বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণে আরও কড়া পদক্ষেপ চায় ইইউ

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সাম্প্রতিককালে শরণার্থীদের ঢল ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে বিশাল মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে৷ ইউরোপের মানুষের মনে অনিশ্চয়তার সুযোগ নিয়ে ‘লাগামহীন’ অভিবাসনের জুজু দেখিয়ে মাথাচাড়া দিচ্ছে চরম দক্ষিণপন্থি শক্তি৷
মধ্যপ্রাচ্য সংকট বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলছে৷ র‌্যাডিকাল ভাবধারার বহিরাগত মানুষের কার্যকলাপ নিয়ে বিব্রত একাধিক সদস্য দেশের সরকার৷ তাই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবার আগে ইইউ কড়া পদক্ষেপ নিয়ে জনসাধারণের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছে৷ বৃহস্পতিবার মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এমনই কিছু উদ্যোগের কথা শোনা গেল৷
ইসরায়েল ও গাজার মধ্যে সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ইউরোপে শরণার্থী ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহের ওপর জোর দিচ্ছে ইইউ৷ নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে, এমন ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে চায় সদস্য দেশগুলোর সরকার৷
বিশেষ করে কট্টর ইসলামপন্থিদের কার্যকলাপ গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিবাসন সংক্রান্ত কমিশনর ইলভা ইয়োহান্সসন বলেন, ইইউ-কে সন্ত্রাসবাদীদের হুমকি থেকে নিরাপদ রাখা অবশ্য প্রয়োজনীয় কর্তব্য৷
তার মতে, যে সব মানুষ নিরাপত্তার ঝুঁকি হয়ে উঠছে, তাদের আরও অনেক দ্রুত ফেরত পাঠানো প্রয়োজন৷ হিংসাত্মক ইহুদি-বিদ্বেষ বা হিংসাত্মক ইসলাম-বিদ্বেষ দূর করাও জরুরি, বলেন ইয়োহান্সসন৷
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে তিউনিশিয়া থেকে আসা এক ব্যক্তি গুলি চালিয়ে সুইডেনের দুই ফুটবল সমর্থককে হত্যা করেছেন৷ রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নাকচ হবার পর সেই ব্যক্তি বেআইনিভাবে সে দেশে থেকে গিয়েছিলেন৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিন্ন অভিবাসন ও রাজনৈতিক আশ্রয় সংক্রান্ত নিয়মকানুন চূড়ান্ত করে অবিলম্বে কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল দার্মান্যাঁ৷
তার মতে, বহিরাগতদের ফেরত পাঠানোর প্রশ্নে কোনো রকম সারল্য দেখালে চলবে না৷ চলতি বছর এই অভিন্ন নীতি চালু হলে অপরাধের রেকর্ডধারী বিদেশিদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া অনেক সহজ হবে বলে প্রবক্তরা আশা করছেন৷
ইউরোপীয় শরণার্থী ও রাজনৈতিক আশ্রয় সংক্রান্ত নীতির পাশাপাশি শরণার্থীদের ঢল কমাতে আফ্রিকার উত্তরের দেশগুলোর সঙ্গে চুক্তির ওপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে৷
বিশেষ করে আদম ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কমাতে এমন সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ বলে ইউরোপের অনেক দেশ মনে করছে৷ তবে অভিন্ন নীতির সমালোচকদের আশঙ্কা, শেষ পর্যন্ত মানবাধিকারকে প্রাধান্য দিয়ে বেআইনি অনুপ্রবেশ কমাতে তেমন উদ্যোগ নেওয়া হবে না৷
বহিরাগত ও কট্টরপন্থিদের নিয়ে চলমান বিতর্কের জের ধরে ইউরোপের মধ্যে সীমানাহীন আদানপ্রদান ও অন্যান্য কিছু মৌলিক অধিকার সঙ্কুচিত হতে পারে বলে কিছু মহল আশঙ্কা করছে৷
নিরাপত্তার স্বার্থে ইউরোপের চিরায়ত মূল্যবোধ কতটা খর্ব করা উচিত, সে বিষয়েও বিতর্ক শোনা যাচ্ছে৷ শেঙেন এলাকার একাধিক দেশ সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ চালু করায় সেই প্রশ্ন বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.