বিভিন্ন জেলায় নির্বাচনী অফিসে বিস্ফোরণ, হামলা, ভাংচুর

বিটিসি নিউজ ডেস্কহবিগঞ্জে আ.লীগ অফিস ভাংচুর: হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

শায়েস্তাগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ছালেক মিয়া বিটিসি নিউজকে জানান, সন্ধ্যার পর তিনিসহ তার লোকজন দলীয় নির্বাচনী কার্যালয়ে আলোচনা করার সময় হঠাৎ করে বিএনপি জামাতের লোকজন অফিসে হামলা ও ভাংচুর চলায়। এতে তাদের ৫ জন নেতাকর্মী আহত হন।

তিনি আরও জানান, হামলাকারীরা অফিসে থাকা শতাধিক চেয়ার এবং ভাংচুর করে।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী জিকে গউছ জানান, তার নির্বাচনী গণসংযোগে হামলা ও ভাংচুর করেছে আওয়ামী লীগের লোকজন। এসময় বেশ কয়েকটি গাড়িতে হামলা ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ২০ নেতাকর্মী।

তিনি জানান, তিনি রাত ৮টার দিকে তার কর্মী সমর্থকদের গণসংযোগ করার সময় হঠাৎ আওয়ামী লীগের লোকজন লাঠিসোটা হাতে নিয়ে তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। এতে তার ৪ থেকে ৫টি গাড়ি ভাংচুর করা হয় এবং অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশকে নষ্ট করতে এবং ভোটার ও কর্মী সমর্থকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে এ ধরনের হামলা করা হয়েছে।

বিটিসি নিউজকে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুজ্জামান জানান, পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

পাবনায় আ.লীগের নির্বাচনী অফিসে ককটেল বিস্ফোরণ, ভাংচুর: পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা পৌর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিসে ভাংচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন।

গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাতে দুর্বৃত্তরা মুখোশ পরে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী অফিসে হামলা চালায়। এসময় তারা ককটেল বিস্ফোরণ এবং অফিসে ভাংচুর করে পালিয়ে যায়।

ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মাসুদ রানা বলেন, শনিবার রাতে ভাঙ্গুড়া পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নৌকার অফিসে মুখোশ পরা একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে অফিস ভাংচুর করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। ঘটনাটি নিয়ে আমরা তদন্ত করছি। সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

 

কুমিল্লায় আ.লীগ প্রার্থীর গাড়ি বহরে ককটেল হামলার অভিযোগ: কুমিল্লা-২ (তিতাস-হোমনা) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সেলিমা আহমাদ মেরী গণসংযোগে যাওয়ার সময় তার গাড়ি বহরে ককটেল হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলন মেরী এ হামলার জন্য বিএনপি দলীয় প্রার্থী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে দায়ী করেছেন।

তিতাস প্রেসক্লাবে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে মেরী বলেন,  শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার দড়িকান্দিতে পথসভায় যাওয়ার সময় দড়িকান্দি ব্রিজের উত্তর পার্শ্বে এ ককটেল হামলা চালানো হয়।

তিনি বলেন, আমি সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী।। আমার এবং জননেত্রী শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীকের পক্ষে গণ জোয়ার দেখে ঈর্ষান্বিত হয়েই আমাকে নির্বাচনী মাঠ থেকে ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে সরিয়ে দিতে ও হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে আমার প্রতিপক্ষ দল এই ঘটনা ঘটিয়েছে।  আজকের ঘটনায় প্রমাণিত হলো আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বোমাবাজ, আগুন সন্ত্রাসীর রাজনীতি চর্চা করেন।

তিনি আরও বলেন, আমার নির্বাচনী প্রচারণার পূর্বনির্ধারিত গণসংযোগ কর্মসূচীর জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের দড়িকান্দি পথসভাস্থল থেকে মাত্র ৫০ মিটার উত্তরে আমার গাড়ি বহরের পেছন থেকে অতিক্রম করে এসে ৩টি মোটরসাইকেল ও একটি সাদা রঙের প্রাইভেটকার থেকে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তারা চলে যায়।

নিজের জনপ্রিয়তার বিষয়ে মেরীর বলেন, যত হামলা ও পরিকল্পনাই করা হোক না কেন এই বিজয়ের মাসে ৩০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত ইনশাআল্লাহ।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন তিতাস উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী, সাধারণ সম্পাদক মহসীন ভূঁইয়া, সহসভাপতি মুন্সি মজিবুর রহমান, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মো. নাছির উদ্দিন, কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সারওয়ার হোসেন বাবু ও তিতাস উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাইফুল আলম মুরাদসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

এদিকে মেরীর গাড়ি বহরে ককটেল হামলার বিষয়ে তিতাস উপজেলা বিএনপির সভাপতি সালাহ উদ্দিন সরকার বলেন, গত রাতে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে এবং অন্যান্য নেতাকর্মীরা পুলিশি হয়রানির শিকার হয়ে  এখন এলাকা ছাড়া। এই অবস্থায় কে বা কারা আওয়ামী লীগ প্রার্থীর গাড়ি বহরে এই হামলা করেছে তা আমার জানা নেই।

তবে আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই ও প্রকৃত তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাই এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমাদের পূর্ব নির্ধারিত নির্বাচনী কর্মসূচী স্থগিত রেখেছি।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.