বাগমারায় বড়বিহানালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় উপজেলার বড় বিহানালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী সাফিউল আলমের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি, নিয়োগ বানিজ্য, অর্থ আত্মসাত ও ক্ষমতার অপব্যাবহারের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রতিষ্ঠানের হলরুমে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী সহ এলাকার জনসাধারণ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী শাখিলা আকতার ও সহকারী প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বড় বিহানালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মিলন, বড় বিহানালী গার্লস হাইস্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক রবিউল ইসলাম, চয়েন উদ্দীন, আব্দুল আজিজ, আব্দুর রশিদ, বড়বিহানালী গ্রামের সোলাইমান আলী, শরিফুল ইসলাম, আতাউর রহমান, আবুল হোসেন, রফিকুল ইসলাম মন্টু, মুড়লিপাড়া গ্রামের সাজেদুর রহমান, মোজাম্মেল হক, রফিকুল ইসলাম, ফয়েজ উদ্দিন, জাহেদুর রহমান, আলাউদ্দিন, মন্দিয়াল গ্রামের আলাউদ্দিন।
সংবাদ সন্মেলনে চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মিলন বলেন, ১৯৯৫ সালে তার পিতা তৎকালীন চেয়ারম্যান মরহুম রফিকুল ইসলাম সহ বড় বিহানালী ইউনিয়নবাসী এলাকার নারী শিক্ষার প্রসারে বড় বিহানালী গার্লস হাইস্কুল স্থাপন করে। পরবর্তীতে ১৯৯৭ ইং সালে অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন কাজী সাফিউল আলম। যোগদানের পর থেকে অদ্যবধি নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি ও নিয়োগ বানিজ্যে জড়িয়ে পড়েন।
একই ভাবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক একজন সাধারণ ঘরের সন্তান। তার মাত্র ০৬ (ছয়) শতাংশ জমি ছিল। সে এখন এলাকায় ও এলাকার বাহিরে অগাধ জমি ও কোটি টাকার মালিক বুনে গেছেন। একজন শিক্ষক অল্প সময়ের মধ্যে কি করে এতো সম্পদ ও কোটি টাকার মালিক হতে পারে তা নিয়ে এলাকার জন সাধারণের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন রয়েছে তার একটি আলিশান তিনতলা ভবন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট কারো সাথে কোনো পরামর্শ ছাড়াই বিভিন্ন সময় তার পছন্দের লোক দিয়ে কমিটি গঠন করে বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছেন প্রধান শিক্ষক। প্রতিষ্ঠানে তিনি নিয়োগ প্রাপ্তির পর হতে কোন প্রকার পাঠদান করান না অথচ তিনি পাবলিক পরীক্ষার রাজশাহী বোর্ডের ইংরেজী বিষয়ের খাতা মূল্যায়ন করেন। তিনি বিগত ১০ বছর নিজের ইচ্ছে মত মিক্ষক নিয়োগ ও কমিটি গঠন করেন। এমন কি কমিটি গঠনের ০৬(ছয়) মাস পরেও আমরা শিক্ষক কর্মচারীরা কমিটির সদস্য কারা হয়েছে তা জানতে পারি না। এভাবেই তিনি একনায়ক তন্ত্র ও স্বৈরাচারী আচরণ প্রতিষ্ঠা করেছেন। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন জিনিস পত্র পৈত্রিক সম্পত্তির মতো নিজের ইচ্ছা মতো বিক্রয় ও ব্যবহার করেছেন। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে কোন প্রকার আলোচনা করেন না তিনি।
আরো বলা হয়, প্রধান শিক্ষক সাফিউল আলম বিভিন্ন সময় সভাপতি সেকেন্দার আলীর সাথে যোগসাজসে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে অধৃ কোটিরো বেশী অংকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ২০১৪ সাল হতে এ পর্যন্ত ৫টি নিয়োগ বোর্ড করে তিনি ও সভাপতি সেকেন্দার আলী বিভিন্ন পদে রোকবল নিয়োগ করেছেন। যার একটি টাকাও প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ব্যয় করা হয়নি।
প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ প্রাপ্ত অফিস সহকারী মাসুদ ও মিনহাজ নামে দুই জন কর্মরতরা জানান, ২০২১-২০২২ সালে ওই প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ নিতে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহযোগীতার নামে তাদের কাছে ১৭ লক্ষ টাকা করে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের নিকট বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে অর্থ আদায়, অনিমতান্ত্রিক রিজার্ভ ফান্ডের টাকা উত্তোলনসহ নানা অভিযোগ উত্থাপন করেন।
এ ব্যাপারে বিহানালী গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী সাফিউল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে অর্থ লেনদেনের কথা স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, আমার চাকরি আর মাত্র দুই দিন রয়েছে। আমার বিরুদ্ধে যত কুশি অভিযোগ করুক আমার করার কিছু নেই। শিক্ষক নিয়োগের টাকা সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হককে মোটা অংকের টাকা দিতে হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে ওই অর্থ প্রদান করতে হয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগমারা প্রতিনিধি মো: আফাজ্জল হোসেন / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.