বিদেশী বিনিয়োগে প্রচুর কর্মসংস্থান হবে, নবান্নে বললেন মুখ্যমন্ত্রী

কলকাতা প্রতিনিধি: আজ নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বানতলায় চর্মশিল্পে কমপক্ষে পাঁচ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। জার্মানের বিনিয়োগের মেদিনীপুরে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প হচ্ছে। তাতেও প্রচুর মানুষ কাজের সুযোগ পাবেন। দিঘাতেও নতুন শিল্পে কাজ পাবেন বহু বেকার যুবক-যুবতী।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে পশ্চিমবঙ্গ প্রথম। আমাদের এখানে জঙ্গল, সমুদ্র, পাহাড় সবই রয়েছে। সেক্ষেত্রে পর্যটন ব্যবসারও উন্নতি করা সম্ভব।” এর আগেও দিঘায় কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা জিও লগ্নি করছে বলেও জানিয়ে ছিলেন তিনি।
এবারও সেকথা উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এমএসএমই এবং স্কিল ইন্ডাস্ট্রিতে রাজ্য এক নম্বরে রয়েছে এবং ভবিষ্যতে রাজ্য ভারতবর্ষকে পথ দেখাবে এই শিল্পে।
পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘার কাছে ২০০ মেগাওয়াট একটি সোলার পাওয়ার প্রজেক্টের  সূচনা হল। ১২০০ কোটি টাকা র এই প্রজেক্টে প্রায় ১০০০ কোটি টাকা জার্মানি সংস্থাকে দিচ্ছে এফ ডব্লিউ। বাকিটা দেবে রাজ্য সরকার।
এছাড়াও রাজ্যের বর্তমান প্রকল্পগুলির কথাও আবার তুলে ধরেন তিনি। সবুজসাথী প্রকল্প, সবুজশ্রী প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন তিনি। এছাড়াও পরিবেশ রক্ষার কথা মাথায় রেখেও রাজ্য সরকার পরিবেশবান্ধব নানা প্রকল্পের কথা ভাবছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফরের ফল পেল রাজ্য। বিদেশে লেদার এক্সপোর্ট কীভাবে করা যায়, তার কোয়ালিটি কী করে বজায় রাখা যায়, তা নিয়ে একটি প্রজেক্টের উদ্বোধন হল বানতলা লেদার কমপ্লেক্স-এ।
এই প্রজেক্ট অনুযায়ী ৮০% কন্ট্রিবিউশন করবেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। যার মধ্যে রয়েছে ট্রেনিং এবং ট্রাকিং। এর ফলে ইউরোপে চর্ম শিল্পের এক্সপোর্ট ভালভাবে করতে পারবে রাজ্য।
ইতিমধ্যেই এই কাজের জন্য ইতালি থেকে ট্রেনিংয়ের জন্য মেশিন বসানো হয়েছে। বানতলা লেদার কমপ্লেক্সে প্রায় ৫ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।
পেন ইউরোপিয়ান প্রজেক্ট ভারতবর্ষে এই প্রথম। নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ভার্চুয়াল এই সভায় উপস্থিত ছিলেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ছিলেন অস্টিউটা জার্মানির ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর স্টিফেন গারভর এবং ইটালির ডি লুকা। করোনার এই সময় দ্রুত গতিতে কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, ‘এর থেকে অন্যদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। করোনা পরিস্থিতিতেও কাজ বন্ধ না করে তাঁরা কাজ চালিয়ে গিয়েছেন’। বাংলায় বিনিয়োগের জন্য ইউরোপীয়ন ইউনিয়নসহ ইউরোপের দেশগুলোকে আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, আমাদের সরকার আপনাদের পাশে সব সময় আছে। বাংলায় শিল্পবান্ধব পরিস্থিতি রয়েছে। বাংলায় আসুন বিনিয়োগ করুন।
রাজ্যে কর্মসংস্থানের বন্দোবস্ত নেই বলে বারবার অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। একাধিকবার রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করেছেন তাঁরা। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, রাজ্যে বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ আসছে। কর্মসংস্থান হবে। এই সমস্ত কথা বলে পরোক্ষে বিরোধীদেরই জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এছাড়াও সামনেই নির্বাচন। তার আগে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে ভোটবাক্সকে আরও শক্তিশালী করার কাজ চলছে বলেও মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। যদিও বিরোধীদের দাবি, রাজ্যে শিল্প হবে না। শুধুমাত্র নির্বাচনের জন্য মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুবসমাজের ভোট পাওয়ার চেষ্টা করছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ (বাংলাদেশ) এর বিশেষ (কলকাতা) প্রতিনিধি রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.