বাঘার চাঞ্চল্যকর মোবাইল সেলস্ ম্যান জহুরুল হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামীর স্বীকারোক্তি

রাজশাহী জেলা পুলিশ: গত ১৫-০১-২০২১ খ্রিঃ রাতে বাঘা থানার একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে বাঘার মোবাইল ব্যবসায়ী মৃত জহুরুল ইসলাম (২৩) পিতা-মোঃ রফিকুল ইসলাম, সাং-মনিগ্রাম (বাজার) থানা-বাঘা, জেলা-রাজশাহীকে হত্যার আসামিদের গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন: ১নং মোঃ মাসুদ রানা (২৬), পিতা-মোঃ আকমল হোসেন, সাং-বালিতিতা ইসলামপুর, ২নং মোঃ আমিনুল ইসলাম শাওন (৩০), পিতা-মৃত সানাউল্লাহ, সাং-কাজিপাড়া, উভয় থানা-লালপুর, জেলা-নাটোর ও ৩নং মোঃ মেহেদী হাসান রকি (২৩), পিতা-মোঃ ফারুক হোসেন, সাং-জোতকাদিরপুর, থানা-বাঘা, জেলা-রাজশাহী।
ভিকটিম জহুরুল ইসলাম বাঘা থানাধীন পানিকুমড়া বাজারে মোঃ মেহেদী হাসান মনি এর টেলিকম ও ইলেক্ট্রনিক্সের দোকানে সেলস্ ম্যান হিসেবে চাকরি করতো।
ভিকটিম জহুরুল প্রতিদিন সকাল অনুমান ০৯.০০ ঘটিকার দিকে মনি এর দোকান হতে বিভিন্ন কোম্পানীর মোবাইল ফোন নিয়ে বিভিন্ন বাজারে মোটর সাইকেল যোগে দোকানে দোকানে গিয়ে বিক্রি করে এবং টাকা পয়সাসহ ফিরে আসে। গত ০৫-০১-২০২১ খ্রিঃ জহুরুল মোবাইল বিক্রি করতে গিয়ে আর ফিরে না আসায় তার পরিবারের লোকজন মোবাইলে ভিকটিমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় এবং বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করতে থাকে।
০৬-০১-২০২১ খ্রিঃ সকাল অনুমান ০৭.০০ ঘটিকার দিকে ভিকটিমের মৃতদেহ বাঘা থানাধীন তেথুলিয়া শিকদারপাড়া (কামারপাড়া) গ্রামস্থ আলহাজ্ব মোঃ সাবাজ উদ্দিন পিতা-মৃত রমজান আলীর আম বাগানের মধ্যে পাওয়া গেলে ভিকটিম এর ভাই মোঃ রুহুল আমিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বাঘা থানার মামলা নং-০৬ তারিখ ০৬-০১-২০২১ খ্রিঃ ধারা ৩৯৪/৩০২/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করে।
রাজশাহী জেলার পুলিশ সুপার জনাব এ বি এম মাসুদ হোসেন, বিপিএম (বার) বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে এ বিষয়ে বিভিন্ন রকম দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
অতঃপর পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ মতিউর রহমান সিদ্দিকি এর দিকনির্দেশনায় চারঘাট সার্কেল এর সহকারী পুলিশ সুপার জনাব নুরে আলম একটি টিম নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে আসামি ১নং মোঃ মাসুদ রানা ও ২নং মোঃ আমিনুল ইসলাম শাওনদ্বয়কে তাদের নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন।
এরপর উক্ত আসামিদ্বয়ের দেয়া তথ্যমতে আসামি ৩নং মোঃ মেহেদী হাসান রকিকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় আসামি রকির বাড়ি থেকে বিভিন্ন কোম্পানির ২৮ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামিগণ স্বীকার করেন যে, ভিকটিম জহুরুলের নিকট থেকে আসামি মোঃ মাসুদ রানা ও মোঃ আমিনুল ইসলাম শাওনদ্বয় বাকিতে মোবাইল ফোন ক্রয় করেন। জহুরুল মোবাইলের টাকার জন্য তাদের চাপ দিলে তারা টাকা না দেওয়ার জন্য জহুরুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
অতঃপর ঘটনার তারিখ ০৫-০১-২০২১ খ্রিঃ সন্ধ্যাবেলা ভিকটিম জহুরুল আড়ানী হতে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলে আসামি ১নং মোঃ মাসুদ রানা ও ২নং মোঃ আমিনুল ইসলাম শাওনদ্বয় তাদের পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক মোবাইলের টাকা দিতে চেয়ে কৌশলে ভিকটিম জহুরুলকে ঘটনাস্থলের আম বাগানে ডেকে নেন।
ভিকটিম জহুরুল ঘটনাস্থলে আসলে আসামিদ্বয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জহুরুল ইসলামকে হত্যা করে তার নিকটে থাকা ২৫,০০০/-(পঁচিশ হাজার) টাকা ও বিভিন্ন কোম্পানির ২৮ টি মোবাইল নিয়ে যায়।
এরপর আসামিদ্বয় উক্ত ২৮ টি মোবাইল আসামি ৩নং মোঃ মেহেদী হাসান রকির নিকট রাখে। গ্রেফতারকৃত আসামি মোঃ মাসুদ রানা ও মোঃ আমিনুল ইসলাম শাওনদ্বয় বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। বর্তমানে আসামিগণ জেল হাজতে রয়েছে।
সংবাদ প্রেরক রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর) ইফতেখায়ের আলম এর পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানানো হয়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.