বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে প্রবাসীদের : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আজ আমাদের আনন্দের দিন, প্রথমবারের মতো জাতীয়ভাবে প্রবাসী দিবস উদযাপিত হচ্ছে। অনেক চেষ্টার পর আমরা জাতীয় প্রবাসী দিবসের স্বীকৃতি পেয়েছি। এ দিবসের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যে প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের ক্রিস্টাল বলরুমে স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটি ও সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, প্রবাসী দিবসের মূল্য লক্ষ্য বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যে প্রবাসীদের আরও বেশি অন্তর্ভুক্ত করা এবং প্রবাসীদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরা ও হয়রানি বন্ধ করা। সারা বিশ্বে আমাদের ৮১টি মিশনে আজ একসঙ্গে প্রবাসী দিবস উদযাপিত হচ্ছে। আজ প্রবাসী দিবস জাতীয়করণের পেছনে স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি এম ই চৌধুরী শামীম ও প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান রূপার অবদান অনস্বীকার্য।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকাস্থ জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, বাংলাদেশের কর্মীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অবকাঠামো ও অন্যান্য খাতে সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। জাপানেও বাংলাদেশের অনেক প্রবাসী আছে। জাপান বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষ কর্মী নিতে আগ্রহী। কেননা অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের কর্মীরা দক্ষতা ও পরিশ্রমী মনোভাবের।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইমিরেটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেন, প্রবাসীরা বিদেশে থাকলেও তারা বুকে সবসময় এক টুকরো বাংলাদেশ নিয়ে ঘোরেন। প্রবাসীরা তাদের আয়ের ৭০-৮০ শতাংশ আয় পরিবারের জন্য পাঠান। তারা পরিবারকে টাকা পাঠালে পরিবারের জন্য যেন উপকার হয়, তেমনি দেশও উপকৃত হয়। প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে সরকারের আরও বেশি উদ্যোগী হওয়া উচিত।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটি এবং সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এম ই চৌধুরী শামীম বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আইবিএম করপোরেশেনের চাকরি ছেড়ে কয়েকটি উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সামনে নিয়ে আমি ও আমার স্ত্রী দিলারা আফরোজ খান রূপা ২০০৫ সালে দেশে ফিরে আসি। এর মধ্যে একটি ছিল প্রবাসী দিবস প্রতিষ্ঠা করা। আমরা ২০০৫ সাল থেকেই বেসরকারিভাবে প্রবাসী দিবসের দাবি তুলে ধরে আসছি এবং ২০১৭ সাল থেকে বেসরকারিভাবে প্রতি ৩০ ডিসেম্বর প্রবাসী দিবস পালন করে আসছি। আজ প্রবাসী দিবস জাতীয়করণ হওয়ায় আমরা আনন্দিত।
প্রবাস জীবন থেকে দেশে ফিরে এসে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প, প্রযুক্তি, আর্থিকসেবা, কৃষি ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন খাতে অবদান রাখা আটজন সেরা উদ্যোক্তাকে ‘এনআরবি ডে অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়। এনআরবি ডে বিশেষ পুরস্কার পান ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর। এ ছাড়া শিক্ষা খাতে ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক তানভীর হাসান, স্বাস্থ্য খাতে ডা. শহীদ আজীজ ও ডা. ইফতেখার মাহমুদ, প্রযুক্তি খাতে মোহাম্মদ এনায়েতুর রহমান, শিল্প ও সংস্কৃতি খাতে সিরাজুস সালেকিন ও শামস আহমেদ, কৃষি খাতে সোহেল চৌধুরী ও শিল্প খাতে মোবাইল ফিন্যান্সসিয়াল সার্ভিস ‘বিকাশ’কে পুরস্কার দেওয়া হয়। বিকাশের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন বিকাশের প্রধান এক্সটার্নাল অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মেজর জেনারেল (অব.) শেখ মো. মনিরুল ইসলাম। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে জাপানের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্ক নিয়ে প্রবীর বিকাশ সরকারের লেখা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
দেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য জাপানের তাকুশোকু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল জাপানিজ স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক পেমা গিয়ালপোকে বিশেষ সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠান পরিচালনা ও সঞ্চালনা করেন স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান রূপা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি মো. লোকমান হোসেন পলা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.