বাজেটে তামাক পণ্যের কর বাড়াতে অথমন্ত্রীর নিকট উত্তরাঞ্চলের আট সংসদ সদস্যের চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে কার্যকরভাবে করারোপের মাধ্যমে সকল তামাকজাত পণ্যের প্রকৃত মূল্য বৃদ্ধি ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক একটি শক্তিশালী তামাক শুল্ক-নীতি গ্রহণ এবং বাস্তবায়নে অথমন্ত্রী বরাবর চিঠি (ডিও লেটার) দিয়েছেন উত্তরাঞ্চলের আটজন সংসদ সদস্য।

ডিও লেটারে তারা আসন্ন বাজেটে উচ্চহারে তামাকের কর কেন বাড়ানো প্রয়োজন তার যুক্তি তুলে ধরে প্রতিবছর মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে শুল্কারোপের প্রস্তাব করেন যাতে তামাকপণ্য ক্রমশ জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। এছাড়া তারা অবিলম্বে একটি কার্যকর শুল্কনীতি প্রণয়ণেরও প্রস্তাব ডিও লেটডারে উল্লেখ করেন।

সকল তামাকপণ্যের কর বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়ে অর্থমন্ত্রীর নিকট ডিও লেটার প্রদান করা সংসদ সদস্যগণ হলেন- বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত, নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক মো. আব্দুল কুদ্দুস, লালমনিরহাট-১ (হাতিবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য মো. মোতাহার হোসেন, রংপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী, কুড়িগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. আছলাম হোসেন সওদাগর এবং সংরক্ষিত আসনের (৩২৩ মহিলা আসন-২৩) সংসদ সদস্য রাবেয়া আলীম।

অর্থমন্ত্রীকে দেওয়া ডিও লেটারে তারা উল্লেখ করেন, তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রায় ১ লাখ ২৬ হাজার লোকের অকাল মৃত্যু হয়। বর্তমানে ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ তামাক সেবন করেন যার মধ্যে ১৮ শতাংশ (১ কোটি ৯২ লক্ষ) ধূমপানের মাধ্যমে তামাক ব্যবহার করেন এবং ২০.৬ শতাংশ (২ কোটি ২০ লক্ষ) ধোঁয়াবিহীন তামাক (জর্দা, গুল, খৈনী, সাদাপাতা) ব্যবহার করেন। এই ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারের হার নারীদের মধ্যে অনেক বেশি। বাংলাদেশে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সের প্রায় ৭ শতাংশ কিশোর-কিশোরী তামাকপণ্য ব্যবহার করে যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

সংসদ সদস্যগণ আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে তামাকপণ্য খুবই সহজলভ্য। পৃথিবীর যেসব দেশে তামাকপণ্যের দাম অত্যন্ত সস্তা বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। এই তামাকপণ্য সহজলভ্য হওয়ায় তামাকের ব্যবহার কাক্সিক্ষত মাত্রায় কমছে এবং তামাকজনিত মৃত্যু ও ক্ষয়-ক্ষতি বেড়েই চলছে। অথচ কার্যকরভাবে করারোপের মাধ্যমে তামাকপণ্যের দাম বাড়ালে তামাকের ব্যবহার হ্রাস পায় এবং একইসাথে সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পায়।

তারা জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির উপর তামাকের নেতিবাচক প্রভাবের কথা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ‘২০৪০ সাল নাগাদ তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে আসন্ন ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন-
সিগারেটের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ৪টি মূল্যস্তর (৩৫টাকা, ৪৮ টাকা, ৭৫ টাকা এবং ১০৫টাকা) বিলুপ্ত করে ২টি মূল্যস্তর (৫০ টাকা ও ১০৫ টাকা তদুর্ধ্ব) নির্ধারণ এবং গুল জর্দার ক্ষেত্রে ট্যারিফ ভ্যালু প্রথা বাতিল করে সিগারেট ও বিড়ির ন্যায় ‘খুচরা মূল্যের’ ভিত্তিতে করারোপ করা।

\পাশাপাশি সকল তামাকপণ্যের প্যাকেট/কৌটা প্রতি সম্পূরক সুল্কের একটি অংশ সুনির্দিষ্ট আকারে আরোপ করা হোক যাতে ক্ষতিকর এসব পণ্যের প্রকৃত মূল্য বৃদ্ধি পায়।

তারা ডিও লেটারে প্রতিবছর মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে শুল্কারোপের প্রস্তাব করেন যাতে তামাকপণ্য ক্রমশ জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়।

অর্থমন্ত্রীকে দেয়া চিঠিতে তারা অবিলম্বে একটি কার্যকর শুল্কনীতি প্রণয়ণেরও প্রস্তাব করেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি আমজাদ হোসেন শিমুল। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.