বানৌজা তিতুমীরকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান

খুলনা ব্যুরো:  অপারেশনাল ও লজিষ্টিক্স কাজে অনন্য সহায়তা প্রদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি বানৌজা তিতুমীরকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) প্রদান করা হয়েছে।

আজ বুধবার বেলা ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বানৌজা তিতুমীরকে এই সম্মাননা প্রদান করেন করেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ।

ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং ভূ- রাজনৈতিক বিবেচনায় একটি আধুনিক নৌবাহিনী গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধুর স্বপন বাস্তবায়নে বন্ধ পরিকর। নৌবাহিনীকে আধুনিক, ত্রিমাত্রিক ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বর্তমান সরকার বিভিন্ন বাস্তবমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। দেশের অপার সমুদ্র সম্পদ আর সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব পালনে ফোর্সেস গোল- ২০৩০ এর আলোকে নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে আধুনিক সারফেস ফ্রিট, সাবমেরিন, নেভাল এভিয়েশন ও নৌ কমান্ডো সোয়াডস।

একইসাথে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভিশন- ২০৪১ এর প্রণয়ন কাজ এগিয়ে চলছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, ভারত ও মায়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ভূ- খন্ডের প্রায় সমপরিমাণ সমুদ্রসীমা আমরা অর্জন করেছি। আমাদের এই বিশাল সমুদ্র এলাকা প্রাকৃতিক সম্পদ এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনায় ভরপুর। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ব্লু- ইকোনমির বিভিন্ন সম্ভাবনা বাস্তবায়নে দেশের এই প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ এবং এর সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে সব ধরণের উদ্যোগ গ্রহন করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বহিঃবিশ্বেরর সাথে দেশের মোট বাণিজ্যের ৯০ ভাগেরও বেশি সমুদ্রপথেই পরিচালিত হয়ে থাকে এবং দেশের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই সমুদ্রের উপর নির্ভরশীল। তাই সমুদ্র সীমানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত প্রয়োজন। আর আমাদের নৌসদস্যরা বিভিন্ন প্রতিকূলতা মোকারেলা করে সার্বক্ষণিক এই সমুদ্র এলাকার নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করে চলেছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ সমুদ্রে নৌবহরের প্রশিক্ষণ ও লজিস্টিকস সহায়তা প্রদান করছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান নৌঘাটি বানৌজা তিতুমীর। দীর্ঘ ৪৪ বছর যাবৎ প্রশাসনিক, লজিস্টিকস সহযোগিতাসহ নৌসদস্যদের পেশাগত দক্ষতা অর্জনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এই ঘাটি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নবীন নাবিক সৃষ্টির দক্ষ সূতিকাগার হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করেছে এই ঘাটি। এর অধীনে পরিচালিত নবীন নাবিক প্রশিক্ষণ বিদ্যালয় এবং নেভাল প্রভোস্ট এন্ড রেগুলেটিং স্কুল নাবিকদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। এর পাশাপাশি সরবরাহ শাখার কর্মকর্তা ও নাবিকদের মৌলিক প্রশিক্ষণ প্রদান করছে স্কুল অব লজিস্টিকস এন্ড ম্যানেজম্যান্ট (সোলাম)।

তাছাড়া খুলনা নৌ অঞ্চলে অবস্থিত অন্যান্য ঘাটি ও জাহাজের প্রয়োজনে সর্বদা অপারেশনাল, প্রশাসনিক এবং লজিস্টিকস সহায়তা প্রদান করছে বানৌজা তিতুমীর। এছাড়া অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, স্থানীয় সংসদ সদস্য, সেনা ও বিমান বাহিনী প্রধান, নৌ সদর দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নৌবাহিনীর সকল নৌ প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ, মুক্তিযুদ্ধের নৌ কমান্ডোসহ বিশিষ্ট ব্যক্তি, দেশী-বিদেশী কূটনীতিক ও উর্ধ্বতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.