বাগেরহাটের চারটি আসন পুনর্বহাল দাবিতে জেলাজুড়ে চলছে সর্বাত্মক হরতাল, ২৪টি রুটের যান চলাচল বন্ধ, সাধারণ মানুষ-দিনমজুর চরম দুর্ভোগে

বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটের চারটি আসন বহালের দাবিতে সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে সর্বাত্মক হরতাল। আজকের ডাকা এ হরতাল বাগেরহাট জেলা সদরসহ ৯টি উপজেলায় সর্বাত্মক পালন করছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।
এর আগে গত কাল রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই হরতালকর্মসূচির ঘোষনা দেন সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই বাগেরহাট থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, বেনাপোল, ফরিদপুরসহ প্রায় ১৬ টি রুটের দূরপাল্লার সকল পরিবহন বন্ধ রয়েছে।
এছাড়া বাগেরহাট থেকে আন্তজেলা রুট খুলনা, মোংলা, মোরেলগঞ্জ, পিরোজপুর, কচুয়া, চিতলমারী, রূপসা ও রায়েন্দার সকল বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এমনকি জেলার ছোট বড় নদীর খেয়া ও সড়ক বিভাগের ফেরিও চলাচলও বন্ধ রয়েছে। এর ফলে মোংলা বন্দরসহ বাগেরহাট জেলা এখন পর্যন্ত সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন।
সর্বদলীয় কমিটির শীর্ষ নেতারা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোব করতে দেখা যায়। এসময় বিক্ষোবকারীরা চারটি আসন বহালের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এসময় বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কমিটির কো-কনভেনর এম এ সালাম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির মাওলানা রেজাউল করিম, জেলা সেক্রেটারি ও কমিটির সদস্য সচিব শেখ মোহাম্মদ ইউনুস আলী, বিএনপি নেতা কামরুল ইসলাম গোরা, খাদেম নেয়ামুল নাছির আলাপ, নাসির আহমেদ মালেক, শাহেদ আলী রবি, ফকির তারিকুল ইসলাম, সৈয়দ ওবায়দুল ইসলাম জুয়েল, জামায়াত নেতা মনজুরুল হক রাহাতসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
হরতালে দুর্ভেোগে রয়েছে দিনমজুর ও থেটে খাওয়া মানুষ। চরম ভোগান্তিতে পরেছে যাত্রিরা। কচুয়া থেকে আসা এক শিক্ষক জানান, আমি রূপসায় একটি স্কুলে শিক্ষকতা করি। হরতালের কারনে আমি স্কুলে যেতে পারছিনা। আশাকরি রাজনীতিবিদরা বুঝবেন জনগনের দুর্ভেোগ লাঘবের জন্য কাজ করবেন।
খুলনার কয়রা থেকে আসা জসিমউদ্দিন জানান, আমি পিরোজপুর যাবো জানিনা বাগেরহাটে হরতাল এসে দুর্ভেোগে পরেছি।
হরতালের প্রভাব পরেছে বাগেরহাট বিসিক শিল্পনগরীতেও। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক), বাগেরহাট এর উপব্যবস্থাপক মোঃ শরীফ সরদার বলেন, এখানকার উৎপাদিত পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকার কারণে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাটে চারটি আসন ছিল। ৩০ জুলাই দুপুরে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি অংশ কমিয়ে জেলায় তিনটি আসন করার প্রাথমিক প্রস্তাব দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকেই বাগেরহাট জেলাবাসী ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। একের পর এক কর্মসূচি দিতে থাকে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। চারটি আসন বহল রাখার দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন বাগেরহাটের নেতাকর্মীরা। পরে গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসনই জারি রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগেরহাট প্রতিনিধি মাসুম হাওলাদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.