বাইডেনের ওপর নাখোশ ডেমোক্র্যাটরা

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কঠিন এক সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির মোট ঋণের পরিমাণ সর্বোচ্চ সীমার খুব নিকটে পৌঁছে গেছে। এমন অবস্থায় গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ওই বৈঠকে খাদ্য সহায়তা পাওয়াদের আরও কাজ করার ওপর জোর দেওয়ার কথা বলা হয় রিপাবলকানদের থেকে। এমনটি করা হলে ঋণের সীমা বাড়ানোর চুক্তি হতে পারে বলে সাফ জানিয়ে দেন তারা। আর এতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ রিপাবলিকানদের সঙ্গে অনেকটা একমত পোষণ করেন বাইডেন। আর এতেই প্রেসিডেন্টে ওপর বেশ নাখোশ ডেমোক্র্যাটরা। বৃহস্পতিবার (১৮ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে লন্ডন ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
ঋণ সীমা ৩১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলার করতে ইচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার। তবে, ওই বৈঠকে ম্যাকার্থি ও তার স্টাফরা তাদের অমতে গেলে ঋণের সীমা বাড়ানোতে প্রতিবন্ধকতা তৈরির হুমকি দেয়।
যদি বাইডেন ও ম্যাকার্থি কোনো চুক্তিতে পৌঁছায়, যেটি আগামী রোববার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কংগ্রেসে ঋণের সীমা বাড়ানোর বিলটি পাস করতে ভোট কম পেতে পারে।
আগামী ১ জুনের মধ্যে এই বিলটি পাস করার তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। এই দিনের মধ্যে ঋণের সীমা না বড়ালে ফেডারেল সরকার তার বিলগুলো পরিশোধ করতে পারবে না বলে জানিয়েছে ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট।
রয়টার্স বলছে, ঋণের সর্বোচ্চ সীমা বাড়ানোর পথে পিছু হটতে পারে কিছু কট্টরপন্থী রিপাবলিকানরা। তবে, কিছু ডেমোক্র্যাট কয়েক মাস ধরেই ঋণের সীমা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছেন।
স্বতন্ত্র ডেমোক্র্যাট ও সিনেটর র‌্যাফেয়েল ওয়ার্নোক এবং রিপ্রেজেনটেটিভ আরও খান্না ঋণের সীমা বাড়াতে আইন পরিবর্তনে বাইডেনকে সমর্থন না করার কথা আগেই জানিয়েছিলেন।
রিপাবলিকানরা ফেডারেল সরকারের ১২০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় সাশ্রয়ের আহ্বান জানিয়েছে। এ জন্য খাদ্য সহায়তা, দরিদ্র পরিবারকে দেওয়া আর্থিক সহায়তা এবং অন্যান্য সহায়তার জন্য যোগ্যতা অর্জনের জন্য কাজের প্রয়োজনীয়তা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য বলছে। এরই মধ্যে গত বুধবার বাইডেন স্বল্প আয়ের মার্কিনিদের জন্য মেডিকেল সহায়তা প্রোগ্রামের নতুন প্রয়োজনীয়তা আরোপের বিরোধিতা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ওদিন বাইডেন বলেছিলেন, ‘ঋণের সীমা বাড়াতে বিদ্যমান আইনে কিছু পরিবর্তন করা হবে।’
তবে, বাইডেনের এই বক্তব্যে আশ্বস্ত হতে পারছে না ডেমোক্র্যাটরা। এরই মধ্যে ঋণের সীমা বাড়ানোর আলোচনা তীব্র গতিতে এগুচ্ছে।
ওয়ার্নোকের মতে, আলোচনার জন্য রিপাবলিকানরা দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এই সিনেটররের অনুমান, তাদের প্রস্তাব দরিদ্র মানুষ কোনো না কোনোভাবে নৈতিকভাবে দুর্বল করবে। ওয়ার্নোক বলেন, ‘মানুষ কাজ করতে চাই। আর কিছু মানুষ করতে চাই না।’
সিনেট এগ্রিকালচার কমিটির সদস্য ওয়ার্নোক। এই কমিটি ফার্ম বিলের অনুমোদন দিয়েছিল যেটি কিনা পরিপূরক পুষ্টি সহায়তা কর্মসূচিকে (এসএনএপি) অর্থায়ন করেছিল।
গত এপ্রিলে রিপাবলিকান হাউসে একটি বিল পাস হয়। আর এই বিল অনুযায়ী, প্রতিবন্ধী বা বয়স্ক বাদে এসএনএপির আওতায় খাদ্য সহায়তা পাওয়াদের আরও কাজ করার জন্য দাবি করে।
ডেমোক্র্যাট ও ম্যাচুচেটসের গভর্নর জিম ম্যাকগোর্ভেন বলেন, ‘আমি এমন কোনো আইনকে সমর্থন করব না, যেটি গরিবদের ক্ষতি করবে।’
রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রণাধীন হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের ওয়েস অ্যান্ড মিনস কমিটি আরও কাজ করার বিষয়টিকে কমনসেন্স বলে উল্লেখ করছে। তাদের মতে, এমনটি হলে সহায়তা পাওয়া পরিবারগুলো দারিদ্রতা থেকে বের হতে পারবে। একইসঙ্গে মার্কিন কর্মশক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করবে।
বিষয়টি নিয়ে ম্যাকার্থি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘কেন আমরা মানুষদের দারিদ্রতা থেকে বের করার পদক্ষেপ নেব না?’ #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.