বন্যপ্রাণীর ব্যবসা বন্ধে সহায়তা দেবেন রাজশাহীর গণমাধ্যমকর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বন্যপ্রাণীর অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্য দমনসহ বাংলাদেশের সমৃদ্ধ বন্যপ্রাণীর অস্তিত্ব বিলীনের জন্য দায়ী সব ধরনের হুমকি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার জন্য গণমাধ্যমগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বন্যপ্রাণী ব্যবসা-বাণিজ্যের তথ্য-উপাত্ত বিস্তারিত ও সঠিকভাবে গণমাধ্যমগুলোতে তুলে ধরতে পারলে তা বন্যপ্রাণীর অবৈধ বাণিজ্যের ধরণ এবং গতিধারা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ধারণা পেতে সাহায্য করবে।
এজন্য বন্যপ্রাণীর অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্য দমনে যুক্ত হলেন রাজশাহীর গণমাধ্যমকর্মীরা।
এ সংক্রান্ত অপরাধগুলোর প্রতিবেদনের গুণগত মানোন্নয়নে এবং গণমাধ্যমকর্মীদের সঠিক ও সম্পুর্ণ প্রতিবেদন লেখার দক্ষতা বাড়াতে ডাব্লিউসিএস বাংলাদেশ ও বন অধিদপ্তর যৌথভাবে গতকাল শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক কর্মশালার আয়োজন করে।
রাজশাহী পর্যটন মোটেলে দিনব্যাপী ওই প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের ৪০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।
কর্মশালায় এ সংক্রান্ত আইন ও নীতিমালাসহ বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত সব প্রতিবেদন লেখার কলাকৌশল, শব্দচয়ন, তথ্য সংগ্রহ, বন্যপ্রাণীর পরিচয় ও ইতিহাস নিশ্চিতকরণসহ বিভিন্ন বিষযয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
কর্মশালায় বলা হয়, গণমাধ্যমকর্মীরা সচেতন হলে তাদের লেখনী শক্তির মাধ্যামে বিশ্বব্যাপী বিপদাপন্ন অনেক বন্যপ্রাণী যেমন বাঘ, বনরুই, কচ্ছপ, হাঙ্গর ও শাপলাপাতার বেশ কিছু প্রজাতিকে চিরতরে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব হবে। বিশ্বব্যাপী বিপন্ন এমন প্রজাতিসহ অসংখ্য প্রজাতির স্থলজ এবং জলজ বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল আমাদের এই বাংলাদেশ। কিন্তু স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্যের কারণে এদের একটা বড় অংশ আজ বিলুপ্তপ্রায়। দেশের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটি (ডাব্লিউসিএস) বাংলাদেশ বন্যপ্রাণীর অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর একটি ডাটাবেস সংরক্ষণ করে আসছে।
এখানে দেখা গেছে, ২০১২ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রতিবেদনকৃত ৮৯০টি বন্যপ্রাণীর ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত ঘটনার মধ্যে শতকরা প্রায় ৬৪ ভাগ ক্ষেত্রেই বন্যপ্রাণী প্রজাতি শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে প্রাণীকে ভুল নামে শনাক্ত করা হয়েছে। অনেক প্রতিবেদনেই জব্দ করা প্রাণী বা দেহাংশের পরিমাণ, গ্রেফতার অপরাধীর সংখ্যা কিংবা পরবর্তী বিচারকার্য সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।
বিস্তারিত এসব তথ্য-উপাত্ত বন্যপ্রাণী ব্যবসা-বাণিজ্যের ধরণ ও গতিধারা সম্পর্কিত ধারনার পাশাপাশি সর্বস্তরের জনগণের মাঝে বন্যপ্রাণী ব্যবসা-বাণিজ্য দমনে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন।
ইতিপূর্বে ঢাকা, খুলনা ও কক্সবাজার এলাকায় আয়োজিত কর্মশালায় দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমসমূহের ৮২ জন কর্মী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এবং বন্যপ্রাণী অবৈধ বাণিজ্য রুখতে একত্রে কাজ করার জন্য অঙ্গিকার করেছেন।
রাজশাহী জেলার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মীর শফিকুল আলম প্রধান অতিথি হিসেবে সকালে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করেন। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক মোল্যা রেজাউল করিম।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.