বরিশালে স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত নেতা লিটুকে কুপিয়ে হত্যা

বরিশাল ব্যুরো: বরিশালে পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন সিকদার লিটুকে (৪২) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাতে নগরের কাশিপুরের বিল্লবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত লিটন সিকদার বরিশাল মহানগরের ২৯ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক এবং একই এলাকার নজির সিকদারের ছেলে।
এদিকে এ হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন, নিহত লিটনের মা হালিমা বেগম (৬০), ছোট ভাই সুমন সিকদার (৩৫) ও বোন মুন্নি বেগম (৩৮)। তাদের বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত লিটনের পরিবার জানায়, লিটনের বোন মুন্নি বেগমের স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় পারিবারিক কলহ চলছিল। পারিবারিক কলহের জেরে মুন্নি বেগমের স্বামী জাকির হোসেন গাজীর দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বৃহস্পতিবার জামিন পান লিটন, তার বোন মুন্নি ও ছোট ভাই সুমন সিকদার। তারা সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে ফেরেন। খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে দেড়শ থেকে দুইশ লোক লিটনের বাড়িতে হামলা চালান। তাকে ও পরিবারের সদস্যদের মারধর ও কুপিয়ে জখম করা হয়। এ সময় বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
মুন্নি বেগম বিটিসি নিউজকে জানান, তার স্বামী জাকির হোসেন গাজী দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। এরপর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। এর জেরে মুন্নি বেগমকে মারধর করতেন জাকির গাজী। গত ২৭ জুলাই তিনি বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন।
তবে প্রতিপক্ষের একটি সূত্র জানায়, মুন্নি বেগমের ভাই লিটন সিকদার বোনের স্বামী জাকির হোসেন গাজীকে সম্প্রতি ধরে নিয়ে মারধর করে দুই দিন আটকে রেখে সাদা চেক ও স্ট্যাম্পে সই নেন। পরে জাকিরের পরিবার খবর পেয়ে বিমানবন্দর থানার পুলিশকে জানায় এবং তাকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২৭ জুলাই জাকির গাজী বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন। একই দিনে মুন্নি বেগমও তাকে নির্যাতনের অভিযোগ এনে থানায় পৃথক একটি মামলা দায়ের করেন।
জাকির গাজীর করা মামলায় লিটন সিকদার, মুন্নি বেগম ও সুমন সিকদার গ্রেপ্তার হন। ওই মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে লিটন সিকদার ও তার পরিবারের সদস্যরা গতকাল সন্ধ্যায় ওই বাড়িতে আসেন। এরপর রাতে তাদের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।
নিহত লিটন সিকদারের ভাই সুমন সিকদারের দাবি, লিটন সিকদার এলাকায় মাদকবিরোধী ভূমিকা রাখায় দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব চলছিল। কয়েকবার তিনি মাদক ব্যবসায়ীদের পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছিলেন। এ কারণে মাদক ব্যবসায়ী একটি চক্র ক্ষুব্ধ ছিল।
বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির সিকদার বিটিসি নিউজকে বলেন, হামলার সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ ছিল না। এ ঘটনায় রাতেই সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তদন্ত শেষে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো. রিয়াজ হোসেন (পিপিএম) বিটিসি নিউজকে বলেন, পারিবারিক ঘটনার সূত্র ধরে এই হত্যাকাণ্ড ও হামলার ঘটনা ঘটে। প্রধান অভিযুক্ত জাকির হোসেনসহ হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। প্রাথমিকভাবে আমরা ৫-৭ জনকে হেফাজতে নিয়েছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বরিশাল ব্যুরো প্রধান আল মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.