বাইডেনের ইসরায়েল সমর্থনের নেপথ্যে কৌশলগত স্বার্থ ও তদবির

 

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় ইতোমধ্যে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। মানবতার এমন সংকটালগ্নে জাতিসংঘের কর্মকর্তারা যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছেন। এ অবস্থায় ইসরায়েলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ না করে দেশটির একান্ত মিত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজা অধিবাসীদের মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি না ফিলিস্তিনিরা মৃত্যুর সংখ্যার ব্যাপারে সত্য কথা বলছে। তার এ সমর্থনের নেপথ্যে নিয়ে নানা আলোচনা রয়েছে।
গত বছরের অক্টোবরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় বেসামরিক জনগণের হতাহতের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘এটা যুদ্ধ ঘোষণার মূল্য’।
গত কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান উভয় শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে একটা শক্ত বন্ধন তৈরি হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে মার্কিন প্রশাসন ইসরায়েলকে প্রায় ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা করেছে। তবে এমন গুরুতর মানবিক বিপর্যয়ের মাঝেও গাজা যুদ্ধের সময়ে জো বাইডেনের সরকার ইসরায়েলকে অস্ত্র সহায়তা বাড়িয়ে দেওয়ায় মার্কিন বৈদেশিক নীতি চরম রোষাণলে পড়েছে।
গত চার মাস ধরে চলা এ যুদ্ধে ২৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ায় জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা গণহত্যা ও দুর্ভিক্ষের সতর্কবার্তা দিয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যের হাজার হাজার জনগণ এ হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছেন, বিক্ষোভ করেছেন মার্কিন দূতাবাসগুলোর সামনে।
সম্প্রতি সিরিয়া এবং ইরাকে মার্কিন সেনারা আক্রমণের মুখে পড়েছে। এ ছাড়াও ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা গাজাবাসীদের সমর্থনে লোহিত সাগরে মার্কিন রণতরীতেও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
এমন সব পরিস্থিতির মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বর্তমান অবস্থান কী ইঙ্গিত করে? তার বর্তমান কার্যক্রম এবং ইসরায়েলের প্রতি অবিচলিত সমর্থনের বিষয়ে আলজাজিরা বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ, মানবাধিকার কর্মী এবং মার্কিন কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার নিয়েছে।
ডেমোক্রেসি ফর আরব ওয়ার্ল্ড নাউ-এর অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর রায়েদ জারার বলেন, ইসরায়েল কেন মার্কিন বৈদেশিক নীতির ব্যতিক্রম সুযোগ নিচ্ছে। এ প্রশ্নের উত্তর সংক্ষেপে দেওয়া সম্ভব না।
তিনি বলেন, ইসরাইল মূলত এমন একটা পারিপার্শিক অবস্থা তৈরি করেছে যেখানে গাজায় রক্তপাতের মাঝেও অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপ সহজেই পাশ কাটিয়ে চলতে পারছে।
গত ২৭ জানুয়ারি উত্তরপূর্ব জর্দানে তিন মার্কিন সেনাসদস্য ড্রোন হামলায় নিহত হওয়ায় এ অঞ্চলে বিস্তর ভীতি সঞ্চার হয়েছে। এ ঘটনায় বাইডেন ‘ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী’-কে দোষারোপ করে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তার প্রশাসন এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে যথাসময়ে যথাযথভাবে জবাবদিহিতার আওতায় আনবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর শিবলে তেলহানি বলেন, গাজায় ঘটমান বিষয়গুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলি সরকারকে যাচ্ছেতাই করার সুযোগ দিয়ে এত বড় পরিসরে একটা সংঘাতে জড়িয়েছে যে বিষয়টা আর মার্কিন সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.