বন্ধ হয়নি রাজশাহী নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনালে জুয়ার রমরমা আসর!

নিজস্ব প্রতিবেদক: বন্ধ হয়নি রাজশাহী নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনালে আরিফের জুয়ার আসর। রবিবার দিনগত রাত সাড়ে ১১টায় মহানগর ডিবি পুলিশ টার্মিনালে জুয়ার আসরে হানা দেয়। ডিবি পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জুয়াড়ীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা হয় যায় নি। এমনি তথ্য একাধিক বাস শ্রমিকদের।
তবে তারা জানিয়েছেন, কৌশল পরিবর্তন করে এখনো জুয়া চলছে দিন-রাত। আগে সামনে দিয়ে জুয়াড়ীরা ঢুকতো এখন পেছন দিয়ে ঢুকে জুয়া খেলছে জুয়াড়ীরা। সামনে পেছেনে কমপক্ষে ১৫ জন ক্যাডার পাহারা রেখে চলছে এই জুয়ার আসর।
তারা আরও বলেন, জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করেই শূণ্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন আরিফ। এই লোভ কি সামাল দিতে পারে? জুয়ার আয় দিয়ে রাজকীয় চলাফেরা, ভোগ বিলাসিতা। কিন্তু তার মুখে কথা শুনলে মনে হবে, তিনি দাতা হাতেম তাই। সবাইকে দিয়ে থুয়ে খান। গরিব বেকার শ্রমিকদের দেখাশুনা করেন, সংসার খরচ দেন। শ্রমিকদের ভাষ্য অনুযায়ী বড় বড় কথা যদি বলেন, তাহলে সৎ কর্ম করেন। নিজ ব্যবসার টাকা দিয়ে মানুষের উপকতার করেন। অনেক হয়েছে শ্রমিক ধ্বংসের জুয়ার আসর। এখন শ্রমিক নেতা হয়েছেন, অপকর্ম বন্ধ করুন। একজন নেতার যেসকল ভাল গুনাবলী থাকা প্রয়োজন, তা নিজের কার্যক্রমের মাধ্যমে তুলে ধরুন।
উল্লেখ্য, নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনালে জুয়ার কারবারটি চলছে একেবারেই বাস টার্মিনালের পুলিশ বক্সের ১০/১৫ হাত দুরে। অথচ পুলিশ বক্সের ইনচার্জ এএসআই আলমগীর বলছেন, এটা শ্রমিকদের স্থান তাদের সাথে যোগাযোগ করে কথা বলেন। দীর্ঘদিন থেকে রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল বাস টার্মিনালে জুয়ার একক রাজত্ব কায়েম করছেন বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ আরিফ হোসেন। কোন ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না সেখানে চলমান জুয়ার আসর।
এ যেন এক মিনি কাসিনো। এই জুয়ার আসরের নিঃস্ব হচ্ছে শত শত বাস শ্রমিকরা। শুধু তাই নয়, এই জুয়ার কারনে বেশির ভাগ শ্রমিকের সংসারে অশান্তি যেন নিত্য দিনের ঘটনা। আর জুয়ার নেতৃত্বদাতা আরিফ হোসেন হচ্ছেন আংগুল ফুলে কলাগাছ। রাত-দিন ২৪ ঘন্টা কেচিগেট লাগিয়ে ভিতরে আলিশানভাবে চলে জুয়ার আসর। শ্রমিক-সহ নানা শ্রেণী পেশার নানা বয়সী মানুষ সেখানে জুয়া খেলে হচ্ছেন সর্বশান্ত। গুটিকয়েকবার র‌্যাব সেখানে অভিযান করে বিপুল টাকা উদ্ধার-সহ ১০-১৫ জন জুয়াড়ি আটক করেছিলো। কিন্তু পুলিশ কখনোই সেখানে অভিযান করে নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শ্রমিক বলছেন, প্রশাসনের সকলকে ম্যানেজ করে চলছে জুয়ার বোর্ড। এই জুয়ার বোর্ড কেউ বন্ধ করতে পারেনা। জুয়া বোর্ডের মাত্র ১০/১৫ হাত দুরে পুলিশ বক্স। তারপরও পুলিশ নিরব! তাহলে বুঝতেই পাচ্ছেন সমস্যাটা কোথায়। ঈদুল আজহার আর মাত্র কয়েকদিন বাঁকি। এখন প্রত্যেকটি পরিবারের জন্য রয়েছে বাড়তি খরচ। ঈদের আগে এই জুয়ার আসর বন্ধ করা না হলে, অধিকাংশ জুয়াড়ী শ্রমিকদের পরিবারে দেখা দিবে অশান্তি। তাই শ্রমিকদের পরিবারে শান্তি বজায় রাখার স্বার্থে ঈদ উৎসব শান্তিপূর্ণ ভাবে পালনের লক্ষ্যে, টার্মিনালে আরিফের জুয়ার আসর বন্ধের জোর দাবি শ্রমিকদের। এ ব্যপারে আরএমপি পুলিশের পুলিশ কমিশনার মহাদয়ের কঠোর হস্তক্ষেপ দাবি করেন তারা।
এদিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) পুলিশ কমিশনার যোগদানের পর শহরকে নিরাপত্তার চাদরে ঢাঁকাসহ মাদক কারবারি ও জুয়াড়ীদের কারবারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। জণসচেতনাতা বৃদ্ধির লক্ষে নিয়মিত বিট পুলিশিং কার্যক্রম পরিচালনার করছেন। তারপরও অগোচরে চলছে জুয়ার রমরমা কারবার। নগরবাসীর আশা আরএমপি পুলিশ কমিশনার মহানগরী থেকে এই বিখ্যাত প্রভাবশালী জুয়ার আসর বন্ধ করবেন।
এ ব্যপারে জানতে নগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর), মোঃ জামিরুল বলেন, টার্মিনালে জুয়ার আসর বন্ধে পুলিশ কমিশনার স্যারের সাথে আলোচানা করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি জি, এম হাসান-ই-সালাম (বাবুল) রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.