বিশ্বে দারিদ্র্য জয়ের আদর্শ বাংলাদেশ

বিটিসি নিউজ ডেস্ক: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বে দারিদ্র্য জয়ের এক আদর্শ বাংলাদেশ। বিশ্ববাসী আজ বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করে।’
আজ বৃহস্পতিবার ( ২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় বঙ্গভবন থেকে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘শেখ মুজিব একটি দেশ, বাঙালী জাতির স্রষ্টা। তার জন্ম হয়েছিলো বলেই আমরা আজ স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছে বলেই আমরা একটি স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি। শেখ মুজিব শুধু একটি নাম নয় একটি দেশও। তিনি স্বপ্ন দেখতেন এ দেশের মানুষের দুঃখ দূর করতে। তিনি জানতেন কিভাবে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে হয়।’
এ সময় বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যকে কোড করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য রাজনীতি করি না, আমি রাজনীতি করেছিলাম সাড়ে সাত কোটি বাঙালীর মুক্তির জন্য। এখন আমার রাজনীতির মুক্তি হয়েছে, আমার অর্থনীতির মুক্তি প্রয়োজন। এটা না হলে স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে। যদি বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়, যদি সুখে বাস না করে, বাংলার মানুষ যদি অত্যাচার থেকে বাঁচতে না পারে। এই স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী দেশগুলোকেই নয়, অনেক দেশকেই ছাড়িয়ে গেছে। এই উন্নয়নকে নস্যাৎ করতে অনেকেই ওৎ পেতে বসে আছে। তাই সবাইকে সচেতন হয়ে দেশ গঠনে মনোনিবেশ করতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এসময় শেখ হাসিনা বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের প্রত্যাশা বেশি না হলেও কিছুটা পূরণ করতে পেরেছি।
বঙ্গভবন থেকে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ২০০৫ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে কিছু তুলনামূলক পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০০৫-৬ অর্থবছরে মাথা পিছু আয় ছিল ৫শ ৪৩ মার্কিন ডলার, বর্তমানে যা ২ হাজার ৬৪ মার্কিন ড্রলারে উন্নীত হয়েছে। ঐ সময় দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১.৫ শতাংশ, বর্তমানে দারিদ্র্যের হার কমে ২০.৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জিডিপির আকার ৪ লক্ষ ৮২ হাজার ৩শ ৩৩ কোটি টাকা থেকে ২৮ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
প্রধানমন্ত্রী আরো জানান, ২০০৫-৬ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ০.৭৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ড্রলার, যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ড্রলারে। ঐ সময় বাজেটের আকার ছিল ৪১ হাজার কোটি টাকা, বর্তমান অর্থ বছরে বাজেটের আকার ৫ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা। মানুষের গড় আয়ু ছিল ৫৯ বছর যা এখন ৭২.৬ বছরে দাঁড়িয়েছে। শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ৮৪ থেকে ২৮ এবং মাতৃ মৃত্যুহার ৩৭০ থেকে ১৬৫ জনে নেমে এসেছে।
২০০৫-৬ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ ছিল ২৭৩ কোটি টাকা, চলতি বছরে বরাদ্দ ৯৫ হাজার ৫শ ৭৪ কোটি টাকা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.