বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়াবেন প্রাথমিক শিক্ষকরা, আদেশ শিগগিরই

বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার অনিশ্চয়তার মধ্যে পাঠদান চালিয়ে নিতে প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘অনলাইন স্কুল’ ব্যবস্থা চালু করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। ঝরে পড়া রোধ এবং পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া গ্রাম এলাকার শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রাখতে বিকল্প আরও একটি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সার্বিক পরিকল্পনায় গ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য সাত দিনের পাঠ্য সরবরাহ করে শিক্ষাদান অব্যাহত রাখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে এবং অভিভাবকদের মাধ্যমে সাতদিনের পাঠ্য পৌঁছে দেবেন শিক্ষকরা।
যেসব এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই, সেসব এলাকার শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে শিক্ষকরা স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে পাঠদান করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণমূলক পাঠ অংকনসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পাঠ্য শেখাতে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে শেখানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সার্বিক পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আদেশ জারী করা হবে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহাম্মদ মনসুরুল আলম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ‘দেশের প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনলাইন স্কুল চালু করা হচ্ছে। অনলাইন স্কুলের মাধ্যমে প্রতিটি শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রাখা হবে। করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটির কারণে গ্রামের শিক্ষার্থীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে কারণে অনলাইন স্কুল পরিচালনার পাশাপাশি গ্রামের প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেসব শিক্ষার্থীরা অনলাইনে সুযোগ নিতে পারবে না তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থায় পাঠদান অব্যাহত রাখা হবে। দেশের পাহাড়ি এলাকাসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই, এমন এলাকার স্কুলের শিক্ষার্থীদের বিকল্প ব্যবস্থায় পাঠদানের ব্যবস্থা করা হবে। ’
বিকল্প ব্যবস্থা সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়ে আলমগীর মুহাম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘অংকনসহ কিছু পাঠ্য রয়েছে যেসব পাঠ্যে ইন্টারেকশন প্রয়োজন। সেসব পাঠ্য প্রয়োজনে শিক্ষকরা বাড়িতে গিয়ে শেখাবেন।
এছাড়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন। যদি মোবাইলে যোগাযোগ না করা যায়, সে ক্ষেত্রে শিক্ষক স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অভিভাবকের মাধ্যমে বা শিক্ষার্থীকে সরাসরি সাত দিনের পাঠ্য সরবরাহ করবেন বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে। ’
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহাম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি করে ল্যাপটপ দেওয়া আছে। আমরা এ বছর আরও একটি ল্যাপটপ দেবো। একইসঙ্গে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর দেওয়া হবে। আগামী জুলাই থেকে ফার্নিচারও পৌঁছাবে, টেন্ডার হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে ওয়ার্ক অর্ডারও হয়েছে।’
মহাপরিচালক জানান, এক সপ্তাহের মধ্যে বিকল্প পদ্ধতিতে পড়ানোর প্রস্তুতি সংক্রান্ত সার্বিক পরিকল্পনা আগামী শনিবারের বৈঠকে চূড়ান্ত করে নির্দেশনা জারী করা হবে।
উল্লেখ্য, গত বছর ৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। দফায় দফায় তা বাড়িয়ে আগামী ২২ মে পর্যন্ত প্রাথমিক মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা হয়।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি মো: ফারুক আহম্মেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.