বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকদের সোলার প্যালেনে সেচ সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে বেশীর ভাগ মানুষের প্রধান জীবিকা অর্জনের পথ হচ্ছে কৃষি।তাই বলা হয়”কৃষক”বাঁচলে বাঁচবে দেশ।সম্প্রতি সোলার প্যানেল কৃষকদের কম খরচে সেচ করতে পারছেন।

সোলার প্যানেলে জমিতে সেচ ব্যবস্থায় কমেছে খরচ। এখন সেচ দিতে বিদ্যুতের আশায় থাকতে হয়না অনেক কৃষককে। ফলে জমিতে সেচের পুরো খরচ বেঁচে যাচ্ছেন কৃষকেরা। সোলার প্যানেলের মাধ্যমে সেচ ব্যবস্থা নতুন করে আশার দেখিয়েছে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৩৮ টি সোলার পাম্প রয়েছে। প্রায় দুই হাজার কৃষক পরিবার এই সুবিধা পাচ্ছেন। এর মধ্যেমে ১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে সোলার পাম্পের সেচ সুবিধা পাচ্ছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. শামসুল হোদা।

জানা গেছে, রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের মধ্যে গোদাগাড়ীর, তানোর, মুন্ডুমালা, কাঁকন এলাকায় বেড়েছে সোলার সেচ পাম্পের ব্যবহার। এতে বিদ্যুৎ না থাকলে ও নিরবচ্ছিন্ন পানির সুবিধা পাচ্ছে এই অঞ্চলের কৃষকরা। এর ফলে একদিকে বেড়েছে সুবিধা, অন্য দিকে কমেছে খরচ। এতে বেশ খুশি এই অঞ্চলের কৃষকরা। তারা বলছেন, আমারা কখনো ভাবিনি, এমন সুবিধা পাবো।

এক সময় বিদ্যুতের আশায় জমিতে বসে থাকতে হতো। তার পরেও জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব হতো না, বিভিন্ন কারণে। দেখে গেছে, বৈদ্যুতিক সমস্যার কারণে দিনের পর দিন জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এতে অনেক কৃষকের ফসল নষ্ট হয়েছে। অনেক সময় উৎপানও কমেছে।

তানোরের এলাকার একজন কৃষক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ‘নিজের ১০ কাঠা জমি আছে। আর এলাকার ৫ থেকে ৬ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করি। তিন বছর আগেও ধান চাষে অনেক খরচ হয়েছে। কারণ সার-কিটনাশকের চেয়ে বেশি খরচ সেচে। জমিতে সেচ দিতে ঋণ করতে হতো।

তিনি আরো বলেন, জমিতে সেচ দিতে হিমশিম খেতে হতো। এখন সোলার প্যানেল হওয়ায় জমিতে সেচ দিতে তেমন টাকা লাগে না।

গোদাগাড়ী উপজেলার একজন কৃষক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, বিএমডিএ এর পাম্পের মাধ্যমে জমিতে সেচ দেওয়া হতো। বিভিন্ন সময় বিদ্যুতের অভাবে সেচ দেয়া সম্ভব হতো না। এতে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হতো। তিনি বলেন, সবকিছু ভেবে নিজ উদ্যাগে সোলার প্যানেল বসানো হলো জমিতে। এখন ইচ্ছেমত পানি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। আমার জমিতে কোন সময় পানি কমতি হয় না।

একই গ্রামের স্থানীয় চাষীরা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপ দিয়ে জমিতে সেচ দিতে কার্ডে অগ্রিম টাকা রিচার্জ করতে হয়। তাছাড়াও লোড শেডিং এর কারণে বোরো ধানের সেচ দেয়া যায়না। এতে ধানের ক্ষেতের মাটি ফেঁটে চৌচির হয়ে যায়। ডিজেল চালিত মেশিনে পানি বেশি খরচ হয়।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. শামসুল হোদা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, নদীতে ডাবল লিফটিং পদ্ধতিতে আরো পঞ্চাশটি সোলার প্যানেল বসানোর চিন্তাভাবনা রয়েছে। জেলার ৩৮ টি সোলার পাম্প প্রকল্পে ১৬০০ হেক্টর জমিতে সোলার পাম্পের সেচ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। তাতে সুবিধা ভোগ করছে দুই হাজারের বেশি কৃষি পরিবার।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.