বাগমারায় হাতিয়া বিলে জোরপূর্বক মাছচাষের অভিযোগ


বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারার নরদাশ ইউনিয়নের হাতিয়ার বিলে প্রভাবশালীরা জোর পূর্বক দখল নিয়ে মাছচাষকে কেন্দ্র করে প্রভাবশালীদের সাথে জমির মালিকদের চরম বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।
গত এক যুগ ধরে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী বিলে মাছচাষ প্রকল্পের নামে জোর পূর্বক মাছচাষ করে ভোগদখল নিয়েছে। এতে করে প্রভাবশালী ওই মহল সুবিধা ভোগ করলেও বিলের চারপাশের পাঁচ গ্রামের শতশত জমির মালিকরা বঞ্চিত হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার স্থানীয় চেয়ারম্যান ব্যবস্থা নিতে চাইলে প্রভাবশীলরা তা তোয়াক্কা না করে বিল দখল নিতে সন্ত্রাসী কায়দায় হাসুয়া, লাঠি, চাকু, দা নিয়ে এলাকার জোরদারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের জন্য বিলের চারি দিকে ২০/২৫টি মোটর সাইকেল নিয়ে শোডাউন দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।
এদিকে এসবের প্রতিকার চেয়ে প্রায় চার শতাধিক ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা লিখিত ভাবে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের নিকট বিল রক্ষার জন্য অচিরেই প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, উপজেলার নরদাশ ইউনিয়নের হাতিয়ার বিলের চারপাশে হাট মাধনগর, বাঁইগাছা, সুজনপালশা, চন্ডিপুরসহ পাঁচটি গ্রাম। বিলের মধ্যে ওই গ্রামগুলোর জোরদারদের জমি সুজনপালশা গ্রামের মৃত মেজতুল্ল্যার ছেলে তমেজ উদ্দিন, মৃত শরিয়তুল্যার ছেলে আব্দুল মতিন, নরদাশ গ্রামের রফাতুল্ল্যার ছেলে সেকেন্দার আলী, রহিম বক্সের ছেলে রফিক উদ্দিনসহ কতিপয় প্রভাবশালী কৃষকের জমি লীজ নেয়ার নামে দীর্ঘদিন থেকে জোর পূর্বক মাছচাষ করে আসছে। এতে বিলের জমির মালিকরা ন্যায্য পাওনা চাইতে গেলে প্রভাবশালীদের পেটুয়া বাহিনীর হাতে হামলার শিকার হয়ে অনেকে পঙ্গু হয়ে পড়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার স্থানীয় চেয়ারম্যান ব্যবস্থা নিতে চাইলে প্রভাবশীলরা তা তোয়াক্কা না করে বিল দখল নিতে সন্ত্রাসী কায়দায় হাসুয়া, লাঠি, চাকু, দা নিয়ে ওই এলাকার প্রভাবশালী ও তাদের পেটুয়াবাহিনী নরদাশ গ্রামের জোনাব আলী, আব্দুল মান্নান, জাফর আলী ও সুজনপালশা গ্রামের আফজাল হোসেনসহ বেশ কিছু লাঠিয়ালবাহিনী সন্ত্রাসী কায়দায় হাসুয়া, লাঠি, চাকু, দা নিয়ে এলাকার জোরদারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন অব্যাহত রেখেছে।
এর আগে সন্ত্রাসী বাহিনীর আক্রমনের শিকার হয়েছেন নরদাশ গ্রামের মোবারক হোসেন, রফিকসহ অনেকেই। তাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তারা হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। প্রাণ ভয়ে তারা বিভিন্ন সময়ে পালিয়ে পালিয়ে থাকছে বলেও জানান অভিযোগকারীরা।
গ্রামের ভূক্তভোগীর সাবেক ইউপি সদস্য চন্ডিপুর গ্রামের সেকেন্দার আলী, সাবেক ইউপি সদস্য নরদাশ গ্রামের মুনছুর রহমানসহ কৃষক মজিবর রহমান, মোবারক হোসেন, হাটমাধনগরের দেলোয়ার হোসেন, আলামিন, সুজনপালসা গ্রামের আব্দুর রহিমসহ অন্তত চার শতাধিক কৃষক দখলকারীদের হাত থেকে বিলটি উদ্ধারের দাবী করে পুনরায় উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের নিকট বিল রক্ষার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা নতুন ভাবে জমির জোরদারদের নিয়ে বিলে মাছ চাষ করতে আগ্রহী প্রকাশ করেছেন।
নরদাশ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারোয়ার আবুল জানান, বিল দখল নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ স্থানীয় বিলের চারিপাশের জমির মালিকদের সাথে। দখলদারবাহিনী সন্ত্রাসী কায়দায় বিল দখল করে রেখেছে। ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হাজারো কৃষক।
বিরোধ নিস্পত্তি করার জন্য তিনি কয়েক দফা প্রতিপক্ষকে নোটিশ করেছেন। এতে প্রতিপক্ষ হাজির না হওয়ায় ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম আবু সুফিয়ান বিটিসি নিউজকে বলেন, বিষয়টি আগে আমার জানা ছিল না। তবে নরদাশ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারোয়ার আবুল তার ইউনিয়নের হাতিয়ার বিলের দখল নিয়ে বিরোধের ঘটনা জানিয়েছিলেন। এছাড়া ওই বিলে মাছচাষ নিয়ে অভিযোগের বিষয় আগামী ২৫ জানুয়ারী সকাল ১১টায় শুনানী অনুষ্ঠানে যথাসময়ে বিবাদীরে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.