বিকল্প গ্রিন ও টেকসই জ্বালানির খোঁজ চলছে : জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী

বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি: বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকটের মধ্যে বাংলাদেশ বিকল্প গ্রিন ও টেকসই জ্বালানির খোঁজ করছে বলে জানিয়েছেন সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) ট্রাস্টি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সিআরআইয়ের আয়োজনে ‘লেটস টক অন গ্রিন ট্রানজিশন’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলে তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে শুধু নবায়নযোগ্য জ্বালানি নয়, আমরা গ্রিন ও টেকসই জ্বালানির জন্য ভবিষ্যৎ প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের ভবিষ্যৎ জ্বালানি চাহিদা কেমন হবে, কীভাবে আমরা সেই চাহিদা মেটাব, তা বোঝার চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে আমাদের সহায়তা করছে জাপান। সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে সোলার প্যানেল ব্যবহারে সচেতনতা তৈরি করছে।’
যে কোনো প্রতিষ্ঠান বা বাসা-বাড়ি তাদের সোলার প্যানেল ব্যবহার করে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত করলে মোট বিদ্যুৎ খরচ ২০ শতাংশ হ্রাস করতে পারে। এমন প্রসঙ্গে নসরুল হামিদ বলেন, ‘আপনি যে সোলার প্যানেল ব্যবহার করবেন আপনার ভবনে, সেখান থেকে যেই বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হবে, তা আমাদের দিয়ে দেবেন। সেটি যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে। আর আপনার মোট বিদ্যুৎ ব্যবহার থেকে সেই পরিমাণ বিদ্যুতের বিল মাইনাস করা হবে। এতে ২০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ বিল বাঁচানো সম্ভব। দেশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে যেই সোলার প্যানেলগুলো স্থাপিত হয়েছে তার ৫০ শতাংশ খরচ সরকার প্রদান করেছে। বাকি ৫০ শতাংশ আবার ব্যক্তিগত লোন হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রদান করছে। অর্থাৎ, সোলার প্যানেল অতি স্বল্প খরচে ব্যবহার করা সম্ভব।’
নসরুল হামিদ বলেন, ‘আসলে আগে যেই নতুন প্রযুক্তি আসতে কয়েক দশক লেগে যেত, এখন কয়েক মাসের মধ্যে নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে। আর এ কারণেই আমরাও তা ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট, এরপর হাইড্রোজেন প্লান্ট- সামনে হয়ত নতুন আরও কিছু আসবে। সেটি ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা।’
বাতাসের এনার্জি ব্যবহার করে, বায়ো গ্যাস এবং আরও বিকল্প উৎস সন্ধানে জ্বালানি মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
‘এরই মধ্যে ই-ভিয়েকেলের জন্য চার্জিং স্টেশন স্থাপনের কাজ করছে সরকার’ উল্লেখ করে নসরুল হামিদ বলেন, ‘এটি দুর্দান্ত একটি বিষয় হবে। আপনি যেই পথ পাড়ি দিতে ৮০ টাকা খরচ করতেন, সেই পথ পাড়ি দিতে ১০ টাকা খরচ হবে।’ ই-ভিয়েকেল নিয়ে সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয় নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করছে বলে জানান তিনি।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে সবচাইতে গুরুত্ব দেওয়া উচিত পাবলিক পরিবহনগুলোকে। বিশেষত বাস, ট্রেন এবং কারগুলো যেন ইলেক্ট্রনিক হয়।’
নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমাদের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের বেজ এমাউন্ট যেন গ্রিন নির্ভর হয় সেই চেষ্টা করছি আমরা। অর্থাৎ, বর্তমানে আমাদের বেজ ১২ হাজার মেগাওয় ধীরে ধীরে এটি আরও বাড়ানো হবে।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন—জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পেট্রোলিয়াম ও খনিজসম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. ম. তামিম,  বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান, ইয়ুথ এনভারমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভলোপমেন্ট সোসাইটি ( ওয়াইইএসডিএ)-এর প্রেসিডেন্ট রেবেকা সুলতানা এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (আইইউবি) উপাচার্য অধ্যাপক তানভীর হাসান।
তরুণরা যাতে দেশের নীতি নির্ধারকদের সাথে খোলামেলা ভাবে আলোচনা করতে পারেন এবং নিজেদের ভাবনা ও সমস্যাগুলোর কথা নীতি নির্ধারকদের কাছে পৌঁছাতে পারেন সে জন্য সিআরআই ২০১৪ সাল থেকে নিয়মিত আয়োজন করে আসছে ‘লেটস টক’।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদকে নিয়ে এর আগে বেশ কয়েকবার লেটস টক আয়োজন করা হয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আয়োজন করা হল ‘লেটস টক উইথ শেখ হাসিনা’।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি মো: ফারুক আহম্মেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.