গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাঁওতালদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এর আগে এক সাঁওতাল নারীকে মারধরের ঘটনায় বিএনপি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সেই ঘটনায় গ্রেপ্তারও হন তিনি।
তবে জামিনের বেরুনোর পর তার বিরুদ্ধে আবারও সাঁওতালদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠলো।
সবশেষ রোববার (১৭ আগস্ট) রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন শ্যামবালা হেমব্রম নামে ভুক্তভোগী এক সাঁওতাল।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার দুপুরে একটি বিরোধপূর্ণ জমিতে আমন ধান লাগাতে গেলে সাঁওতালদের ওপর হামলা চালান চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজন। এতে সাঁওতালদের তিনজন আহত হন।
তারা হলেন, রাজাবিরাট এলাকার শ্যামবালা হেমব্রম (৪৫), তার ছেলে বিশ্বনাথ সরেন (২৫) ও নাতি জয়ন্ত হাসদা (১৯)। তাদের মধ্যে বিশ্বনাথ সরেন মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি দুজন স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
শ্যামবালা হেমব্রম অভিযোগ করে বলেন, চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বাবা হেকিম মন্ডল ও তার ভাইয়েরা তিন একরের বেশি জমি জাল দলিল করে ভোগদখল করে আসছেন। সেই জমিতে শুক্রবার বিকেলে তারা ধান রোপণ করতে যান। রফিকুল চেয়ারম্যান, তার ভাই শফিকুল ইসলাম ও মেজবাউল ইসলাম দলবল নিয়ে ধান চাষে বাধা দেন। তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান।
সাঁওতাল নারীকে মারধরের ঘটনায় বিএনপির বহিষ্কৃত সেই নেতা গ্রেপ্তারসাঁওতাল নারীকে মারধরের ঘটনায় বিএনপির বহিষ্কৃত সেই নেতা গ্রেপ্তার সাঁওতালদের ওপর হামলার অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘এই জমি আমার বাবা হাকিম মন্ডল ৩৫ বছর আগে হোপনা হেমব্রমের কাছ থেকে কিনে নেন। সেই থেকে আমরা চাষবাদ করে আসছি। এই জমির মালিকানাসংক্রান্ত সব বৈধ কাগজপত্র আমাদের রয়েছে। উল্টো সাঁওতালরা আমাদের জমিতে ধান রোপণ করতে যান। এতে বাধা দিলে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। এতে আমার ভাই শফিকুল ইসলাম মাথায় আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।’
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘এ ঘটনায় সাঁওতালরা থানায় একটি অভিযোগপত্র দিয়েছে। আমি হাতে পেয়েছি রোববার গভীর রাতে। ঘটনাটি তদন্ত করে মামলাটি নথিভুক্ত করা হবে।’
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৩ জানুয়ারি উপজেলার বিরাট এলাকায় ফিলিমোনা হাসদা (৫৫) নামের এক সাঁওতাল নারীকে মারধর করেন চেয়ারম্যান রফিকুলের লোকজন। সেই ঘটনায় পুলিশ ওই চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন। ওই ঘটনার পর রফিকুল ইসলামকে উপজেলা বিএনপির সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.