বাগমারায় বাজারদরে আলুর খরচ উঠছে না, ঘরে পচে নষ্ট হচ্ছে কৃষকের আলু
বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় আলু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে কৃষকরা। বাজারে দাম কম, হিমাগারে স্থান সংকুলান না হওয়ায় কৃষকের বাড়িতে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উপজেলায় চলতি বছর আলুর আবাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি আলুর ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু সংরক্ষণের অভাবে বিপদে আছেন কৃষক। ভালো দাম পাচ্ছেন না।
আলু উত্তোলন করে অনেকে বাড়িতেই সংরক্ষণ করছেন। কেউ কেউ হিমাগারের পাঠানোর জন্য মাঠে রেখেছেন। কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে এর একটা অংশ পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এমন সংকটের কারণে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন কৃষকরা।
অভিযোগ উঠেছে, এমন পরিস্থিতিতে সিন্ডিকেটের কারসাজিতে তাদের লোকসান বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ন্যায্য দাম না পেলে আলুর আবাদে নিরুৎসাহিত হবেন কৃষক। এতে দেশে খাদ্য নিরাপত্তায় ঝুঁকি বাড়বে। প্রভাবশালী ও মধ্যস্বত্বভোগীরা হিমাগার অগ্রিম ভাড়া নিয়ে আলু সংরক্ষণ করায় প্রান্তিক চাষিরা বিপদে রয়েছেন। এক দিকে উৎপাদনের উপকরণ মূল্য বৃদ্ধি, শ্রমিকের মজুরি, ও হিমাগারের ভাড়া বেড়েছে। ফলে খরচ বেশি হচ্ছে, অথচ দাম কমেছে। কৃষকের এমন দুরাবস্থায় দেখার কেউ নেই।
উপজেলার অধিকাংশ কৃষক ধান-পাটের পাশাপাশি সবজি চাষ করে বাড়তি আয় করেন। উপজেলার প্রধান অর্থকারী ফসল আলু। গত বছর আলুর দাম পেয়ে এবারে বিগত দিনের তুলনায় অনেক বেশী আলুচাষ করা হয়েছে।
উপজেলার দুইটি পৌরসভাসহ ১৬টি ইউনিয়নে ১২ হাজার ৮ শত ৫০ হেক্টর জমিতে আলুচাষ করা হয়। এতে ৩ লক্ষ ৫৬ হাজার মেট্রিক টন আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। আলুর ফলন ভালো হলেও আলুর দর পড়ে যাওয়ায় আলুচাষিদের মাথায় হাত পড়েছে।
আলুর বীজ, সার ও কীটনাশকের দাম বাড়তি অপর দিকে উড়তি আলুর দাম কমায় হতভম্ব হয়ে পড়েছেন আলুচাষিরা। ১ কেজি আলু উৎপাদন করতে খরচ পড়েছে ২৫ টাকা পক্ষান্তরে ১ কেজি আলু ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে প্রতি কেজি আলুতেই ১৫ কেজি লোকশান গুণতে হচ্ছে। প্রতিবারে লোকসান কমাতে আলু হিমাগারে রাখেন তারা। কিন্তু এবার ভাড়া কেজিতে ১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা করেছে হিমাগার সমিতি।
গত বছর বস্তায় ভাড়া ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। এবার ৪০০ টাকা দিতে হচ্ছে। বাড়তি ভাড়া তাদের জন্য ‘মড়ার উপর খাড়ার ঘাঁ’।
কৃষকদের অভিযোগ, মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট যেন সস্তায় আলু কিনতে পারে, সেই লক্ষ্যেই এবারে হিমাগারগুলো সংরক্ষণ বন্ধ ঘোষণা করে। ফলে অনেকে জমি বা বাড়ির আঙিনায় বিকল্প পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করেছেন। কিন্তু প্রচুর গরম ও বৃষ্টির কারণে আলুতে পচন ধরায় কম মূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আলুর পরিমান বেশী হবার কারণে সংরক্ষণণে হিমাগারের সমস্যা। তবে অন্য সব জায়গায় আলু সংরক্ষণ শেষ। এখন কিছুটা হলেও আলুর দাম বাড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগমারা প্রতিনিধি মো: আফাজ্জল হোসেন / রাজশাহী। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.