বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করল ” টু স্টেজ গ্রাইন ড্রায়ার ” পদ্ধতি। 

হাবিপ্রবি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:  বর্ষার মৌসুমে ভুট্টা ও ধান শুকানো নিয়ে বিপাকে পরে বাংলাদেশের প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা। এই সমস্যা থেকে উত্তরণ প্রকল্পে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যারয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. মোঃ সাজ্জাদ হোসেন সরকার ও তাঁর নেতৃত্বে একদল গবেষকদল আবিষ্কার করেন ” টু স্টেজ গ্রাইন ড্রায়ার ” যন্ত্রের। এই যন্ত্রের মাধ্যমে খুব দ্রুত সময়ের মাঝে অল্প খরচে ধান কিংবা ভুট্টা শুকানো সম্ভব ।
আজ বুধবার সকাল ১১ টায় ( ১৭ জুলাই ) দিনাজপুর সদরের রানিগঞ্জ মোড়ে এলমিস রাইস মিলে এই কার্যক্রমের বাণিজ্যিকভাবে শুভ উদ্ধোধন করা হয়। তারা কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (কেজিএফ) এর অর্থায়নে প্রকল্পটির কাজ বাস্তবায়ন করেন বলে জানা যায়।
প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন সরকার এই প্রক্রিয়ার বাণিজ্যিকিকরণ নিয়ে বলেন, ” মসলা জাতীয় ফসলের ক্ষেত্রে টুকিটাকি ফাস্ট স্টেজ ড্রায়িং টেকনিক ছাড়া গ্রেইনের (ভুট্রা, ধান) জন্য আমাদের দেশে টু স্টেজ ড্রায়িং টেকনিক নিয়ে কোথাও কাজ হয়েছে বলে আমার জানা নেই।
আমরাই প্রথম এই টেকনোলজি উদ্ভাবন করেছি। এটি পরিবেশ বান্ধব, বিধায় পরিবেশে ও জীব বৈচিত্রের প্রতি এর কোন বিরুপ প্রভাব নেই।বর্তমানে এই পদ্ধতিতে প্রথম স্টেজে ভুট্রা বা ধান ফ্লুডাইজড বেড ড্রায়ার ব্যবহার করে মাত্র ৪ মিনিটে ২৮% আদ্রতা থেকে ২০% আদ্রতায় নিয়ে আসা যায় এবং দ্বিতীয় স্টেজে এলএসইউ/সান ড্রাই পদ্ধতি ব্যবহার করে মাত্র ৩-৪ ঘন্টায় ২০% থেকে ১২% এ নিয়ে আসা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পোল্ট্রি ফিড, ডেইরি ফিড ইত্যাদি ক্ষেত্রে ভূট্টার ব্যবহার দিন দিন বাড়ার কারণে ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্ষাকালে যে ভূট্টা হারভেস্ট হয় তা শুকানোর জন্য কিন্তু এর চাহিদা অনেক বেশি হবে বলে আমরা আশাবাদী। আমরা মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন অঞ্চলেও খোঁজ নিয়ে দেখেছি।
এটা ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষক দ্রুত শস্য শুকাতে পারবে এবং বেশি লাভবান হবে। আমাদের আবিষ্কৃত যন্ত্রের মাধ্যমে প্রতি কেজি ভুট্টা কিংবা ধান শুকাতে ৪০ থেকে ৬০ পয়সা খরচ হবে । আর আমাদের এই মেশিনে ড্রায়িং করলে রং ও পুষ্টি গুনাগুণ ভাল থাকবে। এতে কৃষকরাও বাজারে বেশি মূল্য পাবে।
কাজেই একটু খরচ বেশি হলেও তা পুষিয়ে যাবে। আবহাওয়া খারাপ থাকলেও এই পদ্ধতিতে ফসল শুকিয়ে ফসলের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাবে। ফলে বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রতিবছর যে পরিমাণ ফসল নষ্ট হয়, সেটি আর হবে না “।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ডা. মোঃ ফজলুল হক বিটিসি নিউজকে বলেন, ” আমি ব্যক্তিগতভাবে গর্ববোধ করছি এমন একটি পদ্ধতি আবিষ্কারের কারণে। কারণ এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশ নয় বহির বিশ্বের কৃষকরাও সুবিধা পাবে। “
উল্লেখ্য যে, এই প্রকল্পের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর হিসেবে ছিলেন প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাত হোসেন সরকার, কো-ইনভেস্টিগেটর হিসেবে প্রফেসর ড. মো. মফিজুল ইসলাম ও মো. আব্দুল মোমিন শেখ। রিসার্চ ফেলো হিসেবে ছিলেন মোঃ এজাদুল ইসলাম, আক্তারুজ্জামান ও হাসান তারেক।
আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম-২ তে এই পদ্ধতির উপরে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকমন্ডলী সহ সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত গবেষক ও রাইস মিলের কর্ণধাররা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর হাবিপ্রবি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি মোঃ মিরাজুল আল মিশকাত। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.