বরিশাল-২ আসনে মনোনয়ন নিয়ে হতাশ বড় দুই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা

উজিরপুর প্রতিনিধি: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বরিশাল-২ আসনে বড় দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে একের পর এক নাটকীয়তার পরে মহাজোট থেকে জাতীয় পার্টির নেতা চিত্রনায়ক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা ও জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে মনোনয়ন চূড়ান্ত করায় হতাশ আওয়ামীলীগ ও বিএনপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। গত ২দিন ধরে মহাজোট থেকে বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান এমপি অ্যাডঃ তালুকদার মোঃ ইউনুস এর নাম চূড়ান্ত করা হলে উজিরপুর ও বানারীপাড়া নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি আনন্দ উচ্ছাস শুরু হয়েছিল।

এ উপলক্ষে গতকাল রবিবার উজিরপুরে সন্ধ্যায় একটি আনন্দ র‌্যালীর প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছিল। অপরদিকে বানারীপাড়ায় উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ একটি আনন্দ র‌্যালি বের করেন। হঠাৎ করেই সকল আনন্দ বিষাদে পরিনত হয়। এক চরম হতাশা ঘনীভূত হয় নেতাকর্মীদের মধ্যে। কেননা এই আসনটি আওয়ামীলীগের দূর্গ হিসেবে পরিচিত। এই আসনে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের নেতা শাহে আলম, শেরে বাংলার দৌহিত্র ফাইয়াজুল হক রাজু, হাবিবুর রহমান খান, দানবীর ক্যাপ্টেন এম. মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক সাংসদ মনিরুল ইসলাম মনি, খোকন সেরনিয়াবাদসহ ২১ ত্যাগী নেতাকর্মী মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু জাতীয় পার্টি এরশাদ গ্রুপের উজিরপুর বানারীপাড়ায় তেমন শক্ত কোন অবস্থান ছিল না। নেই কোন ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড কমিটি। নামমাত্র কমিটি দিয়ে চলছে তাদের কার্যক্রম।

চিত্র নায়ক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানার মহাজোট থেকে মনোনয়নের সংবাদ শুনে হতাশ হয়ে যান নেতাকর্মীরা। বেশ কিছুদিন যাবৎ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন উজিরপুর-বানারীপাড়ার দূর সময়ের সুখে-দুখে, হামলা-মামলায় নেতাকর্মীদের পাশে থেকে তাদের সাহায্য সহযোগিতার কান্ডারী কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য এস. সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু। এ ছাড়া দলীয় মনোনয়ন পত্র ক্রয় করেছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপুসহ অর্ধডজন নেতাকর্মী। হঠাৎ করে সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নাম ঘোষনা করায় হতাশ হয়ে যান উজিরপুর-বানারীপাড়ার বিএনপির মূল স্রোধারার নেতাকর্মীরা। তবে মহাজোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতারা সংবাদ মাধ্যমে জানান, এখনও বিভিন্ন আসনে রদবদল হতে পারে। এ ব্যাপারে উজিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এস.এম জামাল হোসেন জানান, জোট থেকে যাকে মনোনয়ন দিবে আমাদের তারই নির্বাচন করতে হবে।

সাধারণ সম্পাদক আঃ মজিদ সিকদার বাচ্চু জানান, আওয়ামীলীগ একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। উজিরপুর-বানারীপাড়া আওয়ামীলীগের দূর্গ। দলের মধ্য থেকে মনোনয়ন দিলে ভাল হতো। তবে জোটের স্বার্থে মহাজোটের প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে নির্বাচন করতে হবে। পৌর মেয়র গিয়াস উদ্দিন বেপারী জানান, দলের মধ্য থেকে মনোনয়ন দিলে ভাল হতো। তবে প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত জোটের প্রার্থীর পক্ষেই নির্বাচন করতে হবে। উজিরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আঃ মাজেদ তালুকদার মন্নান মাষ্টার জানান, দলীয় স্বার্থে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষেই নির্বাচন করতে হবে। পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন খান জানান, উজিরপুর-বানারীপাড়ার বিএনপির কান্ডারী নেতাকর্মীদের হামলা-মামলা ও সুখে-দুখে পাশে থেকে সহযোগিতা করেছিলেন এস. সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু। তাকে মনোনয়ন দিলে ভাল হতো। তবে জোটের স্বার্থে যাকে দিবে আমরা তার নির্বাচন করব।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর উজিরপুর প্রতিনিধি আঃ রহিম সরদার।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.