বিএনপি বিদ্যুতের বদলে দিয়েছিল খাম্বা : তথ্যমন্ত্রী

বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি আমলে কানসাটে বিদ্যুতের দাবিতে যখন আন্দোলন হয়েছে, বিএনপি তখন মানুষের ওপর গুলি চালিয়েছে, মানুষ হত্যা করেছে। বিদ্যুৎ দেবে বলে তারা শুধু খাম্বা বসিয়েছে। সুতরাং, বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলার কোনও নৈতিক অধিকার তাদের নেই।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে টঙ্গীতে ৮০ মেগাওয়াটের একটি মাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেছিল, যা মাত্র দুই দিন চলেছিল। অর্থাৎ দুই দিন চলার পরই সেটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির কারণে বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ বিএনপি আমলে এই খাতে অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল। এসব কারণে আমি বিএনপিকে বলবো— এ নিয়ে কথা না বলে বরং আয়নায় নিজেদের চেহারাটা দেখতে এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করার পথ পরিহার করতে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের আগে দেশের মাত্র ৪০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় ছিল। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে সেটি আরও  কমেছিল, কিন্তু আজ দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে এবং প্রত্যন্ত গ্রামের ঘরে ঘরে আমাদের সরকার বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দিয়েছে। গ্রামের মানুষ এখন বাড়িতে এয়ারকন্ডিশন ব্যবহার করে, ফ্রিজ-টেলিভিশন তো আছেই। ১৫ কোটি মানুষের মোবাইল ফোন, বৈদ্যুতিক গাড়ি, থ্রি হুইলারগুলো বৈদ্যুতিক চার্জে চলে। সেখানেও অন্তত শত শত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হয়।’
বৈশ্বিক অবস্থা তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সাম্প্রতিক বিশ্বে জ্বালানি সংকটের কারণে জার্মানিতে পানি গরম করার বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইউরোপের অনেক দেশেই এ রকম করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়াতে রেশনিং করে বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে মানুষকে এসএমএস করে জানানো হয়েছে— সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য। এই সংকট সমগ্র পৃথিবীতে এবং বাংলাদেশ তো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। সে কারণে আমাদের দেশেও প্রধানমন্ত্রী সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। আশা করি, এই পরিস্থিতি সহসা কেটে যাবে। কিন্তু এটি নিয়ে বিএনপি যেভাবে কথা বলছে, সেই নৈতিক অধিকার তাদের নেই।’
মন্ত্রী জানান, ১৯০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই জনপদে ১০৭ বছরে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৩৩ থেকে ৩৪ শ’ মেগাওয়াট, আর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে সেই সক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটের বেশিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিএনপির সমাবেশে বাধা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশে সরকার কখনও বাধা দেয়নি। আমরা চাই, বিএনপি সমাবেশ করুক। ঢাকা শহরেও সমাবেশ হচ্ছে। বিএনপি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করুক, সভা সমাবেশ করুক, গণতন্ত্রকে সংহত করুক। বিএনপি যেহেতু অতীতে বাস, ট্রাক, লঞ্চ পুড়িয়েছে— সেজন্য পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা ধর্মঘট ডেকেছেন। খুলনা, বরিশালেও যদি ডাকে সে কারণেই ডাকবে।’
তিনি বলেন, ‘এগুলো পেশাজীবীদের, মালিকদের সংগঠন। সেখানে আওয়ামী, বিএনপি, জাতীয় পার্টি সবাই আছে। নেতারাসহ সবাই মিলে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ধর্মঘট করার। কারণ, যদি তাদের বাস-লঞ্চ আবার পুড়িয়ে দেয়।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি মো: ফারুক আহম্মেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.