বাংলা ভাষা এখন পিছিয়ে নেই : টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘বাংলা ভাষা পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষা। বাংলা হরফের বিস্তৃতি আরও বেশি। অসমীয়সহ বেশ কিছু ভাষায় বাংলা হরফ ব্যবহৃত হয়। অথচ এক সময় বাংলা ভাষা ছিল উপেক্ষিত। বাংলা ভাষা এখন পৃথিবীর সব ডিজিটাল যন্ত্রে লেখা যায়। বাংলা ভাষার প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জনে সরকার কাজ করছে। ডিজিটাল যুগে বাংলা ভাষা অন্য যেকোনো ভাষা থেকে পিছিয়ে  নেই।’
ঢাকায় বিশ্ব সাংস্কৃতিক বিকাশ কেন্দ্রে কবি জীবন তাপস তন্ময়-এর জন্মদিন উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে গতকাল রোববার রাতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক।
কবি অসীম সাহার সভাপতিত্বে এ সভায় সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর ও কবি জীবন তাপস তন্ময় বক্তব্য দেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘কবিতা হচ্ছে ভাষা সাহিত্যের প্রাণ, আর কবি হচ্ছেন অসুন্দরের বিরুদ্ধে সুন্দরের পূজারী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনীতির কবি বলা যায়। বঙ্গবন্ধুর শ্রেষ্ঠ মহাকাব্য বাংলাদেশ। কবি শামসুর রাহমান কিংবা হুমায়ুন আহমেদ আজ বাংলা সাহিত্যের পরিচিত নাম। অথচ এমন এক সময় ছিল শরৎ কাহিনী ছাড়া বিকল্প কিছু পড়ার ছিল না আমাদের।’
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘১৯৮৭ সালে কম্পিউটারে বাংলা ভাষা উদ্ভাবনের পর থেকে বাংলা প্রকাশনার জগতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে।  একুশের বইমেলার স্টলগুলোর বইয়ে যখন আমার হাতে তৈরি বাংলা ফন্টের লেখাগুলো দেখি, আমার গর্ব হয়, আমি নিজেকে খুবই সৌভাগ্যবান মনে করি।’
বাংলা হরফের মতো বিজ্ঞানসম্মত হরফ অন্য ভাষায় নেই উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘দেবনাগরী কিংবা হিন্দিতেও সব ভাষার সঠিক উচ্চারণ করার সুযোগ নেই। বিদ্যাসাগর বাংলাকে সমৃদ্ধ করে গেছেন।’ নতুন প্রজন্মের কবি-সাহিত্যিকেরা পৃথিবীতে বাংলা ভাষার অবস্থান আরও শক্তিশালী করবেন বলে মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বলেন, ‘কবিরাই আমাদের পথ দেখান। তাঁরাই আলোকবর্তীকা হিসেবে আবির্ভূত হয়ে থাকেন।’ এ ছাড়া কবি শ্যাম সুন্দর সিকদার কবিদের মানবতাবাদী ও আদর্শের প্রতীক হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
সভাপতির বক্তব্যে অসীম সাহা বলেন, ‘কবি-সাহিত্যিকেরা একাই এক একটা প্রতিষ্ঠান।’ আগামী দিনে তরুণ কবিরা কবিতার রাজত্বে বিচরণ করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
১৯৮৩ সালে মোস্তাফা জব্বার সম্পাদিত মাসিক নিপুণ পত্রিকায় দায়িত্ব পালনকালে একটি কভার স্টোরিকে কেন্দ্র করে নিপুণ পত্রিকার অতিরিক্ত তিনটি সংস্করণ বের করতে হয়েছিল উল্লেখ করে অসীম সাহা বলেন, ‘কাজের প্রতি একাগ্রতা থাকলে সফলতা নিশ্চিত।’ তিনি ডিজিটাল যন্ত্রে বাংলা ভাষার উদ্ভাবনকে বাংলা ভাষাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বাংলা ভাষায় বিশেষ অবদানের জন্য মোস্তাফা জব্বারের একুশে পদক প্রাপ্তির প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘যতদিন বাংলা ভাষা থাকবে, ততদিন মোস্তাফা জব্বারের নাম ম্লান হবে না।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি মোঃ লোকমান হোসেন পলা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.