বর্ষার আগেই বন্যায় ক্ষতির আশঙ্কা: বাগমারার ফকিরানী-বারনই নদীতে থৈই থেই পানি

বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় বর্ষা মৌসুমের আগেই ফকিরানী ও বারনই নদীতে ব্যাপক পানির চাপ দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ করে নদীর পানি ব্যাপক হারে বেড়ে কুল ভরে উঠেছে। প্রতি বছর এ সময় নদীতে তেমন পানি না থাকলেও এবারে উজানের পানি ও অসময়ে অশনি’র প্রভাবে দু’দফায় ভারি বৃষ্টিতে নদীতে পানি থৈই থৈই করছে।

এদিকে নদীর ভাটিরে বরন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বাগমারার সীমান্তবর্তী নলডাঙ্গা-পুঠিয়ার জগদীশপুর এলাকায় বারনই নদীর উপর রাবার ড্যাম এখনো নামিয়ে রাখায় পানি ওভারফ্লো অসংযম হয়ে পড়েছে। পানি বাড়তি ও রাবার ড্যাম না তুলায় উপজেলার বিভিন্ন বিলে পানি প্রবেশের আশঙ্কায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রাম পর্যায়ে পানবরজ, বেগুন, মরিজ খেতসহ বসত বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়। ক্ষতির কারণ হিসেবে উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত উজানের পানি বাহিত ফকিরানী ও বারনই নদীর নাব্যতাকে দোষছেন অভিজ্ঞমহল। এছাড়া এবারে পর পর বর্ষা মৌসুমের আগে ভারি ভর্ষন ও উজানের পানির চাপ বেশীতে এবারে বন্যার আশংকা বাড়ছে আগেই।
স্থানীয়রা জানান, নওগাঁর আত্রাই নদীর একটি শাখা মান্দার জোতবাজার হয়ে বাগমারায় প্রবেশ করেছে ফকিরানী নদী নাম ধারন করে। নদীটি বাগমারা থানা সংলগ্ন স্থানে বারনই নদীতে মিশেছে। মান্দা থেকে বাগমারা থানা পর্যন্ত নদীর দৈর্ঘ প্রায় বিশ কি:মি:। পরে বারনই নদীটির পূর্ব অংশ তাহেরপুর নলডাংগা ও নাটোরের সিংড়া হয়ে যমুনা নদীতে মিশেছে এবং পশ্চিম অংশ রাজশাহীর নওহাটা হয়ে মিশেছে পদ্মা নদীতে। নদীটির এই উভয় অংশের দৈর্ঘ প্রায় ৮০ থেকে ৯০ কি:মি:। দীর্ঘ এই নদী পথ এখন পানিতে টইটাম্বর।
উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, নদীর নব্যতা আর অসময়ে অতি বৃষ্টিতে নদী ভরে গেছে। নদীর নাব্যতা কমায় নদীর পানি বাড়ছে। তাছাড়া ভাটিতে রাবার ড্রাম না উঠানোর কারণে পানির ব্যাপক চাপে বিলে প্রবেশ করার উপক্রম হয়েছে। এতে আগাম বন্যা ও ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। রাবার ড্যামে পানি ধরে রাখছে। এসময়ে নদীতে সেচ পানির তেমন প্রয়োজন নেই বলে তিনি জানিয়েছেন। রাবার ড্যাম তুলে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এদিকে এক শ্রেণীর মুনাফা লোভিরা নদীতে পানি বন্ধ করে মাছ চাষের নামে ব্যবসা করার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নদীতে পানি বেশী রাখতে তারা বিভিন্ন মহলের কাছে তদবির করছে। পানি বন্ধ হয়ে বন্যায় এলাকাবাসির ক্ষতি হবে এমন ব্যাপারে তারা মাথায় ঘামাচ্ছেন না।
বিলের ধারে বসবাসকারী উপজেলার বালানগর গ্রামের আব্দুস সামাদ, সাবের আলী, মুকবুল হোসেন, আমীনুল হকসহ অনেকে জানান, বারনই নদীর বাগমারা থানার সন্নিকটে ও গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের রামরামা কামারখালীসহ কয়েকটি স্পটে মৎস্য অভয়ারণ্য দখল করে সাইন বোর্ড লাগিয়ে অবৈধ ভাবে বাঁশ পুঁতে গাছের ডালপালা ফেলে মাছ ধরা হচ্ছে।
একই ভাবে প্রভাবশালীরা শ্রীপুর, একডালা, মোহনগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় নদীতে বাঁশের বেড়া নির্মাণ করে পানির স্রোত বাড়িয়ে তার মুখে স্থাপন করা হয় এক ধরনের কারেন্ট জালে মাছ শিকার করছে। মাছ ধরার নিশায় তদবিরে তারা নদীর রাবার ড্যাম নামাতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা কিছু কর্মকর্তা জড়িত বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক সুফিয়ানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, নদীতে এখন রাবার ড্যামে পানি আটকিয়ে রাখার প্রয়োজন আছে কি নেই। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকের সাথে আলোচনা করে তড়িত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগমারা প্রতিনিধি মোঃ আফাজ্জল হোসেন / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.