বিএডিসি’র খনন করা খালে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার বড়াইগ্রামে ৬শ’ বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতা


নাটোর প্রতিনিধি: বড়াইগ্রামের সরিষাহাটে বিএডিসির খনন করা খালে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করছেন প্রভাবশালীরা। এতে বিলের পানি নামতে না পারায় প্রায় ছয়শ বিঘা জমিতে চলতি রবি মৌসুমে চাষাবাদ করতে পারছেন না চাষীরা। এদিকে, খালে মাছ ধরতে না দেয়ায় স্থানীয় মৎস্যজীবিরাও পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। এ অবস্থায় বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ করে খালটি খননের প্রকৃত সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, উপজেলার সরিষাহাট সিঙ্গার বিলের মাঝখান দিয়ে একটি খাল রয়েছে। পলি পড়ে খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় গত কয়েক বছর যাবৎ বিলে জলাবদ্ধতার কারণে কোন আবাদ হচ্ছিল না। তাই জলাবদ্ধতা দুর করতে কয়েক মাস আগে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) উদ্যোগে ভূ-উপরিস্থ পানির মাধ্যমে সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় খালটি পুনঃখনন করা হয়।
কিন্তু মাস খানেক আগে সরিষাহাট গ্রামের ঈমান আলী ও বাবু খালটিতে বালুর বস্তা, বাঁশের চাটাই, বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে বাঁধ দিয়ে পানি আটকে রাখে। এভাবে পানি আটকে রেখে বিল থেকে আসা দেশীয় প্রজাতির মাছ শিকার করে বিক্রি করছেন তারা। অথচ বিলের পানি নামতে না পারায় প্রায় ছয়শ’ বিঘা জমি চলতি শুষ্ক মৌসুমেও এক হাঁটু পানির নীচে। দ্রæত বাঁধটি অপসারণ করা না এসব জমিতে এ মৌসুমেও চাষাবাদ না হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন চাষীরা।
অপরদিকে, স্থানীয় মৎস্যজীবিসহ গ্রামের লোকদেরও খালে মাছ ধরতে দেয় না চক্রটি। এতে বিশেষ করে মৎস্যজীবিরা তাদের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছেন।
এ ব্যাপারে সরিষাহাট গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে বলেন, বিলে আমার পাঁচ বিঘা জমি আছে। সরকারী ভাবে খালটি খনন করায় খুব আশা করেছিলাম যে এ বছর বোধ হয় আবাদ করতে পারবো। কিন্তু কয়েকজন মানুষ খালে বাঁধ দেয়ায় জমিতে এখনও পানি জমে রয়েছে, আবাদ করি কিভাবে।
অপর কৃষক সাইদুল সরকার বিটিসি নিউজকে জানান, যদি খালে বাঁধ দিয়ে ২-৪ জন মানুষ মাছই ধরবে, তাহলে খাল খনন করে সরকারী টাকা নষ্ট করার কি দরকার ছিলো।
মৎস্যজীবি সাবের হোসেন বিটিসি নিউজকে বলেন, তারা মৎস্যজীবিও না, আবার খাল লিজও নেয়নি-অথচ দেদারছে মাছ মেরে খাচ্ছে। অথচ তাদের হুমকির কারণে আমরা খালে মাছ ধরতে না পেরে কষ্টে দিনাতিপাত করছি।
এ ব্যাপারে খালে বাঁধ দেয়া ঈমান আলীর সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার মোবাইল বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বিটিসি নিউজকে জানান, মুষ্টিমেয় কয়েকজন ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থে খালে বাঁধ দেয়ায় বিলের শত শত বিঘা জমিতে আবাদ হচ্ছে না। এটা খুবই দুঃখজনক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ মারিয়াম খাতুন জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। এ ব্যাপারে দ্রুত খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.