বঙ্গমাতা তার সম্পত্তি থেকে অনেক মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি: বঙ্গমাতা জাতির পিতার আদর্শ ছায়ার মতো অনুসরণ করেছেন। দেশ প্রেমের অগ্নি পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার রাজনৈতিক আন্দোলন ও সংগ্রামে বঙ্গমাতা নিজেকে যুক্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারীরা যেন বিচারের সম্মুখীন হয়, সে বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশেষ উদ্যোগ নেবে।
তিনি বলেন, খুবই দুঃখের বিষয় হলো বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয়, একই সঙ্গে বঙ্গমাতাকে হত্যা করা হয়। এটা বাঙালি জাতির জন্য কলঙ্ক। বঙ্গমাতা আজীবন বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে বাঙালির মুক্তির প্রেরণা ও সাহস জুগিয়ে গেছেন। তিনি নিজের গয়না বিক্রি করে ছাত্রলীগের সম্মেলনের টাকা দিয়েছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়ককে হত্যা করা হয়। খুব অল্প দেশে এ ধরনের উদাহরণ আছে যেখানে সেই রাষ্ট্রনায়কের সঙ্গে সঙ্গে তার স্ত্রী, ছেলে, পরিবারের প্রায় ১৭ জনকে হত্যা করা হয়। এমনকি ১০ বছরের ছোট্ট শিশুকেও হত্যা করা হয়। এটা বাঙালি জাতির জন্য একটা কলঙ্ক।
তিনি বলেন, যারা স্বীকৃত খুনি, যারা পরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিল—তাদের পাঁচজন ধরা পড়েনি। তাদের এখনও কোনো বিচার হয়নি। এটা আমাদের জাতির জন্য দুঃখের বিষয়। আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। পাঁচজনের মধ্যে তিনজন কোথায় আছে আমরা জানি না। বাকি দুইজনের আমরা খবর জানি। কিন্তু দুঃখের বিষয় তারা যেসব দেশে আছে সেসব দেশ বিভিন্ন অজুহাতে তাদের বিচারের সম্মুখীন করছে না। আজ আমাদের দাবি হবে ঘাতকদের বিচার। ঘাতকরা যেন বিচারের সম্মুখীন হয়, সে ব্যবস্থার জন্য আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশেষ উদ্যোগ নেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
আব্দুল মোমেন বলেন, বঙ্গমাতা তার উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি থেকে অনেক মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। এ ছাড়াও দলীয় কার্যক্রম, আন্দোলন, সংগ্রামে নিজের অর্থ সম্পদ দিয়ে সাহায্য করেছেন তিনি সংগঠনকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন, সংগঠনের বিভিন্ন প্রান্তের নেতাদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ ছিল।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বঙ্গমাতা দেশের প্রথম ফার্স্ট লেডি হয়েও বিলাসী জীবনযাপন করেননি। নীরবে, নিভৃতে তিনি বঙ্গবন্ধুর জন্য, বাংলাদেশের মানুষের জন্য শুধু দানই করে গেছেন। তার কাছে সহযোগিতা চেয়ে কেউ কখনও খালি হাতে ফিরে যায়নি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মহীয়সী এই নারী একজন সার্থক সহধর্মিণী ও আদর্শ মাতা ছিলেন। অন্যদিকে তিনি নিজেকে একজন বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ এবং মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গড়ে তোলেন। তার স্মরণশক্তি অত্যন্ত প্রখর ছিল। আন্দোলন চলাকালে সব ঘটনা জেলখানায় সাক্ষাতের সময় বঙ্গবন্ধুকে জানাতেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশনা নিয়ে আসতেন। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগকে সে নির্দেশনা জানাতেন।
আলোচনা সভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, বিশিষ্ট ঔপন্যাসিক সেলিনা হোসেন বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি মো: লোকমান হোসেন পলা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.