বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ঘুর্ণিঝড় মোন্থা’র প্রভাবে অসময়ে প্রচুর বৃষ্টিতে মাঠ-ঘাটে ফসলের জমিতে পানি থৈ-থৈ করছে। বুধবার বিকাল হতে শনিবার পর্যন্ত এলাকায় দফায় দফায় হালকা বৃষ্টি হলেও শুক্রবার দিবাগত রাতে কার্তিকের মাঝামাঝিতে অপ্রত্যাশিত বৃষ্টিতে এক রাতে এলাকার কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন।
অতি বর্ষনে মাঠ-ঘাট ডুবে রবি মৌসুমের উড়তি রোপা-আমন ধান, রোপনকৃত পিঁয়াজ, সরিষা, পানবরজ, মরিজ, বেগুন, শিম সহ নানা ফসল ও পুকুর ভেসে মৎস্যচাষিরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
ক্ষতির পরিমান সইতে না পেরে উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের নুর মোহম্মাদ (৫০) নামে এক পানচাষির অকাল মৃত্যু হয়েছে। নুর মোহমামাদ নন্দনপুর বড়পুকুর এলাকার মৃত মানিকুল্লার ছেলে।
জানা যায়, কার্তিক-অগ্রায়নে রবি মওসুমে ফসল উৎপাদনের উপযুক্ত সময়। এ সময়ে জমি চাষ দিয়ে সরিষা, পেঁয়াজ, আলু বপনের উপযুক্ত সময়। কিন্তু হঠাৎ করে ঘুর্ণিঝড় মোন্থা’র প্রভাবে বৃষ্টিতে চাষকৃত জমিতে পানি বেঁধে বীজ নষ্ট হয়ে পড়েছে। এছাড়া খড়ের জন্য জমিতে ধান কেটে রাখা ধানের উপরে পানি বেঁধে খড় নষ্টের পাশাপাশি ধান নষ্ট হয়েছে।
শনিবারের রাতের পানিতেই ফসলের ক্ষতির সাথে মাঠ-ঘাট ডুবে অন্য ফসলের সাথে ভিটা জমির পানবরজ ও পুকুরের মাছ ভেসে একাকার হয়ে পানি থৈথৈ করছে। বর্ষনে ফসলের জমিতে মাজা পরিমান পানি জমে গেছে।
এছাড়া মওসুমের রোপা-আমন ধান মাঠে ডুবে পচে গেছে।
বালানগর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম, আনছার আলী ও ফসির উদ্দিন জানান, সরিষা বপনের উপযুক্ত সময় পেয়ে সরিষা ৫/৬ দিন আগে রোপণ করা হয়। কিন্ত বপনের পরের দিন হতে বৃষ্টিতে জমির বপনকৃত সরিষায পানি বেধেঁ গেছে। পানি বাধাঁর কারণে ওই জমির সরিষা নষ্ট হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তারা।
একই ভাবে গ্রামের বয়েন, হাফিজুর রহমানসহ কয়েকজন কৃষক জানান, তাদের বাড়িতে গরু পালনের কারণে খড়ের প্রয়োজন। খড় শুকানের জন্য রোপা-আমন ধান কেঠে মাঠে রেখেছেন। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি নামায় তাদের খড়সহ ধান নষ্ট হয়ে পড়েছে। এছাড়া উড়তি নমলা আমন ধান পানিতে ডুবে গেছে।
গ্রামের এনামুল হকের পানবরজ অতি বর্ষনে মাটির সাথে লুটে পড়েছে। এমই লাগানে পিঁয়েজ মাঠে মাঠে পানির নীচে রয়েছে। গণিপুর ইউনিয়নের একডালা গ্রামের আমিনুল ইসলাম, সাবল হোসেন, আব্দুল করিমসহ বেশ কয়েকজন পানচাষিদের পান বরজ ডুবে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে পান বরজে মনিবার সকালে গিয়ে মাজা পরিমান পানি জমা ও ক্ষতির পরিমান সইতে না পেরে নন্দনপুরের নুর মোহম্মাদ নামে এক কৃষকের অকাল মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এ ব্যাপারে বাগমারা উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুর রাজ্জাক বিটিসি নিউজকে বলেন, হঠাৎ করে বৃষ্টিতে বপনকৃত ফসলের ক্ষতি হবে। তিনি বলেন, অসময়ে বৃষ্টিতে শাক-সবজি, মরিজসহ বেশ কিছু ফসলচাষিরা লাভবান হবার কথা থাকলেও প্রচুর পরিমান বৃষ্টিতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগমারা প্রতিনিধি মো: আফাজ্জল হোসেন / রাজশাহী। #

















