বরিশাল-২ আসনে নৌকার জোয়ারে তলিয়ে যাচ্ছে ধানের শীষ

উজিরপুর প্রতিনিধি: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে বরিশাল-২(উজিরপুর-বানারীপাড়া) সংসদীয় আসনে আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী মহাজোট সমর্থিত মোঃ শাহে আলমের নৌকা প্রতিকের প্রচার প্রচারনায় সরব হয়ে উঠেছে উজিরপুর-বানারীপাড়ার প্রতিটি পাড়া মহল্লা। এক সময়ে বিএনপি শক্ত অবস্থানে থাকলেও আ’লীগের নির্বাচনী ডামাডোলে তলিয়ে যাচ্ছে বিএনপির প্রার্থী এস সরফুদ্দিন আহম্মেদ সান্টুর ধানের শীষ প্রতিক।

এক দিকে জাতীয় পার্টির কর্মী সমর্থক ও ওয়াকার্স পার্টির কর্মী সমর্থকরা আনুষ্ঠানিকভাবে সভা ডেকে নৌকার পক্ষে সমর্থন প্রদান করেন। শুধু তাই নয় মনোনয়ন দেওয়ার পূর্বে আ’লীগের একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন পাওয়া থেকে বঞ্চিত হলেও দলের স্বার্থে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুনঃরায় বিজয়ী করতে একাট্টা হয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাড: তালুকদার মোঃ ইউনুস, শেরে বাংলার প্রৌপুত্র ফাইয়াজুল হক রাজু, কেন্দ্রীয় নেতা সুখেন্দু শেখর বৈদ্য, আ’লীগ নেত্রী রুবিনা আক্তার মীরা। গণ সংযোগে নিঘুম রাত কাটাচ্ছেন বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক, উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল,উজিরপুর-বানারীপাড়া উপজেলার আ’লীগের সভাপতি, সম্পাদক পৌর মেয়র, ভাইস চেয়ারম্যান সহ সকল নেত্রী বৃন্দ। তাদের মধ্যে কোন বিবেধ নেই, তারা নির্বাচনী মাঠে একাট্টা।

আ’লীগের নেতাকর্মীরা নারী পুরুষ গ্রুপে গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রতিটি বাড়ীতে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে পুনরায় আ’লীগ সরকারের নৌকা প্রতিকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন গাড়ীতে মাইক টানিয়ে নৌকার ক্যানভাসে মুখরিত হচ্ছে এলাকা। উপজেলার পৌর সদর, শিকারপুর ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতাকর্মী মটর শোভাযাত্রা নিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন। প্রতিটি উঠান বৈঠকে বিএনপি সহ তরুন ভোটাররা নেতাকর্মীদের হাতে ফুলের তোরা দিয়ে আওয়ামীলীগের যোগদান করে চলছেন। তবে মাঝে মধ্যে বিএনপির ধানের শীষ প্রতিক, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের পাখা প্রতিক ও সতন্ত্র প্রার্থী এ্যাড: আনিচুজ্জামানের ট্রাক প্রতিকের মাইকিং শোনা যাচ্ছে। তফসিল ঘোষনার পূর্ব থেকেই বিএনপির প্রার্থী এস সরফুদ্দিন আহম্মেদ সান্টু কিছুটা গাঁডাকা দিয়ে বিদেশে পারি জমান।

দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এলাকায় কিছুদিন গণসংযোগ করলেও মনোয়ন থেকে বঞ্চিত সৈয়দ জামাল হোসেন,এ্যাডঃ এস.এম.এ বকর, কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু সহ কোন কেন্দ্রীয় নেতাদের গনসংযোগে দেখা মিলেনি সান্টুর সাথে। রয়েছে দলীয় গ্রুপিং। একারনেই গনসংযোগ করতে গিয়ে ১৭ ডিসেম্বর উজিরপুরের ডাবেরকুলে এস.সরফুদ্দিন আহম্মেদ সান্টু সহ নেতাকর্মীরা হামলার শিকার হওয়ার পর থেকে প্রার্থী নিজ বাড়ী গুঠিয়ার চাংগুরিয়ায় অবস্থান করেন। তাদের ধারনা ছিল সেনাবাহিনী মাঠে নামার সাথে সাথে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করবেন। কিন্তু তাদের সেই আশা পূর্ন হলো না।

তিনি ২৪ ডিসেম্বর নিজেকে আর বদ্ধ রাখতে না পেরে সিংহের মত গর্জন দিয়ে নিজের ব্যবহৃত পিস্তল উচিয়ে বানারীপাড়ায় ঢুকে পড়েন। সেখানে ৪ রাউন্ড গুলি নিক্ষেপ করেন। এক পর্যায় নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয়। ২৫ ডিসেম্বর বানারীপাড়া থানায় গোলাগুলির ঘটনায় এস,সরফুদ্দিন আহম্মেদ সান্টুকে প্রধান আসামী করে মামলা দায়ের হয়। একই দিনে উজিরপুর মডেল থানায়ও তাকে প্রধান আসামী করে আ’লীগের নির্বাচনি অফিস ভাংচুর ও তথ্য প্রযুক্তিতে ২টি মামলা হয়। এছাড়া জয়শ্রী, মধ্য আটিপাড়া, গড়িয়াগাভা, ওটরা, শোলক, বামরাইল, বড়াকোঠা সহ আ’লীগের নির্বাচনী অফিস ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনায় বিএনপির কয়েকশত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হাওয়ার এক পর্যায়ে কর্মী শূন্য হয়ে পড়ে বিএনপির প্রার্র্থী এস,সরফুদ্দিন আহম্মেদ সান্টু। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিপনি বিতান ও গ্রাম গঞ্জে শুধু নৌকার জয়গান শুনছেন এলাকাবাসী।

নৌকার বিজয়ের সম্ভাবনা মনে করে এক শ্রেণির নিরদলীয় ভোটাররা একই স্রোতে গাঁ ভাসাচ্ছেন। তবে নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক ভোটাররা জানান ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে ভোটাররা যাতে নির্বিগ্নে ভোট প্রদান করতে সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন সহ প্রশাসনের উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর উজিরপুর প্রতিনিধি আঃ রহিম সরদার।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.