বিভিন্ন স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের উদ্বৃত্ত ২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশী যাচ্ছে সরকারী কোষাগারে

ঢাকা প্রতিনিধি: বাংলাদেশের বিভিন্ন স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিচালন ব্যয় বহির্ভূত গচ্ছিত টাকা এখন থেকে সরকারী কোষাগারে জমা রাখতে হবে। বর্তমানে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের গচ্ছিত টাকার পরিমাণ প্রায় ২ লক্ষ ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

এসব টাকা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত স্থায়ী আমানত হিসেবে নিজেদের অনুকূলে বিভিন্ন ব্যাংকে জমা রেখে থাকে।

স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফিন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাসমূহের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারী কোষাগারে জমা প্রদান খসড়া আইন, ২০১৯’ গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি আইনে পরিণত হলে ঐ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গত মে মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী অলসভাবে পড়ে থাকা এ টাকার পরিমাণ ২ লক্ষ ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির মোট বরাদ্দ থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বেশী। চলতি বছরের উন্নয়ন বরাদ্দ ২ লক্ষ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা।

স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শীর্ষ ২৫টি প্রতিষ্ঠানের কাছে জমা আছে ১ লক্ষ ২ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি টাকা রয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের কাছে ২১ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। পেট্রোবাংলার কাছে রয়েছে ১৮ হাজার ২০৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের কাছে আছে ১৩ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অলস অর্থ ৯ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাছে অলস অর্থ পড়ে আছে ৯ হাজার ৫০ কোটি টাকা। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অলস অর্থের পরিমাণ ৪ হাজার ৩০ কোটি টাকা। বিসিআইসির কাছে আছে ৩ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। সার, কেমিক্যাল ও ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজের আছে ৩ হাজার ৪২ কোটি টাকা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অব্যবহূত অর্থের পরিমাণ ২ হাজার ২৩২ কোটি টাকা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এক ব্রিফিংয়ে বলেন, রাষ্ট্রের স্বশাসিত সংস্থাগুলোর আর্থিক স্থিতির পরিমাণ বর্তমানে ২ লক্ষ ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এই টাকা বিভিন্ন ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট হিসাবে আছে। এই টাকা কোনো ভালো কাজে ইনভেস্ট হচ্ছে না। এজন্য সরকারের পলিসি হলো, নতুন আইনের মাধ্যমে কিছু প্রভিশন রেখে বাকি টাকাটা সরকারী কোষাগারে নিয়ে আসা। আমাদের অনেক প্রজেক্ট আছে, জনকল্যাণমূলক কাজ, যেগুলো আর্থিক সংকটের কারণে ফাইন্যান্স করা যায় না, তাতে বিনিয়োগ করা যাবে। প্রতিষ্ঠানগুলো আপত্কালীন ব্যয় নির্বাহের জন্য পরিচালন ব্যয় ছাড়াও ২৫ শতাংশ অর্থ সংরক্ষণ করতে পারবে। ওই সংস্থার কর্মীদের পেনশন বা প্রভিডেন্ড ফান্ডের অর্থও তারা সংরক্ষণ করবে। এরপর যে অর্থ বাকি থাকবে, সেটা সরকারের কোষাগারে জমা দেবে। তিনি বলেন, পরিচালন ব্যয় হিসেবে কোন সংস্থা কত টাকা রাখবে, তা তারা নিজেরাই নির্ধারণ করবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এখানে বোর্ডগুলো আছে। যেমন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বোর্ড, ঢাকা। তাদের অনেক আইডল মানি আছে। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড রয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মো: ফারুক আহম্মেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.