বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির অনিয়মের পাহাড়-২

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০১ এ যেয়ে প্রথমেই চোখে পড়ে ভুল বানানে ‘বঙ্গবন্ধু (বংগবন্ধু)’ শব্দটি লেখা, ছাড়া প্রতিটি পৃষ্ঠার মাস্ট হেড লেখাতেও ওই ভুল বানানটি। কিন্তু এ বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ হতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে কোন লিখিত অভিযোগ যায়নি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনকল্পে প্রনীত আইন অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, ধারা-৮ এ উল্লেখিত বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যতম একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রো-ভাইস চ্যান্সেরর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই নেই। এ ছাড়া ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থ ও হিসাব দপ্তর থাকলেও নেই ক্ষমতা প্রাপ্ত কোন কোষাধ্যক্ষ, যা সম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ধারা ৮ এর বহির্ভূত। তবে অর্থ কমিটি আছে যার পরিচালক ভিসি নিজেই, এছাড়া অর্থ ও হিসাব দপ্তরের উপ-পরিচালক আছেন তবে অনেক খুজেও তার নাম পাওয়া যায়নি। ফলে অর্থ ও হিসাব বিভাগ খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করেছে উপাচার্য নিজেই। এ ছাড়া বিভিন্ন অনুষদের ডীনের দায়িত্ব দীর্ঘ দিন ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন পালন করলেও সম্প্রতি তার আস্থাভাজন শিক্ষকদের ডীন হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন
বর্তমানে তিনি খুব সহজে বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানের আসন অলস্কিত করছেন। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বিভাগীয় চেয়ারম্যান হতে গেলে কোন শিক্ষককে সহযোগী অধ্যাপক পদ মর্যাদার হতে হয় কিন্তু এ সকল নতুন বিভাগে এ মর্যাদার কোন শিক্ষক নেই। আর প্রফেসর তো দূরের কথা। ফলে এসব নবীন বিভাগ গুলোতে শিক্ষার মান কেমন হচ্ছে তা সহজে অনুমেয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ধারা ৩৫ এ সু স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ আছে, তবে শর্ত থাকে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও কার্যক্রম যাহাতে অসুবিধার সম্মুখীন না হয় সেই জন্য ভাইস-চ্যান্সেলর এক বা একাধিক খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ করিতে পারিবেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রথম উপাচার্য দায়িত্ব পালন কালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশে অনেক স্বনামধন্য অধ্যাপকমগুলী খগুকালীন শিক্ষক হিসেবে বিভিন্ন অনুষদের ডীন ও চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। তন্মধ্যে উল্লেখ যোগ্য বাংলা একাডেমি পুরস্কারজয়ী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপন দিলিপ কুমার নাথ, প্রফেসর ড. হানিফ সিদ্দিক প্রফেসর এম. আলাউদ্দিনসহ প্রমুখ ব্যক্তিত্ব।
যাঁর মধ্যে অধ্যাপক শহিদুর ইসলাম ছিলেন ‘বঙ্গবন্ধু ইনস্টিটিউট অব লিবারেশন ওয়ার অ্যান্ড বাংলাদেশ স্টাডিজ এর সুযোগ্য পরিচালক। কিন্তু বর্তমান ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন দায়িত্ব এসে এ সকল বিদগ্ধ পন্ডিতগণকে বিদায় করেন এবং একক আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন। তিনি অবিবেচনাপ্রসূ বিভাগ চালু করেন, নিয়োগ বাণিজ্য দ্বারা অযোগ্য শিক্ষক-কর্মকর্তা নিয়োগ এবং ভর্তিতে ভিসি কোটা চালুসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে । বর্তমানে তিনি একাই দুই ইনস্টিটিউট পরিচালকের আসন অলংকৃত করছেন। যেটি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ধারা ৮ এর পরিপন্থী।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ড গঠন প্রসঙ্গে ধারা ১৮ তে উল্লেখ্য ২৫ সদস্য বিশিষ্ট হলেও বাস্ততে তা মাত্র ১৬ সদস্যের, এ ছাড়া রিজেন্ট বোর্ডের অন্যতম সদস্য কোষাধ্যক্ষের কোন অস্তিত্বই নেই। অবশ্য প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরের কথা উল্লেখ থাকলেও সেখানে নিয়মের শিথিলতা আছে। সম্প্রতি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতি ভিসির অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.