থানীয় একটি থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক।
আজ সোমবার (১৩ জুন) বেশ কয়েকটি নতুন গবেষণার ফলাফলে এ ধারণা প্রকাশ করেছে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই)।
প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ এবং কিয়েভের প্রতি পশ্চিমা সমর্থন বিশ্বের নয়টি পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। ২০২১ সালের শুরু থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা কিছুটা কমলেও পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো আশু পদক্ষেপ না নিলে শিগগিরই কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো বিশ্বে এ ধরনের যুদ্ধাস্ত্রের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।
এসআইপিআরআই-এর ২০২২ ইয়ারবুকে সংস্থাটির ‘উয়িপন্স অব মাস ডিস্ট্রাকশন প্রোগ্রাম’-এর পরিচালক উইলফ্রেড ওয়ান বলেছেন, “সবগুলো পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ তাদের অস্ত্র বাড়াচ্ছে অথবা উন্নয়ন ঘটাচ্ছে এবং অধিকাংশই পারমাণকি অস্ত্র নিয়ে তীর্যক মন্তব্য করছে এবং তাদের সামরিক কৌশলগুলোতে পারমাণবিক অস্ত্র ভূমিকা রাখছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক প্রবণতা।” 
সম্প্রতি মস্কো ইউক্রেনে কথিত ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করার তিন দিন পর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার পারমাণবিক প্রতিরোধককে উচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখার নির্দেশ দেন।
রাশিয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো দেশগুলোকে এর পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে রুশ নেতা বলেন, “এটা এমন হতে পারে, যা তোমাদের পুরো ইতিহাসে তোমরা কখনও দেখনি।”
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মোট ৫ হাজার ৯৭৭টি পারমাণবিক অস্ত্র আছে রাশিয়ার হাতে, যা যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে প্রায় ৫৫০টি বেশি। বিশ্বের মোট পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্রের ৯০ শতাংশেরও বেশি এই দুই দেশের হাতে আছে।
তবে এসআইপিআরআই বলছে, অনুমানিক তিন শতাধিক নতুন ক্ষেপণাস্ত্র গুদামসহ অস্ত্র বৃদ্ধির মাঝামাঝি পর্যায়ে আছে চীন।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্রের সংখ্যা ১৩ হাজার ৮০টি থেকে কমে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ১২ হাজার ৭০৫-তে দাঁড়ায়। এর মধ্যে আনুমানিক ৩ হাজার ৭৩২টি যুদ্ধাস্ত্র ক্ষেপণাস্ত্র ও এয়ারক্রাফটগুলোতে মোতায়েন করে রাখা হয়েছে এবং প্রায় ২ হাজারের মতো অস্ত্র পুরোপুরি প্রস্তুত অবস্থায় রাখা আছে, যার প্রায় সবগুলোই রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের।
এ বিষয়ে এসআইপিআরআই-এর বোর্ড চেয়ারম্যান এবং সুইডেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফান লুভেন বলেন, “এমন এক সময় বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে, যখন এই গ্রহটি এবং বিশ্ব মানবতা জরুরি সাধারণ চ্যালেঞ্জের একটি ধারার মুখোমুখি। যা শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমেই সমাধান করা যেতে পারে।” (সূত্র: রয়টার্স-আল-জাজিরা)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.