বিদ্যুতের অবৈধ মিটার রেন্ট ও ডিম্যান্ড চার্জ প্রত্যাহারের দাবি, বিদ্যুৎ উপদেষ্টার নিকট স্মারকলিপি

খুলনা ব্যুরো: খুলনা নাগরিক সমাজ বিদ্যুতের অবৈধ মিটার রেন্ট ও ডিম্যান্ড চার্জ প্রত্যাহারের দাবিতে একটি স্মারকলিপি পেশ করেছে। এ স্মারকলিপি শনিবার (৩১ আগস্ট) খুলনার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের কাছে প্রদান করে। স্মারকলিপিতে বিদ্যুতের অবৈধ মিটার রেন্ট এবং ডিম্যান্ড চার্জ বাতিল করার দাবি জানানো হয়েছে।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৪ সালে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করে ওজোপাডিকো। যার অধীন খুলনায় ২০১৫ সালে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের কাজ শুরু হয়।
প্রিপেইড মিটার স্থাপন কালে ওজোপাডিকো’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, বিনামূল্যে এ মিটার স্থাপন করা হচ্ছে। এ বাবদ কোনো মূল্য নেয়া হবে না। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে আমরা লক্ষ্য করলাম যে, কিছুদিন যেতে না যেতেই সংস্থাটি মিটার প্রতি আবাসিক মিটারে মাসে ৪০ টাকা এবং বাণিজ্যিক মিটারে ২৫০ টাকা হারে ভাড়া গ্রহণ করা শুরু করলো, যা গ্রাহকদের সাথে রীতিমত মিথ্যাচার ও প্রতারণা।
খুলনা নাগরিক সমাজসহ অন্যান্যদের আন্দোলনের মুখে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক সংবাদ সম্মেলন করে অন্যান্য প্রতিশ্রুতির সাথে ঘোষণা করেছিলেন যে, মিটারের মূল্য সমন্বয় হওয়ার পর আর কোনো মিটার ভাড়া নেয়া হবে না।
এতে উল্লেখ করা হয়, মিটার স্থাপনের সময় আবাসিক মিটারের ক্রয়মূল্য ছিল ৩,২০০ টাকা এবং বাণিজ্যিক মিটারের মূল্য ছিল ১৪,০০০ টাকার মত। অথচ, গত ৮ বছর যাবত উপরিল্লিখিত হারে মিটার ভাড়া নেয়া হচ্ছে, যা ক্রয়মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি নেয়া হয়েছে।
সংস্থাটি ইতোপূর্বে খুলনায় ৬১ হাজার আবাসিক এবং ২ হাজার বাণিজ্যিক মিটার স্থাপন করেছে। এই বিশাল সংখ্যার মিটার থেকে লাগাতারভাবে অতিরিক্ত মিটার ভাড়া গ্রহণ করা হচ্ছে, যা শুধুমাত্র বাড়ির মালিকদেরই নয় সিংহভাগ ক্ষেত্রে ভাড়াটিয়াদের ঘাড়ে এসে পড়ছে। ফলশ্রুতিতে স্বল্প আয়ের মানুষকেই এর দায়ভার নিতে হচ্ছে।
অন্যদিকে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের সময় সংস্থাটি পূর্বের এনালগ মিটার খুলে নিলেও তার জামানত/মূল্য সমন্বয় করা হয়নি। পরিতাপের বিষয়, এ ব্যাপারে সংস্থাটি নির্বিকার। একদিকে গ্রাহক ব্যবহৃত বিদ্যুতের উপর ভ্যাট প্রদান করছে, যা সংবিধিবদ্ধ। অন্যদিকে বিদ্যুতের চার্জ বাবদ মোট চার্জ হিসেবে অর্থ নেয়ার পরও ডিম্যান্ড চার্জের নামে একটি বিশাল অংকের টাকা গ্রহণ করছে সংস্থাটি। যে বিষয়টি আমাদের নিকট বোধগম্য বা গ্রহণযোগ্য নয়।
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মোট চার্জ ২৫.১১%, ডিম্যান্ড চার্জ ১৬.৮%, ভ্যাট ৪.৭৬%; অর্থাৎ প্রতি ১০০ টাকায় গ্রাহকের খরচ হচ্ছে ৪৬.৬৭ টাকা। এর উপর বাড়তি মিটার ভাড়া। একদিকে ভ্যাট, যেটি প্রনিধানযোগ্য।
অন্যদিকে মোট চার্জ, মিটার ভাড়া, আবার ডিম্যান্ড চার্জ। বিষয়টি আমাদেরকে হতবাক করে। এতে সংস্থাটি কর্তৃক মিটার ভাড়া এবং ডিম্যান্ড চার্জ প্রত্যাহার, প্রিপেইড মিটার স্থাপনের সময় খুলে নেয়া এনালগ মিটারের জামানত/মূল্য ফেরৎ/সমন্বয় করার বিষয়ে উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
এসময়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. আ ফ ম মহসীন, সদস্য সচিব অ্যাড. মোহাম্মদ বাবুল হাওলাদার, গণসংহতি আন্দোলনের খুলনা জেলা আহ্বায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, সমাজকর্মী শাহ্ মোঃ লায়েক উল্লাহ, খ ম শাহীন হোসেন, সাংবাদিক মোঃ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.